শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে জিইসি ওয়েল পার্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
আবদুচ ছালাম বলেন, ১০ বছর দায়িত্ব পালনকালে জনগণের সুবিধা বিবেচনা করে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর নগরবাসীর আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে যানজট নিরসনে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করি। ১০ বছরে প্রায় ৪০ কিলোমিটার নতুন রাস্তা তৈরির পাশাপাশি ১০০ কিলোমিটার পুরনো রাস্তা সংস্কার করেছি। এ সময় ৬০-৭০ বছরের পুরনো রাস্তাও সংস্কার হয়েছে। পাশাপাশি একাধিক ফ্লাইওভার তৈরি করা হয়েছে। যার সুফলে চট্টগ্রাম এখন যানজটমুক্ত।
‘বায়েজিদ থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণ শেষ হলে শহরে গাড়ীর চাপ ৫০ শতাংশ কমে যাবে। উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের গাড়ী শহরে না ঢুকে ওই সড়ক ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারবে। এ ছাড়া কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত ব্রিজ ও পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত রিং রোডের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামের চেহারা পাল্টে যাবে। ’
আবদুচ ছালাম বলেন, জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে সময় প্রয়োজন। বর্তমানে জলাবদ্ধতা নিরসনে চারটি সংস্থা কাজ করছে। সিডিএ জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পসহ দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হতে ৩ থেকে ৪ বছর লাগবে।
‘শুধু প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে হবে না। মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন না হলে যতই উন্নয়ন হোক ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে না। এজন্য মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন দরকার। ’
লক্ষ্য-২০৪১ অর্জনে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন উল্লেখ করে আবদুচ ছালাম বলেন, আগে তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে ৪০ শতাংশ যোগান দিতো চট্টগ্রাম। সেটি এখন ১০ শতাংশের কম। এখন সক্রিয় গার্মেন্টস রয়েছে ৩০টি। বিমান বন্দর থেকে চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করতে সময় লাগার কথা ৩০ মিনিট। এখন লাগছে দুই থেকে তিন ঘণ্টা। মূলত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পোশাক রপ্তানি খাতের এমন অবনতি।
‘তবে বিমান বন্দর থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছে সিডিএ। এটির কাজ শেষ হলে শহরে আর যানজটের চিহ্ন থাকবে না। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি বাড়বে। ’
আবদুচ ছালাম বলেন, পাহাড় ও সাগরবেষ্টিত চট্টগ্রামকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সিডিএ উদ্যোগ নিয়েছে। মাত্র ১০ শতাংশ কাজ শেষে চট্টগ্রামবাসী পতেঙ্গা সৈকত দেখে অবাক হচ্ছে। কিন্তু পুরোপুরি কাজ হলে সত্যিকারের পর্যটন নগর হিসেবে চট্টগ্রাম সারাবিশ্বে পরিচিতি লাভ করবে।
প্রশ্নের জবাবে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, কেউই নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে না। তবে আমার কাছে ব্যর্থতা বলে কোনো শব্দ নেই। কিছু ভুল ত্রুটি রয়েছে। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রামবাসীর জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি।
নিজেকে সৌভাগ্যবান উল্লেখ করে বিদায়ী চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে যখন যে প্রকল্প চেয়েছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটি অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি এ জনপদের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সিডিএর বোর্ড সদস্য মো. জসীম উদ্দীন শাহ, কেবিএম শাজাহান, মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, হাসান মুরাদ বিপ্লব, স্থপতি আশিক ইমরান, এম আর আজিম, রুমানা নাসরীন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৯
এসইউ/এসি/টিসি