মনুর তথ্যের ভিত্তিতে মো.মিরাজ (২৭) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে আকবর শাহ থানা পুলিশ। ধর্ষণে জড়িত আটজনের বিষয়ে তথ্য দিয়ে মিরাজ আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
জানতে চাইলে আকবর শাহ থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, যে বাসায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, ভাড়া সূত্রে সেই বাসার মালিক মিরাজ। জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে তিনদিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মনুকে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওসি আলমগীর মাহমুদ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আকবর শাহ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) উৎপল কান্তি বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমে আমরা যে ছয়জনকে আটক করেছি তাদের মধ্যে পাঁচজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে তাদের কেউই মিরাজের কথা উল্লেখ করেননি। মনুকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা মিরাজের তথ্য পেয়ে কৌশলে তাকে থানা এলাকায় এনে আটক করেছি।
গত ২১ জানুয়ারি রাতে নগরীর আকবর শাহ থানার বিশ্বকলোনির আই ব্লকের আয়শা মমতাজ মহলের সিঁড়িতে মিমের মরদেহ পাওয়া যায়। প্রথমেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ভবনের কেয়ারটেকার মনিরুল ইসলাম মনুকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা হল, বেলাল হোসেন বিজয় (১৮), রবিউল ইসলাম রুবেল (১৬), হাছিবুল ইসলাম লিটন (২৬), আকসান মিয়া (১৮), মো.সুজন (২০) এবং মনিরুল ইসলাম মনু (৪৯)। পাঁচজনই আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পুলিশ পরিদর্শক উৎপল কান্তি বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, মনুসহ আটক ছয়জন জানিয়েছিলেন-মিরাজের বাসায় কেউ ছিলেন না। সবাই গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বিকল্প চাবি মনুর কাছে ছিল। সেই সুযোগে মনু মিমকে ওই বাসায় নিয়ে যায়। জবানবন্দিতে এসেছিল সাতজন মিলে মিমকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা। কিন্তু মিরাজের জবানবন্দিতে আটজনের কথা এসেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে মিরাজ জানিয়েছেন-ঘটনার দিন স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে রেখে ফেরার পথে মোবাইলে মনুর সঙ্গে তার কথা হয়। এসময় মনু তার খালি বাসায় মিমকে নিয়ে যাবার প্রস্তাব দিলে মিরাজ রাজি হন।
ওইদিন বিকেলে মনু মিমকে নিয়ে ওই বাসায় যায়। সেখানে আগে থেকেই মিরাজ তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। বাসায় প্রথমে মনু, এরপর বিজয় তাকে ধর্ষণ করে। পরে লিটন, হাসান, রুবেল, সৈকত, মিরাজ ও সুজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর মনু ও বিজয় মিলে মেয়েটির গলা টিপে ধরে। এতে শ্বাসরোধ হয়ে মিম মারা যায়। তারপর লোডশেডিংয়ের সুযোগে মিমের মরদেহ বাসার বাইরে সিঁড়িতে ফেলে রাখা হয়। এরপর মিরাজ পালিয়ে যান বলে জবানবন্দিতে এসেছে।
মিরাজ পেশায় বাসচালক বলে জানিয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক উৎপল। এছাড়া ঘটনায় জড়িত সৈকত এখনও পলাতক আছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
আরডিজি/টিসি