ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বাইক্কা বিলের বিরল রিংপড়া পরিযায়ী ‘লাল গলা’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৯
বাইক্কা বিলের বিরল রিংপড়া পরিযায়ী ‘লাল গলা’ বাইক্কা বিলের বিরল পরিযায়ী ‘চাইনিজ রুবিথ্রট’। ছবি: শামীম আলী চৌধুরী

মৌলভীবাজার: বাইক্কা বিলে ফিরে এসেছে পায়ে রিং পরিহিত পাখিটি। পাখি গবেষণার জন্য পাখির পায়ে রিং পড়ানোর সূত্রপাত। তাতে পাখি গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব কয়েক বছর থেকে বাইক্কা বিলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গবেষণামূলক কাজের জন্য পাখিদের পায়ে রিং পড়ানো আয়োজন করে আসছে। তেমনি একসময় বাইক্কা বিলে একটি রিং পড়ানো হয়েছিলো পরিযায়ী ‘লাল গলা’ পাখিটিকে।

সে শীত পরিযায়ী। সেই পাখিটি আবার ফিরে এসেছে বাংলাদেশের বাইক্কা বিলে।  

শীত শেষ আবার ফিরে যায় পৃথিবী উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে। আবর্তনের ফলে সেখানে শীতকাল এসে যখন বরফ করে দেয় তাদের জলাধার আর খাবারের সব ধরনের আয়োজন। তখন তারা আবার ফিরে আসে আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর দিকে।

তেমনি একটি রিংপড়া বাইক্কা বিলের ফিরে আসা পরিযায়ী নাম ‘লাল গলা’। বহু বছর আগে তার পায়ে রিং পড়ানো হয়েছিলো। সেই রিঙের গায়ের ছোট করে লেখা সেই নম্বরটি ভালো করে পরীক্ষা করলেই বের হয়ে আসবে পাখিটির সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত। ‘লাল গলা’ বাংলাদেশের বিরল পরিযায়ী পাখি।   

পাখি আলোকচিত্রী শামীম আলী চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এ পাখিটির বাংলা নাম ‘লালগলা’। বাংলাদেশের প্রখ্যাত পাখি গবেষক শরীফ খানের বাংলা নামকরণ করেছেন। এর ইংরেজি নাম Chinese Rubythroat এবং বৈজ্ঞানিক নাম Calliope tschebaiewi

তিনি আরও বলেন, এই ছবিটি শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিল থেকে তোলা। পরিযায়ী পাখি। দেশে কদাচিৎ দেখা মিলে। ২০১৫ সালে এ পাখিটি একবার দেখেছিলো বাইক্কাতে। তখন পায়ে রিং পড়ানো হয়। আমার ছবিতেও পায়ে রিং পড়ানো আছে।

পাখির এ ছবিটি প্রাপ্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফকে সঙ্গে নিয়ে বাইক্কা বিলে গিয়ে এই ছবিটি পাই। কিন্তু নিশ্চিত হতে পারিনি নতুন এ পাখিটির সঠিক ‘আইডি’ সম্পর্কে। পরে এ পাখির ছবিটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী বিশারদ এবং জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খানকে পাঠানো হয়। তিনি এ পাখিটিকে তখন দেশের নতুন রেকর্ড পাখি বলে শনাক্ত করেছিলেন। আদনান আজাদ আসিফ এবং আমিসহ বাংলাদেশে মাত্র সাত/আটজনের ক্যামেরায় এ ‘লালগলা’ পাখিটির ছবি তোলা আছে।  

এর দৈর্ঘ্য ১৫ সেন্টিমিটার। আমাদের চড়ুই পাখির আকার হচ্ছে ২০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ চড়ুই থেকেও ছোট। মাথা কপাল ও ঘাড়ে একটি সাদা ক্রস আছে। বুকের উপরে গালটুকু লাল। বুকের উপরি ভাগ কালো। বুক সাদা বলে জানান পাখি আলোকচিত্রী শামীম আলী চৌধুরী।

জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী বিশারদ ড. মনিরুল এইচ খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘চাইনিজ রুবিথ্রট’ পাখিটি বিরল পরিযায়ী। এর প্রচলিত বাংলা নাম নেই। তবে ইংরেজি নামে সঙ্গে মিল রেখে একটা দেওয়া যেতে পারে। মাঝে মধ্যে হঠাৎ শীতকালে পাওয়া যায়। তবে বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন সংলগ্ন জলাভূমি ছাড়া আর কোথাও ‘চাইনিজ রুবিথ্রট’ পাখিটিকে পাওয়া যায় না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৯
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।