দলের বৃহত্তর স্বার্থে সরে দাঁড়ালেও এবার মহাজোটের প্রার্থী না থাকলে মনোনয়ন চাইবেন তিনি। এক্ষেত্রে তাকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ ত্যাগ করতে হবে।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত না হলেও বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দৌঁড়-ঝাপ শুরু করেছেন অনেক আগে থেকেই। কেন্দ্রের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগও বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেক নেতা, নিয়মিত ঢাকায় যাতায়াত করছেন।
এম এ সালাম ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুচ গণি চৌধুরী, প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য জসিম উদ্দিন শাহ, সদস্য মঞ্জুর আলম মঞ্জু এবং হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন নোমান।
অন্যদিকে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় সদস্য মীর হেলাল, ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব আলম ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ।
তবে বিএনপি মহাজোটগত নির্বাচন করলে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেতে পারেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মো. ইব্রাহিম।
এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের আমলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে মহাজোটেও প্রভাবশালী নেতা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, আওয়ামী লীগ মহাজোটগত নির্বাচন করলে এবারও মনোনয়ন পাবেন ব্যারিস্টার আনিস। তবে ভিন্ন চিন্তাও করছেন কেউ কেউ। কারণ, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা, দলীয় ভিত্তি এবং মাঠের অবস্থান যাচাই করবেন জোট প্রধান শেখ হাসিনা। দলে ক্লিন ইমেজ ও তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টিও বিবেচনায় আসবে। সেক্ষেত্রে জোট থাকলেও কোনো কোনো আসনে ব্যতিক্রম হতে পারে।
সরেজমিনে গেলে হাটহাজারী উপজেলার তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, মার্জিত আচরণ ও সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এম এ সালামের। বিগত জেলা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কয়েকজনের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হলেও পরে ঘুচে গেছে।
ফলে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন পেলে ও এম এ সালাম চাইলে সবাই তা মেনে নেবেন।
দল চাইলে জেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন- এমনটা ইঙ্গিত দিয়েছেন এম এ সালামও। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সবকিছুই নির্ভর করছে নেত্রীর ওপর। জোট থেকে নির্বাচন করলে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মনোনয়ন পাবেন। তারপরও নেত্রী ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতেও পারেন।
ইউনুচ গণি চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘গতবার আমাকে মনোনয়ন দিয়ে কাজ করতে বলেছিলেন নেত্রী। আমি কাজও করেছিলাম। দলের সিদ্ধান্তে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়াই। জোটের প্রার্থী না থাকলে এবারও আমি মনোনয়ন চাইবো। যদিও মনোনয়ন দলের হাতে, তারপরও আমি আশাবাদী। আর মনোনয়ন পেলে হাটহাজারীর মানুষের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করবো’।
মঞ্জুর আলম মঞ্জু বলেন, ‘আমি সব সময় দলের স্বার্থে রাজনীতি করেছি। কখনো আপোষ করিনি। ছাত্রলীগ-যুবলীগ করে এখন আওয়ামী লীগে কাজ করছি। আমাদের এলাকায় মহাজোটের মন্ত্রীর কারণে কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি’।
জসিম উদ্দিন শাহ বলেন, ‘রাজনীতি করি বলে নির্বাচন করারও ইচ্ছে আছে। আশা করি, দলের মনোনয়ন পাবো। তবে মহাজোট থাকলে হয়তো পাবো না’।
মো. মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
এমইউ/টিসি/এএসআর