বগুড়া-৪ আসন নন্দীগ্রাম আর কাহালু এই দুই উপজেলা মিলিয়ে। এই লালমাটির এলাকায় ধান যেমন ভাল জন্মে, তেমনি ধানের শীষের ভোটও বেশি।
নন্দীগ্রামের বগুড়া সড়কের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রহিম বাংলানিউজকে বলেন, ভাই বাস্তব কথা বলতে গেলে এটা ধানের শীষের জায়গা। এখান থেকে ‘কলাগাছ’ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোট করলে জিতবে। এরপরে অবশ্যই নৌকার ভোট বেশি। কিন্তু এখানে এখন সংসদ সদস্য জাসদের। মানুষ তাকে গ্রহণ না করলেও তিনি এমপি হয়ে বসে আছেন। এর চাইতে আওয়ামী লীগের কেউ থাকলে মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা থাকতো।
নামুইট গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল বাংলানিউজকে বলেন, এখানে ২০০১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহিদুল আলম দুদু নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি তখন প্রায় ৯০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। ২০০৮ সালে ১৪ দল শরীক দল জাসদের প্রাথী রেজাউল করিম তানসেনকে মনোনয়ন দেয়া হয়। অথচ তিনি কোনো দিন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েও ২ হাজার ভোট পাননি।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৪ দল থেকে প্রার্থিতা দেয়া হলো জাতীয় পার্টির নুরুল আমিন বাচ্চুকে। তারও একই অবস্থা। কথিত আছে, তার স্বজনেরাও তাকে ভোট দেন না। আসলেই ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের নেতারাই বগুড়ার আওয়ামী লীগ নেতাদের মূল্যায়ন করেন না। তাদেরকে আওয়ামী লীগের চেয়ে বগুড়ার লোক হিসেবে বিবেচনা করা হয় বেশি।
নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এখানে তো আওয়ামী লীগের ভোট একেবারে কম নয়। এখন আরো বেড়েছে। তবে কেন্দ্র থেকে যদি মনোনয়ন দেয়া না হয়, তবে তো আর কিছুই করার থাকে না। কিন্তু নৌকার ভোট তো কম নাই। এই ভোটগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের সমর্থকরা মনোবল হারাবেন যদি এভাবে নৌকার প্রার্থী আমরা না পাই।
২০০৮ সাল বগুড়া সদর আসনে ধানের শীষের বিপরীতে নৌকার মাঝি হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজউদ্দিন। এর আগে সব নির্বাচনে বগুড়া সদর আসনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন তিনি। সদরের নির্বাচনে মমতাজ ৭০ থেকে ৭৫ হাজার ভোট পেতেন। কিন্তু এই আসনে খালেদার মতো শক্তিধরের প্রার্থী থাকায় বর্ষীয়ান এই নেতাকে ২০১৪ সালে সংসদের সদস্য করতে আপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষের সামনে পাঠানো হয় নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলায়। তবে শেষ মুহুর্তে এসে ১৪ দলীয় জোট প্রার্থিতা দেয় শরীক দল জাতীয় পার্টির বাচ্চুকে।
তাই আগামী নির্বাচনেও এই উপজেলা থেকে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মমতাজউদ্দিনের। এছাড়াও রয়েছেন শাহিদুল আলম দুদু।
দলীয় নেতাকর্মী এবং স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে আওয়ামী লীগের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে বড় কোনো বিরোধও নেই। বরং শরিক দলের প্রার্থীদের মধ্যে কার ভাগ্যে যে প্রার্থিতা জোটে সেটা নিয়েই এখানে চলছে জল্পনা।
কাহালুর চালবিক্রেতা রাফিম বলেন, এখানে যদি আওয়ামী লীগ থেকে এবারও প্রার্থী না দেওয়া হয় তাহলে নৌকার ভোটগুলো নষ্টই হবে। আওয়ামী লীগের সমর্থনও তাতে কমে যাবে। এখানখার মানুষকে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে উৎসাহিত করার জন্যে আরো বেশি নজর দেয়া উচিত আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৭
এমএন/জেএম
ইউপি মেম্বার থেকে সর্বজয়ী এমপি