মুঘল সাম্রাজ্য সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া ঘিরে রেখেছিল শাসকশ্রেণীর দুঃসাহসিকতায়। বর্তমান বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কিছু অংশসহ আরও অনেক অঞ্চল ছিল তাদেরই দখলে।
অনেক স্মৃতিসৌধ, মসজিদ ও দুর্গ নির্মাণ করে স্থাপত্যের স্বর্ণযুগে অবস্থান করে গেছেন মুঘল সাম্রাজ্যের অধিকাংশ শৈল্পিক মনের সম্রাট। এর সাক্ষী বহন করে আগ্রার তাজমহল, দিল্লির লালকেল্লাসহ নানা অসাধারণ সব স্থাপত্য। শৈল্পিকতা ও ধর্মীয় অনুরাগ থেকে তারা ভারত উপমহাদেশে অসংখ্য মসজিদও নির্মাণ করে গেছেন। মুঘলরা নির্মিত ১৯টি চিত্তাকর্ষক মসজিদ নিয়ে বাংলানিউজের বিশেষ আয়োজন। প্রথম পর্বে থাকছে ১০টি মসজিদের জানা-অজানা।
১- কাবুলী বাগ মসজিদ: ১৫২৭ সালে ভারতের পানিপথে কাবুলী বাগ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর তার স্ত্রী কাবুলী বেগমের নামে এই মসজিদটি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছিলেন। ২- বাবরি মসজিদ: ১৫২৮ থেকে ১৫২৯ সালে সম্রাট বাবরের শাসনামলে ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদটি নির্মাণ হয়েছিল। সে সময়কার জেনারেল মীর বাকী বাবরের নাম অনুসারে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। ৩- কিলা-ই-কোহনা মসজিদ: ১৫৪১ সালে ভারতের দিল্লিতে কিলা-ই-কোহনা মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মুঘল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট হুমায়ূনের আমলে এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। এটি দিল্লির পুরানা কিলাতে অবস্থিত। ৪- জামা মসজিদ (আগ্রা): ১৫৭১ থেকে ১৫৭৫ সালের মধ্যে ভারতের আগ্রার ফতেহপুর সিক্রিতে সম্রাট আকবরের অমলে মসজিদটি নির্মাণ হয়েছিল। ৫- মহাব্বত খান মসজিদ: ১৬৩০ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে মহাব্বত খান মসজিদটি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছিলেন স্থাপত্যসম্রাট শাহজাহান। সে সময়কার পেশোয়ার গভর্নর নবাব মহাব্বত খানের নাম অনুসারে এটি নির্মাণ হয়েছিল। ৬- মতি মসজিদ (পাকিস্তান): ১৬৩০ সালে পাকিস্তানের লাহোরে মতি মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন সম্রাট শাহজাহান। লাহোর দুর্গের ভেতরে এর অবস্থান। ৭- নাজিনা মসজিদ: ১৬৩১ থেকে ১৬৪০ সালের মধ্যে সম্রাট শাহজাহান নিজে ব্যবহারের জন্য আগ্রায় নাজিনা মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। আগ্রা দুর্গের ভেতরেই এর অবস্থান। ৮- তাজমহল মসজিদ: ১৬৩১ থেকে ১৬৪৮ সালের মধ্যে আগ্রায় তাজমহল মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন সম্রাট শাহজাহান। ৯- ওয়াজির খান মসজিদ: ১৬৩৪ থেকে ১৬৩৫ সালের মধ্যে সম্রাট শাহজাহানের শাসনামলে লাহোরে ওয়াজির খান মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সে সময়কার লাহোরের গভর্নর হাকিম শেখ ইলম আদ্বীন আনসারী এটি তার নাম অনুসারে নির্মাণ করেন। তিনি ওয়াজির খান নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। ১০- জামা মসজিদ (দিল্লি): ১৬৪৪ থেকে ১৬৬৫ সালের মধ্যে দিল্লিতে সম্রাট শাহজাহানের শাসনামলে জামা মসজিদ নির্মাণ হয়েছিল। এটি দিল্লির লাল কেল্লার বিপরীতে অবস্থিত। মসজিদটি সাধারণত দিল্লিতে জাহান নোমাহ নামেই বেশি পরিচিত।
মুঘল আমলকে এ জন্যই স্থাপত্যের স্বর্ণযুগ বলা হয়। এ সাম্রাজ্যের প্রায় সব সম্রাটই চিত্তাকর্ষক, আশ্চর্যজনক ও ধর্মানুরাগের স্থাপত্যে মনোনিবেশ ছিলেন। তবে সবচেয়ে বেশি শৈল্পিকতার পরিচয় দিয়ে গেছেন সম্রাট শাহজাহান। তিনিই সর্বোচ্চে আছেন স্থাপত্যকলায়। মসজিদও সবচেয়ে বেশি তিনিই নির্মাণ করেন। মূলত তার সময়কালকেই স্থাপত্যের স্বর্ণযুগ বলা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, ১৬০০ জুন ০৫, ২০১৮
টিএ/এএ