ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

টিপুর বিপক্ষে এমদাদেই ভরসা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
টিপুর বিপক্ষে এমদাদেই ভরসা এমদাদুল হক ভরসা, (ফাইল ছবি)

কাউনিয়া ও পীরগাছা (রংপুর) থেকে ফিরে:  লাঙ্গলের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও তরুণ ভোটারদের দাপটে রংপুর-৪ (কাউনিয়া ও পীরগাছা) আসনে অনেকটাই কোণঠাসা এরশাদের জাতীয় পার্টি (জাপা)।
 

 বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) টিপু মুন্সি আওয়ামী লীগের নেতা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে আগামী নির্বাচনেও এ আসনে তিনিই একমাত্র এমপি প্রার্থী।



তবে জাপা দুর্বল হয়ে পড়ায় ‘এন্টি আওয়ামী লীগ’ ভোটে শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পেয়েছে বিএনপি। যদিও এ আসনে প্রতিনিধিত্ব করার রেকর্ড আছে বিএনপি’রও। কিন্তু হালে তাদের সম্ভাবনা আরো বেড়েছে।  
 
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ ও ১৯৮৬ সালে এ আসনে আওয়ামী লীগের আব্দুর রাজ্জাক নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ২৩ বছর পর ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে দলটির প্রার্থী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুন্সি জয় পান। ২০১৪ সালে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন তিনি। এদিকে ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কেবল আলহাজ রহিম উদ্দিন ভরসা নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। তবে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
 
অপরদিকে এই আসনটিতে টানা চারবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হন। এরমধ্যে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে শাহ আলম। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আলহাজ করিম উদ্দিন ভরসা জয় পান। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি জাপার প্রার্থী হয়ে এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন টিপুর কাছে; যদিও সেসময় তাকে চেয়ারম্যান এরশাদের পক্ষ থেকে মানা করা হয়েছিল লড়তে। কাউনিয়াতে বিএনপির কার্যালয়, ছবি: বাংলানিউজ
রহিম ভরসার ছেলে রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী। তৃণমূলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপির একটা বড় অংশের সমর্থন তার প্রতি। কেন্দ্র থেকেও নাকি সবুজ সংকেত তার ঘরে। দলের জন্য নিবেদিত এই নেতাকে স্থানীয় বিএনপিকে গুছিয়ে তোলার বাতিঘরও বলা হয়।  
 
শুধু তিনিই নন, ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম রাঙা ও জেলা বিএনপির সদস্য কর্নেল (অব.) আবদুল বাতেন ও এস কে পাটোয়ারী।
 
যদি ভরসায় বিএনপি আস্থা না রাখে তবে স্বতন্ত্র দাঁড়াবেন বলেও জানা যায়।
 
বিএনপি নেতারা বলছেন, জাতীয় পার্টির দুর্গে বিএনপির প্রার্থী পরাজিত হলেও প্রতিবারেই তাদের ভোট বেড়েছে। এমপি থাকতে রহিম ভরসা এলাকায় নানা উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন জেলা ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী করেছেন। তবে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০৯ সালে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি নেন। সে স্থানে উপযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন এমদাদ।  
 
এমদাদুল হক ভরসা ২০০৬ থেকে উপজেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের বৈরী আচরণের কারণে মাঠ পর্যায়ে কোনো দলীয় কর্মকাণ্ড সেভাবে চালাতে পারি না। তবে দলকে গুছিয়ে তুলতে আমার আপ্রাণ চেষ্টা রয়েছে। তেল বা ঘি দিয়ে কাউকে খুশি করার মানুষ আমি নই।
 
এ আসনে আরো কয়েকজনের নাম শোনা যায়- এ বিষয়ে তার বক্তব্য, বাতেন সাহেবসহ যাদের নাম আসছে তারা কেউই আমার মতো মাঠের লোক নন। সারাবছর মাঠে থেকে আমি জানি মানুষ কী চায়, কাকে চায়। এছাড়া জাপারও জোয়ার শেষ। টিপু মুন্সি ভাইয়ের সঙ্গে লড়তে এক মাত্র প্রার্থী আমিই। কেউ যদি তাকে হারাতে পারে তা আমার পক্ষেই সম্ভব।
 
বিএনপি কি মূল্যায়ন করবে, উত্তরে এমদাদ বলেন, উপজেলায় বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করেছি। দল করতে গিয়ে ব্যবসারও অনেক ক্ষতি হয়েছে, তাও তো থেমে যাচ্ছি না। নির্বাচনে জয়ের জন্যই এখন রাজনীতি করছি।
 
রংপুর জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু বাংলানিউজকে বলেন, এমদাদুল হক ভরসাই কাউনিয়া-পীরগাছা থেকে দলীয় টিকিট পাবেন বলে আমরা জানি।
 
বর্তমানে এই আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় পৌনে চার লাখ। এর মধ্যে কাউনিয়ায় দেড় লাখের ওপরে। পীরগাছায় সোয়া দুই লাখ।  

আরও পড়ুন:
একবার খেলে ভোলা যায় না হাড়িভাঙার স্বাদ
ঈদে ট্রেনেই নিশ্চিন্ত যাত্রা
‘এরশাদ কান্দিলে ভোট আছে কিসু’

‘লাইসেন্স দেন-ট্যাক্সও বাড়ান, মারেন শুধু বিড়ি শ্রমিকরে’
মিঠাপুকুর আ’লীগে গ্রুপিং, বিভক্ত ভোটাররা!
‘সুষ্ঠু ভোট হলে এমপি জাপার’
বিএনপির অফিস এখন আম-কলার আড়ৎ!
হাইওয়েতেও ইফতারির পূর্ণ আনন্দ!
বাংলাদেশ জিতবে আশা গ্রামবাসীর! 

 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
আইএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।