গত আসরগুলোতে দাপিয়ে বেড়ানো ঢাকা যেন এই আসরে নিস্তেজ। কোনো ভাবেই যেন হার এড়াতে পারছে না বুড়িগঙ্গা পাড়ের দলটি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে ১৬ রানে হারে ঢাকা প্লাটুন। খেলা শেষে দু’দলের অধিনায়ক জানালেন তাদের ম্যাচের পরিল্পনার কথা।
উইকেট ভালো হলেও এতবড় রান তাড়া করা কঠিন ছিল জানিয়ে ঢাকা প্লাটুন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, 'এই উইকেটে ১৮০ থেকে ১৯০ চেজ করা যায়। ২২০ চেজ করা ব্যাটম্যানদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। আমাদের বোলিংটাও ভালো হয়নি। ২০০ পর্যন্ত থাকলেও হয়তো একটা ক্যালকুলেশন করে জেতার চেষ্টা করা যেত। আরেকটু ক্যালকুলেটিভ ব্যাটিং করলে বা টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা যদি প্রথম ৬ ওভারে আরও ১৫ থেকে ২০ রান বেশি করতে পারত, তাহলে হয়তো ভিন্ন কিছু হতে পারতো। তাছাড়া আমরা প্রতি ম্যাচে শেষে বোলিং করছি। এই সময় ডিউ ফ্যাক্টর কাজ করে। কিন্তু আমরা দূর্ভাগ্যবশত এই সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারিনি। তারা অবশ্যই ভালো ব্যাটিং করেছে। কিন্তু আমরা যদি আরও ২৫/৩০ রান কমে আটকাতে পারতাম তাহলে হয়তোবা ভিন্ন কিছু হতে পারতো। '
তিনি আরও বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি হলো মোমেন্টামের খেলা। মোমেন্টাম যখন চলে যায় সব দল মোমেন্টাম খুঁজতে থাকে। তবে বিষয়টি একদিকে হতাশার হলেও, অন্যদিকে এটাও একটা বিষয় যে আমরা ২শ'র বেশি রান করতে পারি।
মুমিনুলের প্রশংসা করে ম্যাশ বলেন, ‘খেলার পরিস্থিতি বুঝে সে খেলেছে। সে যে ধরনের খেলোয়াড়, সে প্রায় সব বলেই মারার চেষ্টা করেছে। ওর যে ব্যাটিংয়ের ধরন সে অনুযায়ী ভালো ব্যাটিং করেছে। তবুও আজকের ম্যাচে এক্সট্রা কিছু করা দরকার ছিল সেটি হয়নি। তামিমের মতো খেলোয়াড়কে মিস করাই স্বাভাবিক। আশা করবো সে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। এখনো অনেক গুলো ম্যাচ আছে, আশা করছি আমরা ফিরতে পারবো। ’
তিনি বলেন, ‘এবারের আসরে উইকেটগুলো খুবই ভালো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ ধরনের উইকেটই দেখা যায়। এতে করে বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জ থাকবে কিভাবে ভালো করতে হয়। অন্যদিকে ব্যাটসম্যানরাও নিজের প্রতি আস্থা ফিরে পাবে। যদি ব্যাটসম্যানরা শটস খেলার সুযোগ পায়। তাছাড়া ঢাকায় আমার যে উইকেটে খেলেছি বোলিং করলেই বোঝা যাবে আমাদের বোলিংয়ে কতটুকু উন্নতি দরকার। ’
নতুন বোলারদের কথা উল্লেখ করে মাশরাফি বলেন, ‘নতুন পেসারদের নিয়ে কাজ করতে হবে। মুগ্ধ নামে একজন ফাস্ট বোলার দেখলাম। সে ভালো বোলিং করেছে। এসব বোলারদের গ্রুমিং করতে হবে। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদের যদি তৈরি করা হয় তাহলে তারা বাংলাদেশের জন্য সম্পদে পরিণত হবে। ’
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘আমারা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পেরেছি। ছেলেরা অত্যন্ত ভালো খেলেছে। তবে স্বস্তির বিষয় হলো লোকাল প্লেয়াররা ভালো করছে এটা আমাদের দেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো। ’
নিজের ইনজুরির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগে যেখানে ইনজুরি ছিল সেখানেই আজ আবার টান লেগেছে। এখন স্ক্যান করে দেখতে হবে। ’
এসময় পেস বোলিং নিয়ে কথা বলেন রিয়াদ। তিনি বলেন, ‘তাসকিন, মোস্তাফিজ তারা আমাদের দেশের জন্য সম্পদ। তাদের একটু সময় দেয়া উচিৎ। তারা নিজেদের প্রামণ করার যোগ্যতা আছে। মুগ্ধ নামে বেশ কয়েকদিন আগে একজনকে দেখলাম। সে খুব দ্রুত বল করতে পারে। যেটা ভালো লাগছে আমাদের পেস বোলিংয়ের শক্তিটা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের মধ্যে যদি একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকে সেটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য ভালো। তাছাড়া এই ধরনের উইকেট আন্তর্জাতিক মানের উইকেট। এধরনের উইকেটে খেলতে হলে ব্যাটসম্যানদের যেমন স্কিলফুল হতে হয়, তেমনি বোলারদেরও টেকনিক্যাল হতে হয়। ’
চট্টগ্রামে বুধবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৬ রানে জিতেছে মাহমুদউল্লাহর দল। ২২১ রান তাড়া করতে নেমে ২০৫ রানে থেমেছে ম্যাশের দল। এমন রান উৎসবের ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেন তরুণ বাঁহাতি পেসার মেহেদি রানা। পাওয়ার প্লে আর ডেথ ওভারের কঠিন সময়ে দারুণ বোলিং করে গড়ে দেন ব্যবধান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
এমএম/টিসি/এমএমএস