ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিলুপ্তপ্রায় বৃক্ষপ্রজাতির সংরক্ষণাগার বিএফআরআই

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৯
বিলুপ্তপ্রায় বৃক্ষপ্রজাতির সংরক্ষণাগার বিএফআরআই বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: নগরের ষোলশহরে ২৮ হেক্টর জমির ওপর অবস্থিত বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)। ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ ইনস্টিটিউটের আরবোরেটামে (উদ্ভিদ সংরক্ষণ এলাকা) ৬০টি দেশি, ২০টি বিদেশি বৃক্ষ প্রজাতি এবং ২০টি বেত প্রজাতি সংরক্ষণ করা হয়েছে। ব্যাম্বুসেটামে (বাঁশ বাগান) সংরক্ষণ করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত ৩৩ প্রজাতির বাঁশ।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলায় ‘চট্টগ্রাম এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবার (১০ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. খুরশীদ আকতার।

প্রশাসনিক ভবনের পাশে রোপণ করা হয় নিম গাছের চারা। এরপর গত ২৫ দিনের টানা কর্মযজ্ঞে রোপণ করা হয়েছে ২০ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা।

বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট।  ছবি: সোহেল সরওয়ারবাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম এর পাবলিসিটি অফিসার এয়াকুব আলী বাংলানিউজকে বলেন, ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস জুড়ে ‘শিক্ষায় বন প্রতিবেশ, আধুনিক বাংলাদেশ’ স্লোগানে বিভিন্ন বৃক্ষ প্রজাতির ৩১ হাজার ৫শ’টি চারা রোপণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। এরই মধ্যে ২০ হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলা পরবর্তী রোপণ করা হবে আরও ১১ হাজার ৫শ’টি চারা রোপণ করা হবে।

বিএফআরআই সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্টের অর্থায়নে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে ক্যাম্পাস এলাকার পূর্ব পাহাড়, পশ্চিম পাহাড়, অতিথি ভবন, প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন ফাঁকা স্থানে বনায়ন করা হয়েছে।

চারা রোপণ করেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. খুরশীদ আকতার। পাহাড়ের উপরিভাগে গুটগুটিয়া, তেলসুর, ধারমারা, নারিকেল, বহেরা এবং মধ্যভাগে সুন্দরী, সিভিট, জারুল, ঢাকিজাম, কাইনজল ভাদি, বট, বকুল, বৈলাম, কন্যারি, রক্তন, বাঁশ, বেত, হলুদ, লটকন, তমাল, বাটনা, সিধা জারুল, ব্রুম গ্রাস রোপণ করা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ের ঢালুতে কদম, ডুমুর, হিজল, চালতা, করচ, তাল, বাঁশ, বেত, ফুল ঝাড়ু (ব্রুম গ্রাস) রোপণ করা হয়।

পাহাড়ের রাস্তার দুই পাশজুড়ে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, নাগেশ্বর, ফেল্টো ফোরাম, সোনালু, খেজুর এবং আবাসিক এলাকায় রোপণ করা হয়েছে নিম, পুটিজাম, লটকন, বাঁশ, কদম, বহেরা, হরিতকি ও তাল গাছের চারা।

বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট। বিএফআরআই এর পরিচালক ড. খুরশীদ আকতার জানান, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকা বিভিন্ন বিলুপ্তপ্রায় বৃক্ষপ্রজাতির এক সমৃদ্ধ সংরক্ষণাগার। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রার ১৫ নম্বর লক্ষ্যে টেকসই বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভূমির অবক্ষয় রোধ এবং জীববৈচিত্র হ্রাস প্রতিরোধের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে, যেখানে অনেকগুলো সূচক রয়েছে। যা বৃক্ষরোপণ এবং বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব হবে।

প্রকল্প পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পাহাড়ের ঢালুতে ভূমিক্ষয় রোধ করতে ফুল ঝাড়ু (ব্রুম গ্রাস), বাঁশ, বেত রোপণ করা হচ্ছে। এ প্রজাতির বৃক্ষ পাহাড়ের মাটি শক্তভাবে ধরে রাখে। এছাড়া বিলুপ্তপ্রায় বৃক্ষ প্রজাতি যেমন: বৈলাম, গুটগুটিয়া, বান্দরহোলা, রক্তন, কন্যারি ইত্যাদি রোপণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ঔষধি উদ্ভিদ হরিতকি, বহেরা, সিভিট রোপণ করা হচ্ছে। এসব বৃক্ষ প্রজাতি বন্যপ্রাণী এবং পাখিসহ জীববৈচিত্র সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।