ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

অনলাইন ব্যাংকিংয়ের আওতায় চসিক রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
অনলাইন ব্যাংকিংয়ের আওতায় চসিক রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রম ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: হোল্ডিং ট্যাক্স, কনজারভেন্সি ও লাইটিং ট্যাক্সসহ রাজস্ব বিভাগের যাবতীয় কার্যক্রমকে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিয়ে এসেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।

এর অংশ হিসেবে আটটি ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। প্রথম ধাপে চারটি, দ্বিতীয় ধাপে তিনটি এবং তৃতীয় ধাপে একটি ব্যাংকের সঙ্গে সম্প্রতি সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এর ফলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পৌরকর সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি নিয়মিত হালনাগাদকরণ, হোল্ডিং মালিকদের কর প্রদান সহজ করা ও সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। সফটওয়্যারের মাধ্যমে রাজস্ব বিভাগ ও এস্টেট শাখার আওতাধীন হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ফি, মার্কেটের দোকান ভাড়া, উন্নয়ন চার্জ, ইজারাকৃত সম্পত্তির যাবতীয় কর ও ভাড়া ইত্যাদি অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আদায় করার এ উদ্যোগ নেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

সমঝোতা চুক্তি হওয়া ব্যাংকগুলো হচ্ছে: ব্র্যাক ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংক।

সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হওয়ায় চসিকের পরিষেবা আরও গতিশীল হবে। নগরবাসী ঘরে বসেই চসিকের সব তথ্য-উপাত্ত পেয়ে যাবেন। পাশাপাশি রাজস্ব বিভাগে স্বচ্ছতা আসবে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

চসিক রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে বিগত বছরগুলোর তুলনায়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বমোট আদায় হয়েছে ২৬০ কোটি ৬৮ লক্ষ ৮১ হাজার ৫২১ টাকা ৭৬ পয়সা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় হয়েছিল ২৪৪ কোটি ৪৭ লক্ষ ৪০ হাজার ৫৬৯ টাকা ২৯ পয়সা। অর্থাৎ, গত অর্থবছরে ১৬ কোটি ২১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬২৬ টাকা ৪৭ পয়সা বেশি আদায় হয়েছে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে পৌরকর বাবদ আদায় হয়েছে ১৩৩ কোটি ৫৯ লক্ষ ৬২ হাজার ২২২ টাকা ১৮ পয়সা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় হয় ১১৮ কোটি ৮৬ লক্ষ ৩ হাজার ৩১৬ টাকা ৬৩ পয়সা। গত অর্থবছরে এ খাতে ১৪ কোটি ৭৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫৫৯ টাকা ৫৫ পয়সা বেশি আদায় হয়েছে।

ট্রেড লাইসেন্স খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় হয়েছে ২১ কোটি ৯৫ লক্ষ ২০ হাজার ৮৬৯ টাকা। পক্ষান্তরে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় হয় ২১ কোটি ২৩ লক্ষ ৮০ হাজার ৬০৮ টাকা। অর্থাৎ, গত অর্থবছরে এ খাতে ৭১ লক্ষ ৪০ হাজার ২৬১ টাকা বেশি এবং ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ৯৯০টি বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে ভূমি হস্তান্তর খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় হয় ৬০ কোটি ৭৪ লক্ষ ৩২ হাজার ১৪৩ টাকা ৬৯ পয়সা। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় হয়েছিল ৫৫ কোটি ৫০ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৮২ টাকা ৮৭ পয়সা।  গত অর্থবছরে এ খাতে ৫ কোটি ২৩ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩৬০ টাকা ৮২ পয়সা কম আদায় হয়েছে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে সাইনবোর্ড খাতে আদায় হয় ৫ কোটি ৫ লক্ষ ৪৩ হাজার ২৮৩ টাকা।  ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় ৫ কোটি ২৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৫১৭ টাকা। অর্থাৎ, গত অর্থবছরে এ খাতে  ১৯ লক্ষ ৯৬ হাজার ৬২৭ টাকা কম আদায় হয়েছে।

চলচ্চিত্র ও বিনোদন কর (প্রমোদ কর) খাতে  ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় হয় ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকা। পক্ষান্তরে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় হয় ৮৪ হাজার ৯৮৫ টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে ৩৭ হাজার ১৫ টাকা বেশি আদায় হয়েছে।

যানবাহন (যান্ত্রিক) খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় হয় ৮২ লক্ষ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় হয়েছিল ১ কোটি ৫৫ লক্ষ ৮০ হাজার ৮০০ টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে ৭৩ লক্ষ ৬১ হাজার ৩০০ টাকা কম আদায় হয়েছে।

যানবাহন (অযান্ত্রিক-রিকশা ভ্যান/ঠেলাগাড়ি) খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় হয় ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৯০০ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় হয় ১ লক্ষ ৭ হাজার ৬৭৫ টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে ১৬ হাজার ২২৫ টাকা বেশি আদায় হয়েছে।

পৌরকর সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। রিকশা লাইসেন্স ফি খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় হয় ৯২ লক্ষ ৬৭ হাজার ১০০ টাকা। বিবিধ খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় হয় ২০ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৬৪ টাকা ৫০ পয়সা। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায় হয় ২৫ লক্ষ ৬২ হাজার ৩৮৫ টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে ৫ লক্ষ ১৮ হাজার ১২০ টাকা ৫০ পয়সা কম আদায় হয়েছে।

এছাড়া এস্টেট খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় করা হয় ৪২ কোটি ৫৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬০০ টাকা ২১ পয়সা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এস্টেট খাতে আদায় হয়েছিল ৩৬ কোটি ৫৫ লক্ষ ৬ হাজার ১৩৮ টাকা ৯৭ পয়সা। গত অর্থবছরে এ খাতে ৬ কোটি ৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ৪৬১ টাকা ২৪ পয়সা বেশি আদায় হয়েছে।

চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম জানান, বিগত অর্থবছরের চাইতে এবার চসিকের রাজস্ব আদায় বেড়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে রাজস্ব শাখাভুক্ত হোল্ডিং ট্যাক্স, এস্টেট ম্যানেজমেন্ট, অনলাইন ফাইলিং এবং ট্রেড লাইসেন্সকে ডিজিটালাইজেশন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নগরবাসী তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ফি, মার্কেটের দোকান ভাড়া, উন্নয়ন চার্জ এবং ইজারাকৃত সম্পত্তির যাবতীয় ট্যাক্স ও ফি অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রদান করতে পারবেন।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আমি যখন করপোরেশনের দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন চসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ছিল ৯ কোটি টাকা। যা  এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি টাকায়। এ খরচ যোগাতে করপোরেশনকে পৌরকর আদায়ে জোর দিতে হচ্ছে। করপোরেশনের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতাসহ বিবিধ সেবা সচল রাখতে হলে নগরবাসীকে নিয়মিত ট্যাক্স দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।