ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মানবতার বিজয় নিশানই ছিল নবীজীর (সা.) জাদুর কাঠি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪
মানবতার বিজয় নিশানই ছিল নবীজীর (সা.) জাদুর কাঠি ...

চট্টগ্রাম: শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিবেদিত আবৃত্তি অনুষ্ঠানে আলোচকেরা বলেছেন, মানবতার দৃপ্ত বিজয় নিশানই ছিল নবীজীর (সা.) জাদুর কাঠি। নবীজী (সা.) ধূলির ধরণীতে এসেছিলেন প্রেমের সওগাত নিয়ে।

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও শুদ্ধতম মহামানব। শাশ্বত ধ্বনি উচ্চারণের শুভ্রতম ও পরিপূর্ণতম প্রতিকৃতি তিনি।
তাই মহানবী (সা.)-কে শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চার আওতামুক্ত রাখাকে আমরা মানসিক দীনতার পরিচায়ক মনে করি।  

সামাজিক ঐতিহাসিক অর্থে মুসলমান থেকেই আমরা সেকুলর হয়েছি। আল্লাহর সার্বভৌম সত্তাকে আল্লাহ অস্বীকৃত সেকুলার রাষ্ট্রসত্তার কাছে হাস্যকর চিন্তারূপে পর্যবসিত করেছি। নবীর রাজনৈতিক জীবনকে উপাখ্যানরূপে বিবেচনার জাহেলি মনস্তত্ত্বে অভ্যস্ত হয়েছি। রাসূল (সা.) সর্বোত্তম আদর্শ। এই সনদ কোনো হার্ভাড, অক্সফোর্ড বা নোবেল কমিটি দেয়নি। স্বয়ং রাব্বুল আলামিন এই সনদ দিয়েছেন।  

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট (টিআইসি) মিলনায়তনে শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তুমি মহানবী প্রিয়তম সুন্দরতম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।  

আলোচনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সরওয়ার মোরশেদ, বিশিষ্ট লেখক ও চিন্তক চৌধুরী গোলাম রব্বানী এবং কবি ও চিন্তক সৈয়দ আহমদ শামীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবৃত্তি শিল্পের শিক্ষক, শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের আহ্বায়ক মোসতাক খন্দকার। এ আয়োজনে অনুষ্ঠান স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন স্মার্ট গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন মাঈনুল আহসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের সদস্যসচিব আবৃত্তি শিল্পী শরীফ মাহমুদ।  

অধ্যাপক ড. সরওয়ার মোরশেদ বলেন, হিংসা আর হানাহানিতে যখন নীলাকাশ কৃষ্ণায়িত, তখন মহানবী আমাদের পৃথিবীতে এসেছিলেন সোনার ডিমের মতো ফাগুনের চাঁদ হয়ে। মায়াবীপারের এই রাজকুমার দুখিনী পৃথিবীর নিদ্রা ভেঙেছিলেন সিথানের কাঠি পৈথানে আর পৈথানের কাঠি সিথানে অদলবদল করে।  

চৌধুরী গোলাম রব্বানী বলেন, রাসূল (স.) সর্বোত্তম আদর্শ। মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে মানুষের প্রেম, ভাবনা, গবেষণা ও প্রকাশনা অনেক বেড়েছে এবং ক্রমশ বাড়তেই থাকবে। আল্লাহর যা-কিছু সৃষ্টি তার মধ্যে মুহাম্মদ (সা.)-ই সর্বশ্রেষ্ঠ। মহানবী (সা.) বিশ্বজগতের অশেষ কল্যাণের আধার।

সৈয়দ আহমদ শামীম বলেন, হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন জগত ব্যবস্থাপনার মূল কেন্দ্র। তাঁর নবুয়াত প্রাপ্তি ইতিহাসের সাথে অনৈতিহাসের সাঁকো। বুদ্ধিমান মানুষ হিসেবে এই কথার অর্থ আমরা বুঝতে পারি। মানুষ হিসেবে এবং মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য ধারা নাজিলকৃত কোরান আর রাসুলের জীবনব্যাপী কর্ম এবং সংকলিত হাদিসগ্রন্থে সংরক্ষিত আছে। যদি তার যথাযথ অনুসরণের চেষ্টা চলে তাহলে আমরা আশ্বস্ত হতে পারি যে ইতিহাস যাত্রায় মানুষ ঠিক পথে হাঁটছে। মুসলমানের হৃদয়ে খিলাফত কোনো রাষ্ট্র বিকৃতির দূরাভিলাষ নয়। খিলাফত, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ইতিহাস স্নেহবশত জগত ব্যবস্থাপনা যা অন্য যেকোনো ধর্ম, জাতিগোষ্ঠীর বিশ্বাস ও সংস্কৃতি, সম্পদ ও স্বপ্নকে বাস্তবসম্মত ভাবে নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়।

সভাপতির বক্তব্যে মোসতাক খন্দকার বলেন, মহানবী (সা.) এর মুখনিঃসৃত বাণী সর্বকালের সব মানুষের কাছে অবিনশ্বর ও চিরন্তন সৌন্দর্য। তিনি নিজেও বিশ্বাসী কবি এবং সত্য ও সুন্দরের কবিতাকে ভালোবাসতেন। হৃদয়ের শুদ্ধতার জন্য শুদ্ধতম প্রচেষ্টা- এ বিশ্বাসের শৈল্পিক ও প্রায়োগিক চর্চায় নিবেদিত শ্রমনিষ্ঠ সাধনা প্রয়োজন। আর ঐশী বাণীর সাংস্কৃতিক রূপায়ন ও প্রসারে প্রয়োজন একটি প্ল্যাটফরম। তাই আত্মপ্রকাশ ঘটলো বাচনিক শিল্পকলার সম চারিত্রের বহুবিধ সংগঠন ও শিল্পীর অংশগ্রহণযোগ্য প্ল্যাটফরম শাশ্বত ধ্বনি পরিষদ।

আলোচনাপর্ব শেষে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিবেদিত আবৃত্তি অনুষ্ঠানে আবৃত্তি ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন আমন্ত্রিত শিল্পী মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ, সৌভিক চৌধুরী, শরীফ মাহমুদ, মিজানুর রহমান, রাসেল সর্দার, মুবিন তুষার. আদনান করিম, ইব্রাহীম মাহমুদ, মুহতারিমা, মুনয়িম আসরা, রিদওয়ান, হামিদ, রাইয়ান, ইসলামুল হক তুষার এবং শিশুশিল্পী আরশাদ, মেহজাবিন, নাবিলা, সামিহা, আবদুল্লাহ ইকবাল, মুবাশ্শিরা, নওশিন, আসলিরাফ, জারিফ, রেঁনেসা, নুসাইবা, ফাবিহা, মুশফিকা, আফরিন ও মেহেরিমা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।