১৬.
অন্তরা ফোন করেছে:
-ভাইয়া, তুমি নাকি ঢাকায়?
আমি হাসতে হাসতে বলি:
-অবশ্যই। নইলে ফোন করে ধরলি কি করে?
ওর কণ্ঠ থেকে ঝরে পড়ছে তীব্র অভিমান:
-এটা কোনও কথা হলো? ঢাকায় আছো আর আমাদের জানালে না পর্যন্ত? বাসায়ও এলে না? আম্মা শুনে খুব রাগ করেছেন।
আমি ওকে শান্ত করতে আদুরে গলায় বলি:
-আসব আসব করে আসা হয় নি রে। আসলে একটা কাজে এতোই ব্যস্ত আর চিন্তিত আছি যে, অন্য কোনও দিকে মনোযোগ দেওয়াই হয়ে উঠে নি।
অন্তরার অভিমান এখনও কমে নি। সে রাগী গলায় বললো:
-তুমি তো এ রকমই! আত্মকেন্দ্রিক।
আমি হাসলাম। নতুন কথা নয়। এভাবেই আমাকে চেনে আত্মীয়-পরিচিতরা। ওকে আর খেপিয়ে কাজ নেই। আমি বললাম:
-খালাম্মাকে আমার সালাম জানাস। দুয়েক দিনের মধ্যেই তোদের ওখানে চলে আসব। বাই।
ফোন রাখার পর মনে হলো, বিরাট ভুল হয়ে গেছে। অন্তরা কী করে আমার আসার খবর আর ফোন নম্বর পেল, সেটাই জানা হয় নি। দেখা হলে জেনে নিতে হবে।
ভুল অবশ্য আরও হয়েছে। ছোটখালার বাসায় একবারও যাওয়া হয় নি। ঢাকায় আমাদের নিকট-আত্মীয়কুলের মধ্যে একমাত্র এই ছোটখালাই থাকেন। আমাদের শেকড়ের শেষ অংশটুকু তিনিই তো আগলে রেখেছেন। শৈশব-কৈশোরের সব স্মৃতিও জমে আছে কাঁঠাল বাগানের সেই বাড়িকে ঘিরে। প্রথমে সেটাই ছিল নানা বাড়ি। বিরাট জায়গা নিয়ে গ্রামের মতো সাজানো বাড়ি-ঘর। মা-খালা সকলের সংসারও পাশাপাশি। আমাদের জগতটাই রঙিন হয়েছিল সেই পরিমণ্ডলে।
ছোটখালা ছাড়া খালাদের অন্য সবাই বিদেশে বসতি গড়েছেন। ছোটখালার দুই ছেলে পিণ্টু ভাই আর সেন্টু। একজন অস্ট্রেলিয়া। অন্যজন নিউজিল্যান্ড। একমাত্র এই খালাই কোথায় যেতে রাজি হচ্ছেন না। না ছেলেদের কাছে, না বোনদের কাছে। এখন আর কেউ যাওয়ার জন্য তাকে সাধাসাধিও করে না। সবাই জেনে গেছে, তিনি ভিটে-মাটি ছেড়ে নড়বেন না। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে পড়ে আছেন।
সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য আজই চলে যাবো ছোটখালার ওখানে। ছোটখালার বাসা মানে নিজেরই একখণ্ড একান্ত স্মৃতির ভুবন। আহা! কী সুখের দিন ছিল। যৌথ পরিবারের বিরাট পরিসর। খেলা। আড্ডা। দলবদ্ধভাবে স্কুলে যাওয়া। আস্তে আস্তে সব আলগা হয়ে গেছে। শুধু ছোটখালার বাসা কেন? এবার এসে স্মৃতিমেদুর ঢাকা শহরও তো দেখা হলো। আগের মতো রিকশায় চেপে হাওয়া খেতে খেতে ঢাকায় বেড়ানোর দিন শেষ। চারদিকে শুধু ভিড়। জনারণ্য। শব্দ। জাম। হল্লা। অপরিকল্পিত নগরায়ন। যতই বদলে যাক স্মৃতির শহর মানে একান্ত আপন জায়গা। বিকালের দিকে শহরে কিছুক্ষণ ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় খালার বাসায় চলে যাব।
ঢাকার বয়স কত? ৪০০ বছর উদযাপন করেছে শহরটি। মানব বসতি ও ইতিহাস, সমাজ, সংস্কৃতির দিক থেকে ৪০০ বছর অনেক দীর্ঘ সময়। কিন্তু একদার রমনীয় রমনার সবুজ শহরে এখন ৪০০ বছর তো দূরের কথা, ২০০ বছরের পুরোনো বৃক্ষও খুঁজে পাওয়া দুস্কর। দীর্ঘ পরাধীনতা, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, অসচেতনতা এবং মাত্রাতিরিক্ত লালসার করাল গ্রাসে অনেক ঐতিহ্যের সঙ্গে প্রাচীন বৃক্ষ সম্পদও হারিয়ে গিয়েছে। ল্যান্ডস্কেপ থেকে লুপ্ত হয়েছে ঢাকার ক্লোরোফিল সবুজ ইমেজ।
বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ার অভিজাত ফুলার রোডে দাঁড়িয়ে এসব কথাই ভাবছি। বিকেলের রোদ চারদিক থেকে কমে কমে ম্লান হয়ে আসছে। আমি হেঁটে হেঁটে পুরোনো পথ-ঘাটগুলোকে স্মৃতির সঙ্গে মিলিয়ে নিচ্ছি। হেঁটেই খালার বাসায় যাবো। গাড়িতে ঠিক ঠাক দেখা যায় না সব কিছু। রিকসা-ভ্রমণের সুযোগ নিয়ে আয়েশ করে নগর-দর্শনের দিনও শেষ। সব রাস্তায় রিকসায় চলার সুযোগ নেই।
ফুলার রোডে সেই শতবর্ষী তেঁতুল গাছটির দেখা পেলাম। কী ভাবে যেন আমাদের ছোটকালের এই গাছটি এখনও টিকে আছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে জগন্নাথ হল লাগোয়া পথে খানিক এগিয়ে উদয়ন স্কুলের সামনে চলে এলাম। স্মৃতির বিদ্যাপীঠ। স্কুলের মূল ফটকের সামনে দাঁড়ালে বাম পাশে বিশালাকৃতির একটি তেঁতুল গাছ চোখে পড়ত। গাছটি এখনও আছে দেখে পুরোনো অনেক কথা মনে পড়ল। অন্য পথে ভাইস চ্যান্সেলর বাসভবন থেকে ব্রিটিশ কাউন্সিল হয়ে আরেকটু সামনের দিকে এগিয়ে পেয়ে গেলাম আরেকটি প্রিয় ও পুরোনো গাছ। মানুষ টিকে থাকে না। গাছ টিকে আছে। এই পথে বছরের পর বছর যেসব মানুষ একা বা দলবদ্ধ চলেছে, আজ তারা কে কোথায় কে জানে! শুধু গাছগুলো নিঃসঙ্গ দাঁড়ানো রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর রমনার আশেপাশের স্মৃতিসঙ্গী বৃক্ষদের দেখতে দেখতে সন্ধ্যার আবহ ঘিরে ধরলো। এদের সঙ্গে কথা বলতে পারলে কত কিছুই না জানা যেত! দীর্ঘ স্মৃতি আগলে তোরাই তো আছিস। আমরা কেউ কোথাও নেই।
ছোটখালা সদ্য নামাজ সেরে জায়নামাজেই বসে ছিলেন। আমাকে দেখে শিশুদের মতো হৈ হৈ করে উঠলেন:
-অন্তরা, দেখে যা, কে এসেছে?
পাশের ঘর থেকে ছুটে এলো অন্তরা। দেখেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো:
-ভাইয়া! কত বছর পর।
আনন্দে আমার দুচোখ ভিজে এলো। কতদিন পর আত্মীয় পরিবৃত্ত হয়ে উষ্ণতায় ভেসে যাচ্ছি। বড় মায়া, স্নেহ, আদর, ভালোবাসার বাঁধন। সব কিছু ছিন্ন করা গেলেও এই বন্ধন ছেঁড়া অসম্ভব।
অন্তরাকে সামনা সামনি দেখছি পাঁচ বছর পর। মাঝে যখন আমি এসেছিলাম, সে ছিল ইউকে। আইটি পড়তে গিয়েছিল। ফেসবুকে দেখা হয়েছে প্রায়ই। স্কাইপেতে কথাও হয়েছে। ছবিতে দেখা অন্তরা আর এই অন্তরায় যথেষ্ট পার্থক্য। একটু অগোছালো। চোখের নীচে কালি। বেশ এলোমেলো লাগছে ওকে। সে কথাই আমি ওকে জিজ্ঞেস করি:
-অন্তরা, তোর কি শরীর খারাপ? কেমন অবসন্ন দেখাচ্ছে?
অন্তরা কিছু বললো না। উদাস চোখে ঘরের অন্য দিকে তাকিয়ে রইল। ছোটখালা বললেন:
-মেয়েটির কিছুই বুঝি না! কোথায় চাকরি করে, কখন অফিস, মাথা-মুণ্ডু জানি না। শুধু অনিয়ম করে।
ছোটখালা ক্ষোভ লুকালেন না। তার চোখে-মুখে স্পষ্ট বিরক্তি। অন্তরা অবশ্য মায়ের এসব কথায় খুব একটা আমল দিল না। আস্তে ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে বললো;
-তোমরা কথা বলো। আমি আসছি।
দেখলাম, মোবাইল ফোনে কোনও নম্বর টিপতে টিপতে সে তার নিজের রুমে চলে যাচ্ছে।
ছোটখালার অবস্থাও ভালো নেই। বয়স সত্তর-পঁচাত্তর তো হবেই। শরীরও ভেঙে পড়েছে। টাইম ইজ দ্য বেস্ট হিলার। সময় কেমনে সব কিছু বদলে ফেলে। সন্ধ্যার বিদায়ী রক্তিম আলোয় জানালা দিয়ে উঠানের কোণে করমচা গাছটি দেখা যাচ্ছে। কত দুপুর-বিকেল খেলায়-আড্ডায় কেটে গেছে এই গাছের নীচে!
ছোটখালা আমাকে বসিয়ে রান্নাঘরে গেলেন। আমি চেয়ে চেয়ে দেখছি স্মৃতির ঘর-বাড়ি, আঙিনা। অন্তরাও মাকে সাহায্য করতে এখন রান্নাঘরে। একা বসে থাকতে ভালো লাগছে না। পায়চারী করতে করতে অন্তরার ঘরে চলে এলাম। এই ঘরটি আগে ছিল পিণ্টু ভাইয়ের। আমাদের আড্ডাখানা। ভাইয়ার বন্ধুরা আর আমাদের কাজিনরা এটাকে মনে করতো নিজের ঘর। কত দিন কত রাত এখানে কাটিয়েছি! অন্তরা ঘরটিকে অন্য রকম করে সাজিয়েছে। এক পাশে বিছানা। কম্পিউটার টেবিল। আর বুক সেলফ। বেশির ভাগ বইই ইংরেজি থ্রিলার। আইটির বই খুব কম। এই বয়সে রহস্য-উপন্যাস পড়ারই সময়। আমি মনে মনে হাসলাম। কত বয়স হবে অন্তরার? ছাব্বিশ, সাতাশ? এর বেশি নয় কিছুতেই। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, বড়ই জেদি আর অভিমানী মেয়ে। এখনও সেই জেদ। নিজের পায়ে দাঁড়াবে। ভাইদের সাহায্য নেবে না। কখনও কখনও ওর বিয়ের আলোচনা আমার কানে এসেছে। সে রাজি হয় নি। আগে নাকি নিজের পায়ে দাঁড়াবে, তারপর ওসব ভাববে।
বুক সেফলের সামনে গিয়ে একটি বই হাতে নিলাম। ‘দ্য হাঙ্গার এঞ্জেল’। হের্টা ম্যুলারের লিখা বই। আমি আগেই পড়েছি। অকথিত একাকিত্ব আর নির্বাসনের মন খারাপ করা কাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ, জার্মানিসহ ইউরোপ নাৎসি কুশাসন মুক্ত। কিন্তু রোমানিয়ায় ঘটছে এক উলটপুরাণ। সে দেশের জার্মান বংশোদ্ভুতদের জোর করে পাঠানো হচ্ছে তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়নের ‘ফোর্সড লেবার ক্যাম্প’-এ। কেউ কোনও প্রতিবাদ করতে পারছে না। কারণ, যুদ্ধ বিজয়ীর কথাই তখন আইন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট, ব্রিটেন, সোভিয়েট ইউনিয়ন, ফ্রান্স সে সময় বিজয়ীর বেশে দখলকৃত দেশে দেশে চালাচ্ছে নব্য আধিপত্য। আরব বিশ্ব, আফ্রিকা, ইউরোপ, এশিয়া নিজেদের পছন্দ মতো ভাগাভাগিও করে নিয়েছে মিত্রপক্ষ। সোভিয়েটরা রোমানিয়ার দখল পেল। তারা বলছে, এদেশের ‘জার্মানদের’ দণ্ড দিতে হবে। কারণ এরা যুদ্ধের প্রতিপক্ষ ছিল।
রোমানিয়ায় বসবাসকারী জার্মানরা হিটলারের সঙ্গে যোগ দেয় নি, তবুও জার্মান হওয়ার কারণে জোরপূর্বক শ্রমে তাদেরকে বাধ্য করা হয়েছিল। লেবার ক্যাম্পের কঠোর জীবন সইতে না পেরে মারা গিয়েছিলেন কয়েক সহস্র রোমানিয়ান-জার্মান। রোমানিয়ার নোবেলজয়ী লেখক হের্টা ম্যুলারের উপন্যাস ‘দ্য হাঙ্গার এঞ্জেল’ সোভিয়েট লেবার ক্যাম্পের সেই নির্মম, বিষণ্ন, হতাশ জীবনের চিত্র। উপন্যাসটির উত্তরকথনে ম্যুলার জানাচ্ছেন'the deportation were a taboo subject because they recalled Romania's fascist past'। কমিউনিস্ট একনায়ক চসেস্কুর আমলে সমগ্র ইতিহাসটিকেই আড়াল করে রাখা হয়েছিল। কেউ কোনও কথাও বলত না লেবার ক্যাম্প নিয়ে। স্বেচ্ছা-নির্বাসিত ম্যুলার সব সময়ই চেয়েছিলেন ক্যাম্প নিয়ে লিখতে। বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন তিনি। এবং এ সূত্রেই তাঁর আলাপ হয় এক সময় সোভিয়েট ক্যাম্পে বন্দি রোমানিয়ান কবি অস্কার পাসটিয়রের সঙ্গে। তাঁরা ঠিক করেন, দু’জনে মিলে একটি গ্রন্থ রচনা করবেন। কিন্তু গ্রন্থ-পরিকল্পনার সূচনাতেই মারা যান কবি অস্কার। অতঃপর অস্কারের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের নোটস, তাঁর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য, ঘটনাবলি অবলম্বনে ম্যুলার একাই লিখতে শুরু করেন। পরিণতিতে ‘দ্য হাঙ্গার এঞ্জেল’। কবি অস্কারই এই উপন্যাসের নায়ক সতেরো বছরের লিও অবার্গ। লিও-র একাকিত্ব, নির্বাসন, বন্দিত্ব বস্তুজগতের একেকটি অনুসঙ্গের মধ্যে গভীর এক ব্যঞ্জনা ধারণ করে ক্ষুধাই হয়ে ওঠে তার ত্রাতা।
বইটি অন্তরা খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়েছে। পাতায় পাতায় বিভিন্ন লাইন লাল কালিতে আন্ডারলাইন করা। কোথাও স্টার চিহ্ন দিয়ে মার্ক করা। এই নিঃসঙ্গতার বিবরণ তাকে এতোটা আকর্ষণ করেছে কেন? অন্তরার মনের গহীনেও কি চলছে আরোপিত বন্দিত্বের নিঃসীম হাহাকার? মানসিক পালাবদল? একাকিত্বের যন্ত্রণা?
রান্নাঘরে ফোন বাজার শব্দ শোনা গেল। অন্তরা কথা বলছে:
-ইয়েস আঙ্কেল!
উৎকর্ণ হয়ে আমি শুনছি আর অবাক হয়ে ভাবছি, এই আঙ্কেল কে? কার সঙ্গে কথা বলছে সে? আমি ভেবে কূল পাই না।
আবার অন্তরার গলা শোনা গেল:
... হ্যাঁ...হ্যাঁ...ঠিক আছে...আমি আসছি...
কথা বলতে বলতে অন্তরা মনে হচ্ছে তার ঘরের দিকেই এগিয়ে আসছে। ফোনে উত্তেজিত ভাবে সে কোথায় যাওয়ার কথা বলেছে? এই রাতের বেলায়? অন্তরা আমাকে একটি চিন্তাবৃত্তের মধ্যে ফেলে দিল। ও এসে পৌঁছার আগেই তাড়াতাড়ি করে বইটি সেলফে রাখতে গিয়ে ফাঁকা জায়গা দিয়ে দৃষ্টি চলে গেল। সেলফের পেছনে বইগুলোর আড়ালে থরে থরে সাজানো ফেনসিডিলের বোতল, এক গাদা টেবলেট। হাতে নিয়ে চমকে গেলাম। কড়া মাত্রার ঘুমের ওষুধ। নেশার জন্য আজকাল তরুণ-তরুণীরা দেদারছে ব্যবহার করছে। আমার পুরো শরীর কেঁপে উঠল।
অন্তরা পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে, সেটা খেয়াল করার অবস্থা আমার নেই। সে বিশ্রী গলায় আমাকে বললো:
-একি তুমি আমার ব্যক্তিগত জিনিস-পত্র নাড়াচাড়া করছো? ডিসগ্যান্টিং! ছিঃ ছিঃ! আমি ভাবতেও পারছি না!
আমি ওর বিরক্তি গায়ে না মেখে চরম বিস্ময়ে জানতে চাইলাম:
-এসব কি অন্তরা? কি হয়েছে বল আমাকে?
অন্তরা যেন আমাকে সহ্যই করতে পারছে না, এমন বিরক্তি নিয়ে বললো:
-ইটস নান অব ইয়োর বিজনেস...
রাগে চিবিয়ে চিবিয়ে আরও কিছু অস্ফুট কথা বলতে বলতে সে হনহন করে চলে গেল বাসার বাইরে। গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার শব্দ শোনা গেল। পেছন পেছন ছোটখালাও চলে এসেছেন। তার মুখ অন্ধকার। চোখ টলোমলো। রাতের সব কালো যেন একদার সুশ্রী খালাকে বিশ্রীভাবে আক্রান্ত করেছে।
নাটকীয় উত্তেজনার মধ্যে আমার আর জানা হয় নি, অন্তরা কোত্থেকে আমার ঢাকায় আসার খবর পেয়েছে? কার কাছ থেকে আমার ফোন নম্বর জেনেছে?
পুরো ঘটনাগুলোই আশ্চর্যজনক ধাঁধার মতো মনে হচ্ছে। আমার চারপাশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে রহস্য ও আলো-আঁধারীর কুহেলিকাময় কুয়াশা। চলবে
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭
জেডএম/