মুঘল সাম্রাজ্য সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া ঘিরে রেখেছিল শাসকশ্রেণীর দুঃসাহসিকতায়। বর্তমান বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কিছু অংশসহ আরও অনেক অঞ্চল ছিল তাদেরই দখলে।
অনেক স্মৃতিসৌধ, মসজিদ ও দুর্গ নির্মাণ করে স্থাপত্যের স্বর্ণযুগে অবস্থান করে গেছেন মুঘল সাম্রাজ্যের অধিকাংশ শৈল্পিক মনের সম্রাট। এর সাক্ষী বহন করে আগ্রার তাজমহল, দিল্লির লালকেল্লাসহ নানা অসাধারণ সব স্থাপত্য। শৈল্পিকতা ও ধর্মীয় অনুরাগ থেকে তারা ভারত উপমহাদেশে অসংখ্য মসজিদও নির্মাণ করে গেছেন। মুঘলরা নির্মিত ১৯টি চিত্তাকর্ষক মসজিদ নিয়ে বাংলানিউজের বিশেষ আয়োজন। দ্বিতীয় পর্বে থাকছে ০৯টি মসজিদের জানা-অজানা।
অারও পড়ুন>>
** মুঘল আমলের নজরকাড়া মসজিদ (পর্ব-১)
১- বাদশাহি মসজিদ: ১৬৭১ থেকে ১৬৭৩ সালের মধ্যে লাহোরে নির্মাণ করা হয়েছিল বাদশাহি মসজিদ। সম্রাট আওরঙ্গজেব এটির অনুমোদন দিয়েছিলেন। লাহোর দুর্গের বিপরীতেই এর অবস্থান। ২- মতি মসজিদ (ভারত): ১৬৪৮ থেকে ১৬৫৪ সালের মধ্যে মতি মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন সম্রাট শাহজাহান। এটি আগ্রা দুর্গের ভেতরে অবস্থিত। ৩- আওরঙ্গজেব গ্রেট মসজিদ: ১৬৬৪ সালে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব গ্রেট মসজিদটি নির্মাণ করেন। এটি ভারতের বারানসীতে অবস্থিত। মসজিদটি স্থানীয়ভাবে জিয়ানবাপি মসজিদ নামে পরিচিত। ৪- শাহজাহান মসজিদ: ১৬৪৭ সালে পাকিস্তানের থাত্তা শহরে শাহজাহান মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন সম্রাট শাহজাহান। তার নামেই এর নামকরণ হয়। ৫- লালবাগ ফোর্ট মসজিদ: ১৬৭৮ সালে ঢাকায় লালবাগ ফোর্ট মসজিদটি নির্মাণ হয়েছিল। সম্রাট আওরঙ্গজেবের ছেলে মুহাম্মদ আজম বাংলার ভাইসরয় থাকাকালে এর নির্মাণ শুরু হয়েছিল। ৬- জিনাত-উল মসজিদ: ১৭১০ সালে দিল্লির দারায়াগঞ্জে জিনাত-উল মসজিদ নির্মাণ হয়েছিল। সম্রাট আওরঙ্গজেবের কন্যা জিনাত-উল-নিসা এটির অনুমোদন দিয়েছিলেন। তার নাম অনুসারেই যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত এ মসজিদটি। ৭- সানহেরি মসজিদ (ভারত): ১৭৪৭ থেকে ১৭৫১ সালে মুঘল সম্রাট অহমদ শাহ বাহাদুরের রাজত্বকালে সানহেরি মসজিদের নির্মাণ হয়। দিল্লির লাল দুর্গের কাছেই এর অবস্থান। ৮- সানহেরি মসজিদ (পাকিস্তান): ১৭৪৯ থেকে ১৭৫৩ সালের মধ্যে লাহোরে সানহেরি মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। সেসময়কার লাহোরের ডেপুটি গভর্নর নবাব সৈয়দ ভিকরি খান এ মসজিদের অনুমোদন দিয়েছিলেন। ৯- নোয়াবাদ মসজিদ: ১৭৯৩ সালে দিনাজপুরে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের রাজত্বকালে নোয়াবাদ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
মুঘল আমলকে এ জন্যই স্থাপত্যের স্বর্ণযুগ বলা হয়। এ সাম্রাজ্যের প্রায় সব সম্রাটই চিত্তাকর্ষক, আশ্চর্যজনক ও ধর্মানুরাগের স্থাপত্যে মনোনিবেশ ছিলেন। তবে সবচেয়ে বেশি শৈল্পিকতার পরিচয় দিয়ে গেছেন সম্রাট শাহজাহান। তিনিই সর্বোচ্চে আছেন স্থাপত্যকলায়। মসজিদও সবচেয়ে বেশি তিনিই নির্মাণ করেন। মূলত তার সময়কালকেই স্থাপত্যের স্বর্ণযুগ বলা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৮
টিএ/এএ/