বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মেলা ঘুরে দেখা যায়, কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে, কেউ আবার পহেলা ফাল্গুন মনে করেই এসেছেন। তবে মেলাজুড়ে যেদিকেই চোখ যায়, শুধুই হলুদ আর বাসন্তী রঙের সমারোহ।
মেলায় বই কিনছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরুণ রায়। কথা হলে তিনি বলেন, বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা। ভালোবাসা আর প্রাণের টানে আমরা প্রতিবছরই বইমেলায় ছুটে আসি পছন্দসই বই কিনতে। আর এখন তো ভালোবাসা ও ফাল্গুন উপলক্ষে একটা উৎসব উৎসব আমেজ চারদিকে। তাই সেই রঙে সেজেই চলে এসেছি বইমেলায়। তবে অপেক্ষা আছে শুক্রবারের জন্যও।
শুধু পাঠক বা দর্শনার্থী নয়, প্রকাশকরাও এখন অপেক্ষা করছেন ভালোবাসা ও ফাল্গুন উৎসবসহ শুক্রবারের ছুটির দিনটির জন্য। এ প্রসঙ্গে কথা হয় ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ এর প্রকাশক জহিরুল আবেদীন জুয়েলের সঙ্গে।
তিনি বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ বিক্রি ভালো। তবে আগামীকাল ছুটির দিন এবং একইসঙ্গে ভালোবাসা ও ফাল্গুন উৎসব হওয়ায় মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীর সঙ্গে বিক্রিও বাড়বে বলেই আশা করছি।
বিকেলে গ্রন্থমেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলায় পাঠক হিসেবে বয়োজোষ্ঠ্যদের তুলনায় তরুণ-তরুণীদের ভিড় বেশি। আবার বাবা-মায়ের কোলে চড়ে ও হাত ধরে হেঁটে মেলায় বই কিনতে এসেছিল অনেক কোমলমতি শিশুও। তবে তারাও অপেক্ষায় আছে পলাশ ফোটা দিনটির। কেননা সকালেই রয়েছে শিশুপ্রহর।
এদিকে বৃহস্পতিবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় নতুন বই প্রকাশ হয়েছে ১৮০টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জলকথা প্রকাশ থেকে আনিসুর রহমানের গল্পগ্রন্থ ‘স্বর্গের ছবি’, মনিরা মিতার গ্রল্পগ্রন্থ ‘গহীনে যাপন’, আবিষ্কার থেকে শেখ আবদুরের ‘হজরত মুহম্মদ স. জীবনচরিত ও ধর্মনীতি’, মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের সম্পাদিত গ্রন্থ ‘জাতির পিতা ও চার নেতা’, উৎস প্রকাশের অনন্ত নিগারের ‘আলফ্রেড নোবেল’, জন এডেয়ারের ‘দ্য লিডারশিপ অব মুহম্মদ’, কৃষ্ণকুমার মিত্রের ‘মুহম্মদ চিরত’, আনন্দম থেকে ফরহাদ হোসেনে গ্রল্পগ্রন্থ ‘ধূসর বসন্ত’, বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছে সুব্রত বড়ুয়ার বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন কথা’, অনন্যা এনেছে আনিসুল হকের ‘কবিতা সমগ্র’, একই প্রকাশনী থেকে রকিব হাসানের গোয়েন্দা কাহিনি ‘শয়তানের বাঁশি’, চন্দ্রবিন্দু থেকে শঙ্খচূড় ইমামের ‘নাইট ফাল্স’ বইগুলো।
বিকেলে লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী, মৌলি আজাদ, রাসেল আশেকী এবং শোয়েব সর্বনাম।
মূলমঞ্চে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি মাহবুব সাদিক, শাহজাদী আঞ্জুমান আরা, মুনীর সিরাজ এবং মাসুদ হাসান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মো. শাহাদাৎ হোসেন, অনিমেষ কর এবং তামান্না সারোয়ার নীপা।
নৃত্য পরিবেশন করেন সৌন্দর্য প্রিয়দর্শিনী ঝুম্পা-এর পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘জলতরঙ্গ ডান্স কোম্পানির নৃত্য শিল্পীবৃন্দ। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী দীনাত জাহান মুন্নী, আঞ্জুমান আরা শিমুল, কাজী মুয়ীদ শাহরিয়ার সিরাজ জয়, মো. রেজওয়ানুল হক এবং সঞ্জয় কুমার দাস।
বাংলাদেশ সময়: ০০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২০
এইচএমএস/আরএ