ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রাতেই কক্সবাজারে আঘাত হানতে পারে ‘মোরা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭
রাতেই কক্সবাজারে আঘাত হানতে পারে ‘মোরা’

কক্সবাজার:  আরো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে মোরা। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে এগিয়ে আসছে কক্সবাজার উপকূলের দিকে। রাতেই এটি কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস।

গত কয়েক ঘণ্টায় এটি আগের অবস্থান থেকে কিছুটা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। প্রবল এই ঝড় জোয়ারের সময়ে উপকূলে আঘাত হানলে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দুপুর ১২টায় ঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিলো। একই সময়ে মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিলো মোরা।

ঘূর্ণিঝড় মোরা’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে সোমবার বিকাল থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো

হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে আগের মতোই ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও এগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ আর চরগুলোতেও ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এছাড়া মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও এগুলোর চরগুলোতেও ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখ‍াতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’-এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা,

পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও এগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ আর চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

 

ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা,

বরিশাল, পিরোজপুর জেলা ও অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার

বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ

আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, প্রত্যেক উপজেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ঝুকিপূর্ণ ইউনিয়নগুলোতে মাইকিং ও সতর্ক বার্তা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সাধারণ মানুষকে দ্রুত আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। জেলা শহরের প্রতিটি উপকূলীয় এলাকায় জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও এনজিও সংস্থার সহযোগিতায় বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে।

এদিকে জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার উপকূল থেকে ৪০০ কিলোমিটার দুরে অবস্থান করছে। যদি ঘূর্ণিঝড়টি জোয়ারের সময় আঘাত হানে তাহলে ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহ হবে। আর যদি ভাটায় আঘাত হানে তাহলে ক্ষতির পরিমাণ কম হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কক্সবাজার উপকূলের দিকে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে।

এদিকে বঙ্গোসাগরে অবস্থারত জেলেদের উপকূলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার বোট মালিক সমিতি সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ।

** লক্ষ্মীপুরে ঘ‍ূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি
** ধেয়ে আসছে মোরা, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে
** বরিশালে অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ
** ‘মোরা’ উপদ্রুত এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ
** ঘূর্ণিঝড় মোরা মোকাবেলায় প্রস্তুত মোংলা বন্দর
** খুলনায় প্রস্তুত ২৫০ সাইক্লোন সেন্টার, চলছে মাইকিং
**  ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’, জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ

বাংলাদেশ সময়ঃ ১৬৩৭ ঘন্টা, মে ২৯, ২০১৭

টিটি/টিসি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।