ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবির প্রশ্নপত্রে চট্টগ্রামসহ ১০ বানান ভুল

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
চবির প্রশ্নপত্রে চট্টগ্রামসহ ১০ বানান ভুল চবির সেই প্রশ্নপত্র

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষ বিএসএস (সম্মান) পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে স্বয়ং চট্টগ্রাম বানানসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি বানান ভুল করেছে বিভাগটি।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিভাগটির ৪র্থ বর্ষের ৪০৫ নম্বর কোর্সের পরীক্ষায় এসব বানানের ভুল ধরা পড়ে।

শুধু বানান ভুল নয়, ডিজিটাল এ যুগে হাতের লেখার প্রশ্নপত্র তৈরি করে বিভাগটিতে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে প্রশ্নপত্রে যেসব বানান ভুল পাওয়া যায় তা হল-ওই প্রশ্নপত্রের শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বানানে চট্টগ্রামের বানান ভুল লেখা হয়েছে। যেখানে শুদ্ধ বানান হবে ট+ট= ট্ট, সেখানে লেখা হয়েছে ট+র ফলা= ট্র।

তিন নম্বর প্রশ্নে লেখা হয়েছে ‘ব্যক্তিত্ব ও হতাশার মধ্যেকার সম্পর্ক বিশ্লেষন কর’। এখানে ‘বিশ্লেষন’ ‘ন’ দিয়ে লেখা হয়েছে, হবে ‘ণ’। শুদ্ধ বানান হবে বিশ্লেষণ। চার নম্বর প্রশ্নে লেখা হয়েছে ‘নবাব স্যার সলিমুল্লাহর ব্যক্তিত্ব গঠনে তার সমসাময়িক আর্থ সামাজিক ও ধর্মীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি কি ভূমিকা পালন করেছিল?’ এখানে ব্যবহার করা হয়েছে ‘কি’, হবে ‘কী’।

কারণ যেসব প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিয়ে অথবা মাথা নেড়ে দেওয়া যায় সেসব প্রশ্নে `কি’ ব্যবহার হয়। আর যেসব প্রশ্নের উত্তর শুধু ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিয়ে দেওয়া যায় না, অর্থাৎ মুখ দিয়ে শব্দ বের করতে হয় বা অনেকটা বিবরণ দিতে হয় সেসব প্রশ্নে ‘কী’ ব্যবহার হয়।

পাঁচ নম্বর প্রশ্নে ‘রাজা রামমোহন রায়ের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ চিহিৃত কর। এই বৈশিষ্ট্যসমূহ কিভাবে সংষ্কারক হিসেবে তাঁর ভূমিকাকে প্রভাবিত করেছিল? আলোচনা কর। ' এখানে ‘সংষ্কারক’-এ ‘ষ’ ব্যবহার করা হয়েছে। শুদ্ধ বানান হবে ‘স’ দিয়ে অর্থাৎ ‘সংস্কারক’ হবে।

ছয় নম্বর প্রশ্নে ‘উপমহাদেশের কমিউনিস্ঠ আন্দোলনে কমরেড মুজফ্ফর আহমদ এর ভূমিকা্ আলোচনা কর। ’ এখানে ‘কমিউনিস্ঠ’-এ ‘ঠ’ ব্যবহার করা হয়েছে। শুদ্ধ বানান হবে ‘ট’ দিয়ে অর্থাৎ ‘কমিউনিস্ট’।

এছাড়া সাত নম্বর প্রশ্নে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ‘হোসেন’ বানানটি বাংলায় শুদ্ধ থাকলেও ইংরেজিতে লেখা হয়েছে ‘Hossain’। হবে ‘Huseyn’।

এমনকি আট নম্বর প্রশ্নে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বানানও ভুল লেখা হয়েছে। প্রশ্নে লেখা আছে ‘মুজিবর’ হবে ‘মুজিবুর’। যেটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিজস্ব ওয়েব পেইজ ও উইকিপিডিয়ায় ‘মুজিবুর’ শব্দটি লেখা আছে। এছাড়া ইংরেজিতে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটির বানানও ভুল লেখা হয়েছে। প্রশ্নে লেখা আছে ‘Bangbandhu’, হবে ‘Bangabandhu (Bôngobondhu ‘Friend of Bengal’)।

নয় নম্বর প্রশ্নে ‘কর্মকান্ড’ লেখা আছে, হবে ‘কর্মকাণ্ড’। প্রমিত বাংলা বানান অনুসারে ণ+ড হবে। এছাড়া টীকা প্রশ্নে বাংলায় মাওলানা ভাসানী বানান ঠিক থাকলেও ইংরেজিতে ভুল লেখা হয়েছে। ইংরেজিতে লেখা হয়েছে ‘Moulana’। শুদ্ধ বানান হবে ‘Mawlana’ বা ‘Maulana’।

জানতে চাইলে পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ভূঁইয়া মো. মনোয়ার কবির এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। পরে পরীক্ষা কমিটির সদস্য সহযোগী অধ্যাপক আককাছ আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ‍উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বানান ভুলের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯

জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।