রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তমব্রু সীমান্ত এবং ঘুমধুম সীমান্তে ঘুরে অসহায় রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক।
তমব্রু সীমান্ত এলাকায় কার্ডিনালকে দেখেই এগিয়ে আসেন ৬৫ বছরের বৃদ্ধা সোনা মেহের।
আট বছরের শিশু নূর মোহাম্মদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার আব্বাকে মিলিটারি মেরে ফেলেছে। আমরা ভালো করে খেতে পারছি না।
মিয়ানমারে চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা, স্বজন হারানোর কথা, অনাহারে-অর্ধাহারে থাকার কথা শুনে এ সময় আবেগাপ্লুতও হয়ে পড়েন কার্ডিনাল।
অসহায় মানুষগুলোর মাথায় হাত বুলিয়ে এ ধর্মগুরু বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তোমাদের পাশে আছেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মানবতাবাদী মানুষ তোমাদের পাশে আছেন। তোমাদের জন্য আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি।
এরপর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্যাট্রিক ডি রোজারিও বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যেটা হচ্ছে সেটা অমানবিক ব্যাপার। তারা এতদিন ধরে সেখানে আছে অথচ নাগরিকত্ব পাচ্ছে না। এটা তো মিয়ানমারের সুনাম নয়। কেন রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব পেল না, এটা বিশ্ববিবেকের কাছে একটা প্রশ্ন।
‘কোনো কারণ দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের বর্তমান যে পরিস্থিতি এটাকে ছোট করা উচিত হবে না। এখন যে জিনিসটা আসছে মানবতা। তবে মানবতা দেখানো হচ্ছে সাময়িক একটা সমাধান। রোহিঙ্গাদের জন্য যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে একটা স্থায়ী সমাধান করা। এটা শুধু বাংলাদেশ এককভাবে করবে তা নয়। সমগ্র বিশ্বকে, বিশ্ববিবেককে আমি সোচ্চার হওয়ার জন্য এবং রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। ’ বলেন প্যাট্রিক ডি রোজারিও।
সীমান্ত এলাকায় রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠন কারিতাসের নির্বাহী পরিচালক ফ্রান্সিস অতুল সরকার এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক জেমস গোমেজ কার্নালের সঙ্গে ছিলেন।
এরপর বিকেলে কার্ডিনাল রোহিঙ্গাদের জন্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন। এ ছাড়া কারিতাসের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের সহায়তার বিষয়েও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭
আরডিজি/টিসি