ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

উপন্যাস

নীল উড়াল: পঞ্চদশ পর্ব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭
নীল উড়াল: পঞ্চদশ পর্ব নীল উড়াল

নায়ক ম্যাকগিল ভার্সিটির অধ্যাপক-লেখক-অভিবাসী বাংলাদেশি। ফরাসি সুন্দরী মার্গারেট সিমোনের প্রণোদনায় দেশে মাদকচক্র নিয়ে গবেষণাকালে ঘটনা মোড় নেয় রোমাঞ্চকর বাঁকে। আসে ধুরন্ধর বন্ধু-অসৎ ব্যবসায়ী এনামুল, সুন্দরী স্টাফ রোকসানা, মধুচক্রের জেনিফার-মলি-পরী, ক্লিনিকের অন্তরালের মিসেস খোন্দকার, রমনার শফি মামা ও ফুলি, ‘উড়াল যাত্রা’র সাইফুল, বিড়ালের কুতকুতে চোখের তরুণ সাংবাদিক ফরমানউল্লাহ এবং ছোটখালার রহস্যময় মেয়ে অন্তরা। প্রেম ও বেঁচে থাকার যুগল উড়ালে কাহিনী আবর্তিত হতে থাকে।

১৫.
ফ্ল্যাটে আমার জন্য এমন চরম সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে ভাবতেও পারি নি। মেইন ডোর খুলেই দেখি সোফায় বসে আছে এনামুল।

ওর গা ঘেঁষে  রোকসানা। খুবই অন্তরঙ্গ ও আয়েসি ব্যাপার। আমাকে আসতে দেখে স্প্রিং-এর পুতুলের মতো সরে গেল মেয়েটি। চট করে পোশাক ঠিক করতে লাগল সে। পরিবেশ স্বাভাবিক করতে এনামুল তাড়াতাড়ি মুখ খুলল:
-আয় আয়। তোর জন্যেই বসে আছি।

বিস্ময় চেপে রেখে নর্ম্যালি হাসতে হাসতে বললাম:
-আমার জন্য অপেক্ষা করছিস? কেন? হঠাৎ আমার কাছে কি দরকার হলো?

নীল উড়াল: চতুর্দশ পর্ব

এনামুল তার চিরাচরিত স্টাইলে বললো:
-তেমন কিছু না। কই থাকিস, কি খাস, কিছুই খোঁজ রাখতে পারি না। ভাবলাম একটু খোঁজ-খবর করে আসি। তা আছিস কেমন? কাজ-কর্ম চলছে ঠিক মতো?

এবার আমাকে সাবধানে মুখ খুলতে হবে। ঘাগু মাল এনামুল। ঠিকই আসল কথায় চলে এসেছে। ক্লিনিকে যাওয়ার কথা জেনে গেলেও মিসেস খোন্দকারের বাসার ঘটনাটি মনে হয় এখনও জানে না। আমাকেও ওর মতলব কিছুই জানি না ভাব করতে হবে। নিরস মুখে বলি:
-বেশ আছি। তোর ব্যবস্থায় কোনও ত্রুটি পাচ্ছি না। ফ্রিজ খালি হলেই ভরে যাচ্ছে।

খুশির ভাব দেখালো এনামুল:
-সেটা ঠিক আছে। তোর জন্য আমার দায়িত্ব আছে না? কি বলিস?

আমিও সম্মতি জানিয়ে বলি:
-তুই দায়িত্বের চেয়েও অনেক বেশি করছিস। আমি তোর প্রতি কৃতজ্ঞ।

আবেগে তরল হয়ে গেল সে। সোফা থেকে উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো:
-কি বলিস দোস্ত! তোর জন্য আমি করবো না তো কে করবে? কৃতজ্ঞতা আবার কি রে?

আমাকে টেনে নিয়ে সোফায় বসালো। কোনও এক ফাঁকে রোকসানা সম্ভবত নিজেকে ঠিকঠাক করার জন্য পাশের ঘরে চলে গেছে। এখন আমি আর এনামুল। মুখোমুখি। জানি, বেশিক্ষণ পেটে কথা রাখতে পারবে না সে। আমি যে উল্টো ওকেই খেলাচ্ছি, সেটা সে জানতেও পারবে না। আমি ওর মনোভাব জানতে প্রশ্ন করি:
-আসল ব্যাপার কি বলতো? হঠাৎ না বলে চলে এলি? সিরিয়াস কোনও সমস্যা হয়েছে?

আমার অক্ষমতার খোলস সে ধরতে পারছে না। মনে মনে খুশিই দেখাচ্ছে তাকে:
-তেমন কিছু না। কোথায় কোথায় যাস, তাই নিয়ে চিন্তায় থাকি। টেনশনে চলে এলাম। জানিস তো দেশের আইন-শৃঙ্খলা ভালো না। মাদক নিয়ে কাজ করছিস, ও লাইনে তো সব দাগি অপরাধীদের কারবার। তাই চিন্তাযুক্ত থাকি রে তোকে নিয়ে।

আমি হাল্কা চালে বলি:
-সে কি রে! তুই থাকতে আমার ভয় কিসের?
এনামুল মাথা নেড়ে বললো:
-তা ঠিক, তা ঠিক।

আমার কথায় এনামুলও সায় দেয়। থেমে আবার বলে:
-তবে অনেক সময় সব কিছু হাতের মধ্যে থাকে না। নেশার ব্যবসা এখন বাংলাদেশে প্রধান। ড্রাগস-সেক্স-ভায়োলেন্সের কুণ্ডলী পাঁকানো চক্কর চলছে। উপরের দিকের বাঘা বাঘা সবাই আছে এই চক্করে। তুই আবার ঘাঁটতে ঘাঁটতে ওসবের বেশি খবর জেনে গেলে তোকে বিপজ্জনক  ভাববে। তোর দিক থেকে বিপদের সম্ভাবনা দেখা গেলে তোকেও ছাড়বে না।

আমি চেহারায় কপট ভয়ের চিহ্ণ এঁকে বলি:
-আমি কেন কারও জন্য বিপদ হবো রে! আমি তো কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে যাচ্ছি না। আমি লড়ছি সিস্টেমের খারাপ দিকের বিরুদ্ধে।

আমার উত্তরে সন্তুষ্ট হলো না এনামুল। বললো:
-আহ! বুঝলাম। ব্যক্তি আলাদা নাকি! ব্যক্তিরাই তো সিস্টেম চালায়। সিস্টেমের দোষ মানে ব্যক্তিরও দোষ। ব্যক্তি আর সিস্টেমের ফাঁক দেখিয়ে তুই বাঁচতে পারবি না। ওরা তত্ত্বকথা বুঝে না। তোর মুভমেন্ট দেখে পরিমাপ করবে তোকে। ভাববে তুই তাদের ব্যবসা নষ্ট করতে এসেছিস। যারা ভালো মানুষের মুখোশ চাপিয়ে ব্যবসার সিন্ডিকেট চালাচ্ছে, তারা ভাববে তুই তাদের নাঙা করতে চাচ্ছিস। একজনের হাতে নয়, তখন তুই পড়বি এর সঙ্গে জড়িত সকলের কোপে। পুরো সিস্টেম তোর বিরুদ্ধে পাগলা কুত্তার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে।

সব শুনে আমি বলি:
-চিন্তা করিস না। আমি সাবধানে থাকবো।

আমার কথায় খুব যে একটা চিন্তামুক্ত হয়েছে এনামুল, দেখে সেটা মনে হলো না। তবু সে মুখে কিছুই প্রকাশ করল না। বললো:
-তুই কানাডার নাগরিক হয়েছিল। সেখানেই তুই থাকবি। এখানে কিছুদিনের জন্য এসেছিস, আরাম করে রেস্ট নে। কিছু লিখতে চাস, গবেষণা করতে চাস তো গল্প ফেঁদে ফেল। অতসব সত্য জানার দরকার কি...

রোকসানা ঘরে আসতেই থেমে গেল এনামুল। পুরো কথা শেষ না হলেও আমি মর্ম বুঝতে পেরেছি। ক্লিনিকের ঘটনার পর আমার বরং ওর ব্যাপারেই সতর্ক থাকতে হবে বেশি। এনামুলকে সেটা ঘুর্ণাক্ষরেও বুঝতে দেওয়া চলবে না।

রোকসানাও এসে আমাদের পাশে বসেছে। বেশ সতেজ লাগছে মেয়েটিকে। কিছুক্ষণ আগেও সে ধ্বস্ত ছিল, সেটা ধরার জো নেই। এনামুল তার দিকে তাকিয়ে আহ্লাদিত গলায়  বলল:
-রুক ডার্লিং, তুমি তো আমার বন্ধুর কোনও লক্ষ্যই রাখছো না। বেচারী একাকী থাকে। ওকে তোমার বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দাও। আমুদ-টামুদ করুক। কি বলিস তুই?

শেষের বাক্যটি আমার দিকে তাকিয়ে বলা। আমার সম্মতি পেলেই রোকসানা কাজে নামতে পারে, এমন ইঙ্গিতই এনামুল প্রকাশ করলো। আমি কিছুই বললাম না। একটি শুকনো হাসি হাসলাম মাত্র। এনামুল জানে আদিরসপূর্ণ আলোচনা আমার সঙ্গে জমবে না। তারপরও টোকা দিয়ে দেখলো। আমাকে গ্রিন সিগন্যালও দিয়ে দিল কৌশলে। ভাবখানা এমন যে, ‘ইচ্ছে হলে বলিস! সব ব্যবস্থা করা রইল। ’

আসল কথা যা বলার এনামুল বলে ফেলেছে। কিছুটা সাবধান করা কিংবা ভয় দেখানোর কাজ সে কুশলতার সঙ্গেই সেরে ফেলেছে। আমার কোনও সমস্যা হলে, দায়িত্ব নেবে না। উল্টো আমাকেই দুষবে ওর সাবধান বাণী শুনি নি বলে। ভারী ক্যালকুলেটিভ এই এনামুল। নইলে ব্যাক বেঞ্চ থেকে জীবনের দৌড়ে অর্থ-বিত্তে-ক্ষমতায় এতটা সামনের কাতারে আসতে পারতো না।   কিছুক্ষণ টুকটাক হাল্কা রসিকতা করে সে রোকসানাকে বগলদাবা করে চলে গেল।

এনামুলের কাজ-কর্ম আমাকে গভীর চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। সে আমার ওপর গোয়েন্দাগিরি করছে কেন? আমার কাছ থেকে কি আড়াল করতে চাচ্ছে? আমি কি অন্য কোথাও সরে যাবো? না। এটা ঠিক হবে না। নতুন কোথাও গিয়ে যতটুকু এগিয়েছি, সেটা আর সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। এনামুলের আশ্রয়েই আমার জ্ঞাতব্য বিষয়ের বেশি নিকটবর্তী থাকা যাবে।

সাংবাদিক শামীমের কথা মনে পড়ল। ওর সঙ্গে আলাপ করে মাদকের বিস্তার, নেটওয়ার্ক, সিন্ডিকেট সম্পর্কে আরও কিছু জেনে নিতে হবে। সম্ভব হলে কয়েক জন অ্যাডিক্ট ছেলে-মেয়ের সঙ্গে কথা বলা দরকার। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাদক ব্যবসায়ীরা কোত্থেকে কীভাবে সাপ্লাই পাচ্ছে, সেটাও আঁচ করতে হবে।

শামীমকে রিং দিলাম। ফোন বাজছে। ধরছে না। ব্যস্ত নাকি? কদিন আগে একবার ফোন দিয়েছিলাম। অল্পক্ষণেই রিসিভ করেছে বিনয়ী ভদ্রলোক। কথা-বার্তাও অতি সজ্জনের মতো। ওর বইটির ব্যাপারেও আমার পাঠ প্রতিক্রিয়ামূলক ফিডব্যাক দেওয়া দরকার। ফোন থেকে দূরে আছে নিশ্চয়। আবার ফোন দিই। দুটো রিং হতেই লাইন কেটে দিল শামীম। কোনও মিটিং-এ আছে? ব্যস্ত? বুঝতে পারছি না। মোবাইল অতি জরুরি ব্যবহার্য সামগ্রী। ব্যস্ত থাকলেও সেটা এক কথায় জানিয়ে দিতে পারে। বেশ অবাক কাণ্ড। সাত-পাঁচ ভেবে মিনিট দশেক পরে আবার শামীমকে ফোন দিলাম। শামীমের উচ্চকণ্ঠ শুনে আমি একেবারেই থ:
-দেখছেন না ফোন ধরছি না! বার বার ফোন করছেন কেন?

বহু কষ্টে নিজেকে স্বাভাবিক রেখে নিজের পরিচয় দিয়ে বললাম:
-শামীম, আপনিই তো প্রয়োজনে ফোন করতে বলেছিলেন। ভুলে গেছেন নাকি?

শামীম একই রকম তেজি গলায় বললেন:
-না ভুলি নি। আপনাকে আর সাহায্য করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমার অসুবিধা আছে।

এই লোকের সঙ্গে কথা বলা অর্থহীন। বিপদের ভয়ে কাতর মানুষ কাউকে সহযোগিতা করতে পারে না। তার নিজেরই সাহায্য দরকার। কথা না বাড়িয়ে আমি বললাম:
-ঠিক আছে। রাখছি।

ফোন রাখার আগে শামীম বলেন:
-আপনি আর ফোন করবেন না আমাকে।

আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে শামীম মুখের উপর ফোনের কানেকশন কেটে দিলেন। অদ্ভুত ব্যাপার। শামীমকেও কি মিসেস খোন্দকারের সমস্যা ধরেছে? কিছুই বুঝতে পারছি না। টের পাচ্ছি, আমার চারপাশে অসহযোগিতার দেয়াল ক্রমে ক্রমে প্রলম্বিত হচ্ছে। এমন বিনয়ী, সুভাষী শামীমকে কারা বিগড়ে দিল? নাহ! খুব সাবধানে, সতর্কতার সঙ্গে আমার কাজ চালাতে হবে। শামীমের আচরণ মেনে নিতে পারছি না। মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে বার বার। ক্লান্তভাবে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। ভাবছি এতো বিরূপতার মধ্যে কাজ করবো কিভাবে? মাদকচক্রের খবর একাকী জানা যাবে না। সোর্স লাগবে। হেল্প লাগবে।

আলস্যে ও বিষণ্নতায় চোখের পাতা লেগে গিয়েছিল। একটু ঘুম ঘুম তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থা। স্বপ্নের ঘোরে দেখলাম আমার সামনে বিরাট বড় একটি চাবি গ্র্যান্ডফাদার্স ক্লকের পেন্ডুলামের মতো দোল খাচ্ছে। চাবি হলো কোনও কিছু খুলে দেওয়া বা বন্ধ করার শক্তির প্রতীক। স্বাধীনতা, জ্ঞান, রহস্য, অলৌকিকতা, জাদু ও দীক্ষার প্রতীক হিসাবে বেছে নেওয়া হয় চাবিকে। রুপালি চাবি হলো পার্থিব শক্তির চিহ্ন। সোনালি চাবি প্রকাশ করে আধ্যাত্মিক শক্তিপুঞ্জকে। খ্রিস্ট ধর্মানুসারে স্বর্গের দরজার তত্ত্বাবধায়ক সেন্ট পিটারের প্রতীক হিসাবে দেখানো হয় চাবিকে। মুক্ত কোনও কিছুর সীমাবদ্ধতাকে বোঝাতেও চাবিকে বেছে নেওয়া হয়। চাবিকে গোপন রহস্যের বহুল প্রতীক হিসাবেও গণ্য করা হয়।

আমি কি বাস্তবের জগত থেকে প্রতীকের জগতে চলে যাচ্ছি? কিছুই স্পষ্ট হচ্ছে না। এই তো চাবির পেছনে একটি ছুরি দেখতে পাচ্ছি। বিচ্ছেদ, মৃত্যু বিসর্জন, বিভাজন ছুরি ছাড়া আর কি দিয়ে প্রকাশ করা যায়? বৌদ্ধ ধর্মে ছুরি দিয়ে কিছু কেটে ফেলা মানে অজ্ঞতা থেকে পরিত্রাণ। খ্রিস্ট ধর্মে ছুরি আত্মোৎসর্গকারীর প্রতীক। প্রতিরোধ বা প্রতিশোধের নিশানা ছুরি। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির কঠোরতাকে প্রতীকায়িত করা হয় ছুরির মাধ্যমে। আমি ‘চাবি’, ‘ছুরি’ ইত্যাদি দিয়ে কী করবো? আমার যুদ্ধ যত না বাইরের সঙ্গে, তার চেয়ে বেশি নিজের সঙ্গে। মানুষের মনের সঙ্গে। অদৃশ্য সিস্টেমের সঙ্গে। সেখানে চাবি অদেখা জগতের রহস্য খুলবে কি করে? মাদকের নীল জগতের গোপন দুয়ার খোলার চাবি কি আমি পেয়েছি? নাকি এই চাবি অন্য ভুবনের পথ খুলবে? আর ছুরি? এই ছুরি মানসিক পাশবিকতাকে হনন করবে কেমনে? লোভ, হিংসা, ক্ষোভ, যাতনাকে নিধন করতে পারবে আমার ছুরি?

হায়! নিজেকে মনে হচ্ছে, সেই অভাগা দরজির মতো। যে সারা জীবন শত শত মানুষের শত শত পোশাক সেলাই করেছে। কিন্তু মৃত্যুর সময় নিজের পোশাকটি সেলাই করতে পারে নি। সেলাইবিহীন কাফনের কাপড়ে তাকে চির বিদায় জানানো হচ্ছে মাটির গভীরে! আমিও এক পাশে চাবি আর আরেক পাশে ছুরি রেখে বিমূঢ় বসে আছি। কিছুই কাজে লাগাতে পারছি না। তীব্র অক্ষমতার দাহনে আমি শির শির করছি। আমার পুরো শরীর বিন্দু বিন্দু ঘামে ছেয়ে গেছে। মনে হচ্ছে আমি প্রকৃত জগত থেকে অতিপ্রাকৃতিক এক অচেনা জগতে চলে যাচ্ছি।

মোবাইলের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। ধীরে ধীরে আমার স্বাভাবিক চেতনা ফিরে এলো। মোবাইলে এসএমএস বিট বাজছে। যন্ত্রটি টেনে নিয়ে ক্ষুদে বার্তাটি ওপেন করলাম: ‘সরি! সব কথা এখন বলতে পারবো না। পরশু বিকাল চারটায় পাবলিক লাইব্রেরির সামনে আসুন। সাবধানে আসবেন: শামীম। ’

বড় বিচিত্র এই পৃথিবী। চমক আর রহস্যে ঠাসা। এক মনেতে বসত করে বহুজনা। শামীমের আচরণের অস্বাভাবিকতা নতুন কোন্ রহস্য কিংবা চমকের জানালা খুলে দেয়, দেখা যাক।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।