ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাবমেরিনে ত্রিমাত্রিক শক্তি হলো নৌবাহিনী

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
সাবমেরিনে ত্রিমাত্রিক শক্তি হলো নৌবাহিনী বাংলাদেশ নৌাহিনীতে যোগ হওয়া সাবমেরিন। ছবি- পিআইডি

চট্টগ্রাম:  দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ত্রিমাত্রিক শক্তিতে রূপ নিল বাংলাদেশ নৌবাহিনী। রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে এই বাহিনীতে যোগ হলো চীন থেকে আনা আধুনিক দুই সাবমেরিন (ডুবো যুদ্ধজাহাজ) নবযাত্রা ও জয়যাত্রা। ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবমেরিন দু’টিকে বাহিনীতে কমিশনিং করেন। দুই অধিনায়কের হাতে তুলে দেন সাবমেরিন কমিশনিং ফরমান। নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী সাবমেরিন দু’টির নামফলকও উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

নবযাত্রা অধিনায়ক কমান্ডার কে এম মামুনুর রশিদ ও জয়যাত্রা  অধিনায়ক লে. কমান্ডার মাজহারুল ইসলামের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেওয়ার পর ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা অর্জনের পরিচিতিমূলক মহড়া দেয় বানৌজা বঙ্গবন্ধু, নেভাল এভিয়েশনের দু’টি হেলিকপ্টার, দু’টি এমপিএ ও একটি দক্ষ কমান্ডো দল। তারপর প্রধানমন্ত্রী ‘বিএনএস শেখ হাসিনা’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

‘বিএনএস শেখ হাসিনা’ কার্যত বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো। আর গু’টিকয় সাবমেরিন পরিচালনাকারী দেশের তালিকায় যোগ হলো বাংলাদেশের নাম।

বাংলাদেশ নৌাহিনীতে যোগ হওয়া সাবমেরিন পরিদর্শন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি- পিআইডি
এর ফলে বিশাল জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়লো। পাশাপাশি তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকগুলোতে নিরাপত্তাসহ সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাবমেরিন দু’টির সহায়ক ভূমিকা পালনের সুযোগ তৈরি হলো।

সাবমেরিনের কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা এবং সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ ঘাঁটিতে অবতরণ করে।

বিকেল সাড়ে তিনটায় পতেঙ্গায় বোট ক্লাবে ওয়াসার নতুন একটি পানিশোধন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বোট ক্লাব থেকে আবারও ঈশা খাঁ ঘাঁটিতে ফিরে হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড়বেন তিনি।
বাংলাদেশ নৌাহিনীতে যোগ হওয়া সাবমেরিন পরিদর্শন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি- পিআইডি
নৌবাহিনীর ‘নবযাত্রা আর জয়যাত্রা’
নৌবাহিনীর জন্য এক হাজার ৫৬৯ কোটি টাকায় দুটি সাবমেরিন কেনার জন্য চীনের সঙ্গে ২০১৪ সালে চুক্তি করে বাংলাদেশ।   ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সাবমেরিন দুটি চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওয়ান শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।   সী ট্রায়ালের পর চীন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের তত্ত্বাবধানে ২২ ডিসেম্বর সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।

আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে জানা গেছে, সাবমেরিন দুটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার।    টর্পেডো ও মাইনে সুসজ্জিত সাবমেরিনগুলো শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও ডুবো জাহাজে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। পূর্ণ ধারণক্ষমতা নিয়ে এগুলোর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
আরডিজি/জেডএম/জেএম

আরও পড়ুন
** কারও সঙ্গে যুদ্ধ নয়, আক্রমণ করলে সমুচিত জবাব

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।