ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পদদলনে নিহতের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ৫ লাখ টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
পদদলনে নিহতের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ৫ লাখ টাকা ছবি: মো.সরওয়ারুল আলম (সোহেল), বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে পদদলিত হয়ে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে চশমাহিলের বাসায় আসেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে নগদ ৫ লাখ টাকা করে তুলে দেন।

   

বিকেল ৪টায় সদ্য প্রয়াত নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসায় পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমবেদনা জানান।

 

মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী নগর মহিলা লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন তার দুই সন্ত্রানকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়ে বলেন, আপনিই এদের অভিভাবক। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘হ্যাঁ, আমি তাদের অভিভাবক। ’

চশমাহিলের বাসায় প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৩৫ মিনিট অবস্থান করেন।   মহিউদ্দিনের বাসা ত্যাগের আগে প্রধানমন্ত্রী ওই বাসায় অপেক্ষমান নিহতদের স্বজনদের কাছে যান।  প্রধানমন্ত্রীকে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন নিহতদের স্বজনরা।   অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।   প্রধানমন্ত্রী তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেন।

হাসিনা মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- যারা মারা গেছেন তাদের জীবন ফিরিয়ে দেওয়া তো আর আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।   নিহতদের জন্য আমি সামান্য সাহায্য এনেছি।   প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে দিয়েছেন।

পদদলনের শিকার হয়ে নিহত প্রকৌশলী সত্যব্রত ভট্টাচার্যের স্ত্রী প্রিয়াংকা শর্মা প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।   প্রধানমন্ত্রী মহিউদ্দিনের বাসভবন ত্যাগের পরেও কান্না থামছিল না প্রিয়াংকার।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আমার অর্থ সহায়তার দরকার নেই।   আমাকে কলেজে একটি চাকরি দিলে খুবই ভালো হবে।   আমার দুই ছেলেকে মানুষ করার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চাকরি চেয়েছি।

চট্টগ্রাম কলেজ থেকে প্রাণীবিজ্ঞানে মাস্টার্স করা প্রিয়াংকা বাংলানিউজকে বলেন, আমি খুব অসহায়।   এমন কেউ নেই যে আমাকে দেখবে।   আমার বাচ্চাগুলোকে মানুষ করার জন্য একটা চাকরি আমার খুবই প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা নগর আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক জহরলাল হাজারী বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রিয়াংকাকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন।   এসময় তিনি প্রিয়াংকার বায়োডাটা জমা নেওয়ার জন্য নওফেল ভাইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর জীবনাবসান ঘটে।  ১৮ ডিসেম্বর মহিউদ্দিনের কুলখানিতে তার পরিবার নগরীর বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারে মেজবানের আয়োজন করে।  কুলখানিতে নগরীর এস এস খালেদ সড়কে রীমা কমিউনিটি সেন্টারে পদদলিত হয়ে দশজনের মৃত্যু হয়।  আহত হন ২৫জন।  

মহিউদ্দিনের বাসায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য গৃহায়ন ও গণপূর্মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন ছিলেন।

মহিউদ্দিনের বাসা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গাড়িবহর সরাসরি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।   বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭ 

এমএম/আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।