ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

নীলফামারী-৩: নিষ্ক্রিয় বিএনপি, শক্ত অবস্থানে জাপা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
নীলফামারী-৩: নিষ্ক্রিয় বিএনপি, শক্ত অবস্থানে জাপা বক্তব্য রাখছেন এমপি গোলাম মোস্তফা। ফাইল ফটো

জলঢাকা-কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) থেকে: নীলফামারী জেলার জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী, রণচন্ডী ও বড় ভিটা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-৩ আসন। এ আসনে গত সংসদ নির্বাচনের পরই গা ঢাকা দিয়েছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ টিকে আছে ক্ষমতাসীন দল হওয়ায়। আর সাংগঠনিকভাবেই শক্ত অবস্থান এরশাদের জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী ফারুককে পরাজিত করে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম মোস্তফা। কিন্তু নির্বাচনে হারলেও থেমে নেই জাতীয় পার্টি দলীয় কর্মসূচি।

তবে কোন কর্মসূচি নিয়েই মাঠে নামতে দেখা যায় না বিএনপিকে।  

বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থান নিয়ে জলঢাকা পৌর বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ব্যবসায়ী সাহাবউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা মামলার ভয়ে বাড়িতেই থাকে না, আবার অনুষ্ঠান করবে কখন। যে দু’একজন এলাকায় আছেন তারা আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের সঙ্গে সর্ম্পক রেখে চলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি যে অস্তিত্বহীন তার অন্যতম প্রমাণ জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচন। ওই নির্বাচনে উপজেলা বিএনপি সভাপতি ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী পমেড মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের একাংশের সমর্থনে। এমপির সঙ্গে তাদের সর্ম্পক ভালো না হওয়ায় বিএনপির প্রার্থীকে গোপনে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগের ওই অংশ।

জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখান থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পৌর মেয়র ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী পমেড। এছাড়াও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী দিলদার হোসেন, পৌর বিএনপি সভাপতি আহমেদ সাইক চৌধুরী ডিডু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের নাম শোনা যাচ্ছে।
সাহাবউদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, এখানে বিএনপি থেকে যাকেই মনোনয়ন দেয়া হোক, সহজে জয়লাভ করতে পারবে বলে মনে হয় না। কারণ একমাত্র পৌর মেয়র ছাড়া আর কোন নেতাই এলাকায় থাকেন না।

নীলফামারী-৩ আসনের এমপি গোলাম মোস্তফা স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। সংসদ নির্বাচনে পর থেকে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশই তার পক্ষে থাকবে না বলে জানান স্থানীয়রা।

জলঢাকা উপজেলা সদরের হোটেল ব্যবসায়ী রফিজ উদ্দিন বলেন, গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে জামায়াত প্রীতি ছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম ঢুকানোর অভিযোগও রয়েছে। তাই আগামীতে গোলাম মোস্তফা মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। তিনি মনোনয়ন না পেলে আসবে নতুন মুখ। এজন্য চেষ্টা করছেন অনেকেই।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা জানান, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনছার আলী মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক শহীদ হোসেন রুবেল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দীপু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরের নাম শোনা গেছে।

বাহাদুর ইতিমধ্যে এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। তুরিন আফরোজও নিয়মিত এলাকায় এসে জনসংযোগ করছেন বলে জানা গেছে।

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জলঢাকা-কিশোরগঞ্জের এমপি হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির  কাজী ফারুক। ক্ষমতায় থাকাকালে কাজও করেছেন। এলাকায় তিনি বেশ জনপ্রিয়ও।   ফারুক ছাড়াও মনোনয়ন চাইতে পারেন জাতীয় পার্টির উপজেলা কমিটির আহবায়ক মেজর অব. রানা মো. সোহেলও। তবে কাজী ফারুককে দিলে আর কোন দলের প্রার্থী এখানে সহজে বিজয়ী হতে পারবে না বলে এলাকাবাসী মনে করেন।

অন্যদিকে সাংগঠনিকভাবে এখানে শক্তিশালী জামায়াত। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে জামায়াতের প্রার্থী।
তবে সংসদ নির্বাচনে তাদের কোন প্রার্থী না থাকলে বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে জামায়াত কাজ করবে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, জামায়াত এখানে সব সময় সুবিধাবাদি অবস্থানে থাকে। যে দলই ক্ষমতায় থাকে, তাদের সঙ্গে আঁতাত করেই নিজেদের কর্মকাণ্ড চালায়।

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।