সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে কলকাতায় চট্টগ্রামবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত শোকসভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
ডা. পূর্ণেন্দু রায় আবেগঘন স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৯১-৯২ সালে মহিউদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ।
তিনি বলেন, মহিউদ্দিনের চশমা হিলের বাসায় বহুবার গেছি। আমার বাবা যশোরের, মা ময়মনসিংহের। নাড়ির টান অনুভব করতাম তার বাসায়। বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তা বোধ অনেক বেশি। মহিউদ্দিন ভাইয়ের আতিথেয়তা ছিল আরও বেশি।
চট্টগ্রামের উন্নয়নের পাশপাশি মহিউদ্দিন চৌধুরী স্বাস্থ্যখাতে আমূল পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে পূর্ণেন্দু রায় বলেন, আমি নিজে মেনন হাসপাতালে গেছি বহুবার। বহু অপারেশন করেছি সেখানে। একবার স্থানীয় ডাক্তাররা আমার বিরুদ্ধে পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ করেন। আমি বিনা ফিতে রোগী দেখতাম। একেকদিন আড়াইশ পর্যন্ত। মহিউদ্দিন ভাই খবর পেয়ে সব সামাল দিলেন। চলাফেরার জন্য উনার গাড়ি দিয়ে দিলেন। একবার জরুরি প্রয়োজনে কলকাতা আসতে হচ্ছে। ফ্লাইটের দুই ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে যেতে হয়। আমি মহিউদ্দিন ভাইয়ের বাসায়। নাশতা না খেয়ে আসতে দেবেন না। উনি প্রটোকলের গাড়ি দিয়ে সোজা রানওয়েতে ঢুকিয়ে বিমানে তুলে দিলেন আমাকে। এ ঘটনা আমি কোনোদিন ভুলবো না-যোগ করলেন পূর্ণেন্দু রায়।
বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, মহিউদ্দিনের সহচর অমলেন্দু সরকারের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন একুশে টেলিভিশনের চট্টগ্রামের আবাসিক সম্পাদক রফিকুল বাহার। ২৮ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর নানা স্মৃতি তুলে ধরে রফিকুল বাহার বলেন, গণমানুষের নেতা হতে হলে গণমানুষের সঙ্গে থাকতে হয় এটা মহিউদ্দিন চৌধুরীর ম্যাসেজ। তার জানাজায় লাখো মানুষের ঢল প্রমাণ করে তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের গণমানুষের নেতা।
মহিউদ্দিনের জীবন, কর্ম ও স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করেন চট্টগ্রাম পরিষদের সভাপতি রতন ধর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী, মহিউদ্দিনের সুহৃদ অচিন্ত্য সেন প্রমুখ।
অচিন্ত্য সেন ষাটের দশকের স্মৃতিচারণ করে বলেন, মহিউদ্দিন ছোটবেলা থেকে ছাত্রদের সমস্যা, মানুষের সমস্যা নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। চট্টগ্রামের পক্ষে কথা বলতেন। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে গণমানুষের আপসহীন নেতা হয়ে উঠেছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
এআর/টিসি/আরআর