ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাঁশির সুরে ঘুরছে জীবনের চাকা

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯
বাঁশির সুরে ঘুরছে জীবনের চাকা বাঁশিতে দেড়শ গানের সুর তুলতে পারেন ইব্রাহিম। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ব্যস্ত শহর। চলছে গাড়ির চাকা এদিক-সেদিক। বিকেলের দক্ষিণের বাতাসের সঙ্গে বাঁশির সুরে ভেসে আসছিল ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই...’। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন কিংবা নানান সময়ে অলিগলি–রাজপথে গানটি বেজে ওঠে। কিন্তু বাঁশির সুরে গানটি শুনতে ভিড় ব্যস্ততম সড়কের এক পাশ।

ষাটোর্ধ্ব বয়সী মো. নজু মিয়া এমন মধুর সুরে সুর তুলতে দেখে বসেই পড়লেন। গানের সুরটি মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন তিনি।

গানটি শেষ হওয়ার পর কলেজ ছাত্র এনামুল হক হাসির ছলে আবদার করে বললেন ‘চুমকি চলেছে একা পথে’ গানটির সুর তোলার। ওই গানটিও সুর তোলে শুনালেন তিনি।

কারণ ২০ বছর ধরে এই বাঁশি বাজিয়ে যে সংসারের চাকা ঘুরছে তার। এখন বেশ পাকাপোক্ত। তাই যে কোনো গানের সুর তুলতে পারেন অনায়াসে। তিনি মো. ইব্রাহিম। নগরের চকবাজারের কেয়ারি ইলিশিয়ামের সামনে দেখা পাওয়া ইব্রাহিমের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটাহাজারীর জোবরা গ্রামে। শখের বসে শিখছিলেন বাঁশি বাজানো। আর বর্তমানে বাঁশির সুরেই তার জীবন চলে।

সুমধুর বাঁশির সুর শুনিয়ে পথচারীদের তিনি মুগ্ধ করেন। তার বাঁশির সুরে বিমুগ্ধ হয়ে শ্রোতারা ১০ থেকে ২০ টাকা করে যা দেন তা দিয়েই সংসার চলে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি হাঁট-বাজার ও পথে-ঘাটে ঘুরে বেড়ান। আর যেখানেই লোকসমাগম দেখেন সেখানেই তিনি বাঁজাতে থাকেন বাঁশের বাঁশরি।

দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গানসহ সব ধরনের গানের সুর তুলতে পারেন ইব্রাহিম। প্রায় দেড়শ গানের সুর বাঁশিতে তুলতে পারেন অনায়াসে। তার সুরের জাদুতে মুগ্ধ হন পথে-প্রান্তরের নানা বয়সের মানুষ।

আলাপচারিতার একপর্যায়ে তার সম্পর্কে জানতে চাইলে ইব্রাহিম বাংলানিউজকে বলেন, বয়স তখন সাত কি আট। জোবরা গ্রামে বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, সেখানে তাল পাতার বাঁশি তৈরি করে দুষ্টুমি করে সুর তোলার চেষ্টা করতাম। একদিন শখের বশে বাঁশের কঞ্চি কেটে নিজেই বানাই বাঁশি। সেই শুরু। ২০ বছর ধরে যা এখনও চলছে।

বাঁশিতে দেড়শ গানের সুর তুলতে পারেন ইব্রাহিম।  ছবি: বাংলানিউজ

তিনি বলেন, পরিবারে বাবা-মা ও স্ত্রী আছেন। এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে। ইচ্ছা আছে অনেক বড় হওয়ার।

পথচারী নজু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, কেয়ারি ইলিশিয়ামে কাজ করি। সোমবার বিকেলে ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই..’ গানটির সুর শুনে তার কাছে চলে আসি। মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। অনেক ভালো সুর তুলতে পারেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯

জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।