শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে নগরের রায় রোডের খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের কর্মবীর আব্দুল খালেক গণপাঠাগারে ‘কবিতার আসর’ শিরোনামে এ আড্ডা শুরু হয়। শেষ হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ‘টালত মোর ঘর/নাহি পড়বেশি/হাঁড়িত ভাত নাই/নিতি আবেশী’- চর্যাপদ থেকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানবজীবনের চরম সত্য কথা কবিতায় স্পষ্ট করে গেছেন কবিরা। মানবতা নিয়ে আমাদের এমন চর্চা ধারণ করতে হবে। ‘যতদূর বাংলা ভাষা ততদূর বাংলাদেশ’- চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে যেতে হবে বহুদূর।
এ কথাসাহিত্যিক বলেন, বরিশাল এলেই আমি জীবনানন্দের বাড়ি দেখতে যেতাম। জীবনানন্দের চর্চায় এ আয়োজন আমাকে মুগ্ধ করেছে।
আড্ডা-ধানসিড়িকে ধন্যবাদ জানিয়ে কবি ও কথাসাহিত্যিকরা এ আয়োজনকে বাংলা সাহিত্যের অত্যাবশ্যকীয় একটি অনুষঙ্গ বলে উল্লেখ করেন। তারা এ আয়োজন অব্যাহত রাখারও আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন- কথাসাহিত্যিক আব্দুল মান্নান সরকার, কবি জুয়েল মাজহার, জীবনানন্দ পুরস্কার ২০১৯-এর আহ্বায়ক ড. মুহম্মদ মুহসিন, কবি শামীম রেজা, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিখিলেশ রায়, সন্তোষ সিংহ, ‘দূর্বা’ সম্পাদক গাজী লতিফ, নালন্দালোকের সম্পাদক সৈয়দ সগীর উদ্দিন আহমেদ, কবি আসমা চৌধুরী, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বরিশালের সমন্বয়ক বাহাউদ্দিন গোলাপ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কবি মোস্তফা তারিকুল আহসান, কবি দুলাল সরকার, জাতীয় কবিতা পরিষদ গোপালগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ অধিকারী, কবি হিজল জোবায়ের, মিছিল খন্দকার, মাহমুদ মিটুল, সৈয়দ মেহেদী হাসান, চঞ্চল বাশার প্রমুখ। কবিতা পাঠ-আড্ডার পর বিরতি শেষে বিকেল ৪টায় একই মিলনায়তনে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ জীবনানন্দ পুরস্কার-২০১৯ প্রদান এবং এ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘ধানসিড়ি’র অষ্টম সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
এবার কথাসাহিত্যে আবদুল মান্নান সরকার ও কবিতায় জুয়েল মাজহার এ পুরস্কার পাচ্ছেন। এ দু’জনসহ চার মহীরুহ সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্মের ওপর বীক্ষণাত্মক প্রবন্ধমালা দিয়ে সাজানো হয়েছে ছোটকাগজ ‘ধানসিড়ি’র অষ্টম সংখ্যা। বাকি যে দুই সাহিত্যিক এতে স্থান পেয়েছে, সে দু’জন হলেন ক্লাসিক সাহিত্যিক হিসেবে কবি আহসান হাবীব ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কথাসাহিত্যিক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ।
কথাসাহিত্যিক আব্দুল মান্নান সরকারের জন্ম ১৯৫২ সালে পাবনার বেড়া উপজেলায়। পেশা অধ্যাপনা। তার প্রকাশিত উপন্যাস- ‘পাথার’, ‘যাত্রাকাল’, ‘কৃষ্ণপক্ষ’, ‘নয়াবসত’, ‘পিতিপুরুষ’, ‘আরশিনগর’ ও ‘জনক’ এবং গল্পগ্রন্থ- ‘নিরাকের কাল’, ‘দুই দিগন্তের যাত্রী’ ও ‘নীল পাথরের বিষ’।
কবি জুয়েল মাজহার ১৯৬২ সালে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক। তার প্রকাশিত কাব্য- দর্জি ঘরে একরাত, মেগাস্থিনিসের হাসি, দিওয়ানা জিকির এবং অনুবাদ বই- ‘কবিতার ট্রান্সট্রোমার’ ও ‘দূরের হাওয়া’।
২০০৭ সালে দ্বিবার্ষিক এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। এর আগে এ পুরস্কার পেয়েছেন- ২০১৬ সালে কবি মাসুদ খান এবং কবি ও কথাসাহিত্যিক মহীবুল আজিজ, ২০১৪ সালে কবি খালেদ হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক ইমতিয়ার শামীম, ২০১৩ সালে কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন ও প্রাবন্ধিক শান্তনু কায়সার, ২০০৮ সালে কবি কামাল চৌধুরী ও কথাসাহিত্যিক সুশান্ত মজুমদার এবং ২০০৭ সালে কবি আসাদ মান্নান ও কথাসাহিত্যিক সালমা বাণী।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯/আপডেট ১৪৩৮ ঘণ্টা
এমএস/আরবি/এইচএ/
** জীবনানন্দ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শনিবার