ঢাকা, শনিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘১০ শতাংশ সড়কবাতি অকেজো থাকতে পারে’

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৭
‘১০ শতাংশ সড়কবাতি অকেজো থাকতে পারে’ সড়ক বাতি আছে, কিন্তু জ্বলে না। ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: সড়কবাতির বেহাল দশা হলেও চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন ‘৫-১০ শতাংশ সড়কবাতি অকেজো থাকা’ সহনীয়।

সোমবার (০৮ মে) এক প্রশ্নের উত্তরে চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের সাহায্যে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়াটা চলমান প্রক্রিয়া। এর মধ্যে টিউবলাইট, এনার্জি বাল্বের মতো উপকরণ দিয়ে আউটডোরে সেবা দেওয়াটা চ্যালেঞ্জিংও বটে।

স্বাভাবিকভাবে ৫-১০ শতাংশ সড়কবাতি অকেজো থাকতে পারে। এটা সহনীয়।

চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহফুজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সড়কবাতির মধ্যে ৪১টি ওয়ার্ডে ৩৬ হাজার ৬৭৭টি ৪০ ওয়াটের টিউবলাইট, ১৫০ ওয়াটের প্রায় ৫ হাজার হাইপ্রেসার সোডিয়াম লাইট এবং কাজীর দেউড়ি থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত ১০০ এলইডি লাইট রয়েছে। কিছু প্রতিকূল আবহাওয়া ও শর্টসার্কিটে কিছু বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। ইস্টার্ন টিউব থেকে ৩০ ওয়াটের ১০ হাজার, ৬৫ ওয়াটের ২ হাজার এনার্জি বাল্ব এবং ২৫ হাজার অনুমোদিত টিউবলাইটের মধ্যে প্রথম কিস্তিতে সাড়ে ১২ হাজার দু-এক দিনের মধ্যে এসে পৌঁছাবে। তখন আর সমস্যা থাকবে না।

তিনি বলেন, প্রান্তিক এলাকার কিছু ওয়ার্ড রয়েছে যেখানে আলোকায়ন খুব বেশি হয়নি। বর্তমান মেয়র নতুন নতুন এলাকা আলোকায়নের আওতায় আনছেন। এ ছাড়া ১, ২, ৪, ৫, ৩৭, ৩৮, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডসহ কিছু ওয়ার্ড রয়েছে আয়তনে অনেক বড়। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন ইলেকট্রিশিয়ান ও দুজন হেলপারের সমন্বয়ে একটি করে ওয়ার্কিং টিম আছে সড়কবাতি দেখাশোনার জন্য। তারা ওয়ার্ড কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে। চসিকের সব ওয়ার্ডকে চারটি জোনে ভাগ করে আমরা ১৫ জন সুপারভাইজার রেখেছি, ঘুরে ঘুরে দেখার জন্য। তারপরও কর্মপরিধির তুলনায় জনবল সংকট তো আছেই।

তিনি জানান, সড়কবাতির সুইস অন অফ করার জন্য মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, ক্লাব, ক্ষেত্রবিশেষে দোকানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা মাগরিবের নামাজের আগে সড়কবাতির সুইস অন করেন এবং ফজর নামাজের পর অফ করেন। এর জন্য রমজান মাসে বার্ষিক একটি সম্মানী দেওয়া হয়। গত বছর প্রায় ১ হাজার ৩০০ সুইসম্যানকে ১ হাজার ৮০০ টাকা করে সম্মানী দেওয়া হয়েছে।

এ প্রকৌশলী বলেন, ১৯৮৯ সালে যখন চসিকের চাকরিতে যোগ দিই তখন ১৭-১৮টি ওয়ার্ড ছিল। সর্বসাকুল্যে ৫ হাজার টিউবলাইট ছিল। এখন প্রতিনিয়ত কাজের পরিধি বাড়ছে। নতুন নতুন টেকসই, ব্যয়সাশ্রয়ী প্রযুক্তি আসছে। চসিকও সোডিয়াম লাইট থেকে টিউব, এখন এনার্জি থেকে এলইডিতে সড়কবাতি রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে। শিগগির কাজীর দেউড়ি থেকে নিউমার্কেট, শেখ মুজিব সড়কের টাইগারপাস থেকে বাদামতল, বাদামতল থেকে বারিক বিল্ডিং এবং সাগরিকা থেকে জহুর আহম্মদ চৌধুরী বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম পর্যন্ত এলইডি লাইট স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বান করবে। ২ কোটি ৬৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে এ চারটি সড়কের জন্য।

তিনি জানান, সড়কবাতির প্রতিটি সুইসের সঙ্গে একটি করে মিটার রয়েছে। রিডিং অনুযায়ী বিল পরিশোধ করে চসিক। বর্তমানে মাসে ৬০-৬২ লাখ টাকা সড়কবাতির বৈদ্যুতিক বিল আসছে।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে চসিক আলো খাতে ১০৩ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আগের অর্থবছরে (২০১৫-১৬) সংশোধিত বাজেটে যা ছিল ১৬ কোটি ৮৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা। এর বাইরে বকেয়া আলো কর ৪২ কোটি ২০ লাখ ৩৪ হা্জার টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আগের অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।  

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেটে সড়কবাতির উন্নয়নে সাড়ে ৭ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বিল খাতে সাড়ে আট কোটি টাকা, টিউব, এলইডি লাইট ক্রয়ে সাড়ে তিন কোটি, তার (কেবল) ক্রয়ে আড়াই কোটি, ছক-স্ট্যাটার ক্রয়ে দেড় কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ রেখেছে।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সীমিত সম্পদ ও জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। সড়কবাতির বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। সড়কবাতি ও সরঞ্জামের সংকট দেখা দেওয়ার আগেই যাতে কেনা যায় সে লক্ষ্যে আগেভাগে চাহিদাপত্র দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের।     

নগর ভবনের সামনেই সড়কবাতি নষ্ট

বাতি আছে আলো নেই এমএ মান্নান ফ্লাইওভার এলাকায়

বাংলাদেশ সময়: ০২৪৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।