শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিডিএ চেয়ারম্যানের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, সিডিএকে কাজের গতি বাড়াতে হবে।
চট্টগ্রামকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন। রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ আসে। কিছু ক্ষেত্রে রাজধানীর চেয়েও বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে চট্টগ্রাম।
সব প্রতিষ্ঠানকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে
শ ম রেজাউল করিম বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব কাজের পরিসর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় কি করবে, সিডিএ কি করবে, সিটি করপোরেশন কি করবে-এসব নির্ধারিত। সুতরাং গণ্ডির ভেতর থেকে কাজ করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, সকল প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। প্রতিষ্ঠান আলাদা হলেও সবার উদ্দেশ্য একই। সবাই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাই উন্নয়ন কাজ নিয়ে কোনো অজুহাত দেখানো যাবে না। সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজের সমন্বয় করতে হবে।
উন্নয়ন কাজে সকলের সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশে উন্নয়নের যে ধারা সূচিত হয়েছে, সেটি চলমান রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিরাম পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি প্রত্যাশা করেন, যারা উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত আছেন, তারাও স্বচ্ছতা এবং সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে টাকা কোনো সমস্যা না। তিনি চান এমন প্রকল্প, যা মানুষের উপকারে আসবে, এলাকার উন্নয়ন হবে। তাহলে তিনি সেসব প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছেন। ’
মন্ত্রী বলেন, জীবন খুব দীর্ঘস্থায়ী না। আজকে যে পদে আছেন, কালকে সে পদে আপনি নাও থাকতে পারেন। কিন্তু আপনার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যদি ঠিকভাবে পালন করেন, তবে মানুষ মনে রাখবে।
কোনো অজুহাত শুনতে চাই না
সিডিএ’র উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, যেসব প্রকল্প চলমান, সেগুলো শেষ হলে চট্টগ্রাম শুধু দেশের মানুষকে না, বিদেশিদেরও আকৃষ্ট করবে।
মন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের কাজে নিয়োজিতদের কাছ থেকে কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। আমরা চট্টগ্রামকে দেখতে চাই, যানজট-জলাবদ্ধতামুক্ত আধুনিক পর্যটন নগরী হিসেবে, যেখানে মানুষ টাকা খরচ করে বেড়াতে আসবেন।
‘চলমান প্রকল্পগুলোতে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সিডিএ সেগুলো জানিয়েছে। আমি নিজেও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করে প্রতিবন্ধকতা দেখেছি। তবে দ্রুত কাজ শেষ করতে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকেও সিডিএ নিয়মিত তাগাদা দিচ্ছে। ’
জনগণকে সচেতন হতে হবে
জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র যেভাবে চট্টগ্রামের প্রতি সুদৃষ্টি রেখেছেন, এখানকার মানুষের উচিৎ, সেটির প্রতিদান দেওয়া।
‘মনে করেন আপনার বাড়ির পাশে একটি খাল পরিষ্কার করা হলো। এরপর আপনার একজন প্রতিবেশি সেই খালে পুনরায় বর্জ্য ফেললো। প্রতি মুহুর্তে তো কর্তৃপক্ষের পাহারা দেওয়া সম্ভব না। এক্ষেত্রে নিজেদেরকে সচেতন হতে হবে। নয়তো উন্নয়নের সুফল জনগণ ভোগ করতে পারবেন না। ’
প্রধানমন্ত্রী হতাশ হলে উন্নয়ন গতি হারাবে
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীঘ্রই কর্ণফুলী টানেলসহ একাধিক প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করতে চট্টগ্রামে আসবেন। এসে যদি দেখেন, এত বরাদ্দ দিয়েও চট্টগ্রামে কোনো কাজ হচ্ছে না তখন তাঁর মন খারাপ হবে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সদিচ্ছা ও আন্তরকিতা নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর উন্নয়নে পাশে থেকেছেন, আপনাদের সেটি ধরে রাখতে হবে। যদি তিনি হতাশ হন, তাহলে চট্টগ্রামবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কিন্তু এটা করা যাবে না। এজন্য উন্নয়ন কাজে নিয়োজিতদের আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। ’
চট্টগ্রামবাসীর প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, এ জনপদের মানুষ অত্যন্ত পরিশ্রমী। ধর্মীয় ঐতিহ্যগত কারণে তারা অনেক সৎ ও স্বচ্ছ। চট্টগ্রামে অনেক বীর জন্মগ্রহণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রাম থেকে সম্প্রচার করা হয়েছে। তাই এ জনপদের গুরুত্ব অনেক বেশি।
‘চট্টগ্রামের উন্নয়নে কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। প্রতিবন্ধকতাগুলো আমরা বের করবো। নিরসনে দরকার হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। তবুও উন্নয়ন বন্ধ থাকবে না। ’
সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, সিডিএ বোর্ড সদস্য জসিম উদ্দিন শাহ, হাসান মুরাদ বিপ্লব, গিয়াস উদ্দিন, এম আর আজিম, কেবিএম শাহজাহান, আশিক ইমরানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
এসইউ/এসি/টিসি