সোমবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাঁটাবনে কবিতা ক্যাফেতে ঐহিক বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কবির হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন কবি তমাল রায়, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক ও কবি জুয়েল মাজহার এবং কবি শোয়াইব জিবরান।
এ সময় আয়োজনে ঐহিক বাংলাদেশ সম্পর্কে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক ও কবি জুয়েল মাজহার বলেন, সীমান্তের বাঁধার কারণে আমাদের মধ্যে একটা অপরিচয়ের দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, একটা সময় আমাদের এখানে বিভিন্ন লেখকের লেখায় একঘেয়েমি থাকলেও কবিদের নিরলস প্রচেষ্টায় সেই জায়গাটা থেকে আমরা উঠে আসতে পেরেছি। বর্তমানে বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকের লেখায় নতুন ভাব, নতুন ধাঁচ, সাহিত্যের নতুন ধারা দেখতে পাচ্ছি। তরুণদের হাতে এই সাহিত্য আরও উজ্জ্বল হবে।
কবি শোয়াইব জিবরান বলেন, ওপার বাংলার মানুষও আমাদের মতো স্বপ্ন দেখে। তাদের স্বপ্নের সঙ্গে আমাদের স্বপ্ন মিলিয়ে দুই বাংলার লেখক-সাহিত্যিকরা এক হবার যে চেষ্টা করছে, তা অনন্য। একইসাথে যে সময়ে পুরস্কার নিন্দার পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেই সময়ে ঐহিকের এই সম্মান সত্যিকারের সম্মান বলেই আমি বিবেচনা করি।
সম্মাননা প্রদান শেষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও কবিতা পাঠের আসর। এসময় কবিকে নিয়ে কথা বলেন কবি সন্দীপন ধর, কবি সব্যসাচী হাজরা, কবি রাহুল গাঙ্গুলী, কবি ও কথাসাহিত্যিক হামিম কামাল, রাত্রির রং বিবাহ বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা বেহুলা বাংলার প্রকাশক চন্দন চৌধুরী ও কবিপত্নী অপর্ণা হালদার।
সন্দীপন ধর বলেন, ঐহিকের মতো সংগঠনগুলোই সাহিত্য সংস্কৃতির আন্দোলনগুলো বাঁচিয়ে রেখেছে। এদের কার্যক্রম যতো বৃদ্ধি পাবে, দিল্লির মতো নৃশংসতা ততো কমবে।
সব্যসাচী হাজরা বলেন, কবিতায় জীবনের বিভিন্ন দিকের মধ্যে প্রাণ দিতে পারেন অরবিন্দ চক্রবর্তী। তিনি খোঁজ করেন। যা লিখেছেন, তা থেকে বেরিয়ে এসে আবার নতুন কিছু লিখতে হবে বলে ভাবেন। তিনি অন্যদের মতো কেন্দ্রমুখী নন, বরং উৎকেন্দ্রিক।
হামিম কামাল বলেন, অরবিন্দ চক্রবর্তী কবিতাকে যাপন করেন। তার কবিতায় নানান আঙ্গিক দেখা যায়, নতুনত্বের স্বাদ পাওয়া যায়।
রাহুল গাঙ্গুলী বলেন, অরবিন্দের কবিতায় বিভিন্ন ইমেজের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। কবিতাকে যাপনের মধ্য দিয়ে তিনি নতুন কবিতা বের করে আনেন। তার সব থেকে বড় গুণ হলো, তিনি নিজেকে ছড়িয়ে দিতে পারেন সবার মাঝে।
চন্দন চৌধুরী বলেন, একজন কবির কবিতা সবসময় সবদিক থেকে ভালো লাগবে তা নয়, তবে অরবিন্দ চক্রবর্তীর কবিতার কিছু বিষয় আছে, যা আমার কাছে ভালো লাগে। সব থেকে ভালো লাগে ওর কবিতা নিয়ে থাকাটা। তবে এখানেই থেমে না থেকে সামনে আরো পথ চলবে সে, এই প্রত্যাশা।
কবিপত্নী অপর্ণা হালদার বলেন, ওর কবিতার জন্য আমি গর্ববোধ করি। ওর কাজগুলো আমার প্রাপ্তি। ওর জন্য শুভকামনা।
সম্মাননা প্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অরবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, অন্যদের সঙ্গে আলাপচারিতায় আমি তাদের দেখাগুলোকে খুঁজতে চেষ্টা করি। তারপর তা নিজের দেখার সঙ্গে মিলিয়েই জমিনের বুকে গাঁথি শব্দের মালা।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কবি মেঘ অদিতি। এসময় তিনি দর্শকদের কাছে ঐহিক বাংলাদেশের যাত্রা ও নানা কার্যক্রম তুলে ধরেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কবি তমাল রায় ও নুরেন দূর্দানী।
আয়োজনে কবিতা পাঠ ও সম্মাননা পাওয়ায় কবিকে শুভেচ্ছা জানাতে আরও উপস্থিত ছিলেন কবি আহমেদ শিপলু, কবি সুমি সিকানদার, পারলীয়া, কবি সাদ্দাম হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, কবি আশরাফ আহমেদ, জিল্লুর রহমান সোহাগ, কবি লুফাইয়্যা শাম্মীসহ অনেকেই।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২০
এইচএমএস/এইচজে