কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, এবার সাড়ে ৫ হাজার টাকা ফি ধার্য করা হলেও গড়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। এরমধ্যে ২ বছরের বেতন অন্তর্ভূক্ত।
নীতিমালা না মেনে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলেও চট্টগ্রামের কয়েকটি কলেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা পর্যায়ে একটি করে কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। হাটহাজারী কলেজও ওই তালিকায় রয়েছে। কলেজে তিনটি বিভাগে ১ হাজার ৩৭৫টি আসন রয়েছে। এরমধ্যে বিজ্ঞানে ২৫০, মানবিকে ৫২৫ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৬০০ আসন। এ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, সরকারি নীতিমালা না মেনেই সবসময় অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করে আসছে হাটহাজারী কলেজ। রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারেনি, এখনো পারছে না। শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা এসব টাকা কিছু শিক্ষক নিয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট সদস্যদের নিয়ে ভাগবাটোয়ারা করে নেন কলেজের অধ্যক্ষ।
তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে দাবি করে কলেজের অধ্যক্ষ মীর কফিল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ভর্তির পর অন্তত ৪০০ শিক্ষার্থী চলে যায়। এছাড়া আগামী ২ বছরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আর কোন টাকা আদায় করা হবে না।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকায় কলেজের উন্নয়ন, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও শিক্ষকদের বেতন ভাতা দিতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন কলেজের ফান্ডে ৪ কোটি টাকা আছে। আমরা একটি ভবন করতে চাই। কিন্তু মন্ত্রী অনুমোদন দিচ্ছে না।
‘আমরা শিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি বলেছেন ভবন আমরা করে দেব। কলেজ ফান্ডের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে দেন। ’
অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, অন্যান্যবার ৬ হাজার টাকা নিলেও এবার সাড়ে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছি। তবে আদায় করেছি গড়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।
টাকা বেশি দিলেও শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট রয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, কলেজের রেজাল্ট ভাল। শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করেছি পড়ে তোমরা সন্তুষ্ট কিনা। তারা বলেছে সন্তুষ্ট।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী হাটহাজারী কলেজে ১ হাজার টাকার বেশি ভর্তি ফি নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক সুমন বড়ুয়া।
জানতে চাইলে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহেদা ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, যৌক্তিক ফি নির্ধারণ করে নীতিমালা করা দরকার। কারণ এখন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বলছে ১ হাজার টাকায় পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটি ৫ জুলাই চট্টগ্রাম আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, কমিটির সদস্যরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সভা করবেন। সেখানে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। কারা নীতিমালা মানছে না তা জানা দরকার।
নীতিমালা না মেনে ভর্তি করালেও আপনারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যবস্থা নিলে আদালতে চলে যায়। সেখান থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে। এসব কারণে ব্যবস্থা নিলেও সুফল পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৭
এমইউ/টিসি