ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কর্ণফুলীর পাড়ে অলস বসে আছে মাছ ধরার ট্রলার

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৯
কর্ণফুলীর পাড়ে অলস বসে আছে মাছ ধরার ট্রলার কর্ণফুলীর পাড়ে অলস বসে আছে মাছ ধরার ট্রলার। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম:  আশ্বিনের পূর্ণিমার চারদিন আগে এবং পূর্ণিমার পর ১৮ দিন দেশের উপকূলীয় অঞ্চল, নদীর মোহনায় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণার পর ফিশারীঘাট সংলগ্ন বাজারে নৌকা ও ট্রলারের জ্বালানি তেলের অধিকাংশ দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। মাছের আড়তগুলোকেও ইলিশ সংগ্রহ না করতে অবহিত করা হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বুধবার (৯ অক্টোবর) থেকে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময়ে ইলিশের আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে।

এ আইন অমান্য করলে জেল অথবা জরিমানা এমনকি উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণার পর জাল বুনে সময় কাটাচ্ছে জেলেরা।                                             <div class=

ছবি: উজ্জ্বল ধর" src="https://www.banglanews24.com/media/imgAll/2019May/bg/Bg-320191009113250.jpg" style="margin:1px; width:100%" /> ৮০ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়ে এই সময়েই। একটি বড় ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়তে পারে। যেসব জেলার জেলেরা মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল, তাদের খাদ্য সহযোগিতা দেওয়া হবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকাকালীন সময়ে।

জেলা সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজিম উদ্দিন বলেন, সরকারঘোষিত ২২ দিনের এই অভয়াশ্রম কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স তৎপর রয়েছে। ইলিশ মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘণ্টা কোস্ট গার্ড ও নৌ-পুলিশ টিমের অভিযান চলবে।

ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণার পর অলস সময় কাটাচ্ছে জেলেরা।  ছবি: উজ্জ্বল ধরমৎস্য বিভাগের গবেষণা অনুযায়ী, ইলিশের মূল উৎপাদন কেন্দ্র ছয়টি অভয়াশ্রমের দুটি হচ্ছে- উত্তরপূর্বে মিরসরাই উপজেলার শাহেরখালী থেকে হাইতকান্দী, দক্ষিণপূর্বে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর কুতুবদিয়া-গণ্ডামারা পয়েন্ট।

ফিশারীঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ইলিশের মৌসুমে এবার সাগরে ইলিশ ধরা পড়েছে বেশি। পুরো ভাদ্র মাস জুড়েই ইলিশ এসেছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে এখন সাগরমুখী ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই মাছ আহরণ, পরিবহন সহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণার পর অলস সময় কাটাচ্ছে জেলেরা।  ছবি: উজ্জ্বল ধরফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি নূর হোসেন বলেন, উত্তাল সমুদ্র দাপিয়ে বেড়ানো মাছ ধরার ট্রলারগুলো এখন অলস বসে আছে কর্ণফুলীর দু’পাড়ে। পুরনো যন্ত্রাংশ সংস্কার, জাল মেরামতের পাশাপাশি নদীর তীরে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে জেলেরা।

পাথরঘাটার জেলে সুমন জলদাস অভিযোগ করে বলেন, এর আগে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকার সময়টাতে চট্টগ্রামের প্রায় ৪ হাজার জেলে পরিবার কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা পায়নি। মৎস্য অধিদপ্তরের করা তালিকা থেকে তারা বাদ পড়ে যায়। আবার এসময়ে বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও মিয়ানমার ও ভারতের জেলেরা ঠিকই মাছ ধরছে।

জাল বুনে সময় কাটছে জেলেদের।  ছবি: উজ্জ্বল ধরজানা গেছে, এর আগে ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকার সময়ে সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, সন্দ্বীপ, বাঁশখালী ও আনোয়ারা এলাকার ২৪ হাজার ৪টি জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এদের মধ্যে সীতাকুণ্ডের প্রায় ৫ হাজার জেলে পরিবার চাল গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। নগরের উত্তর কাট্টলী থেকে মোহরা এলাকার প্রায় আড়াই হাজার জেলে পরিবার ও কর্ণফুলী উপজেলার দেড় হাজার জেলে পরিবারও এর আগে কোনও সহায়তা পায়নি।

এ ব্যাপারে জেলা সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজিম উদ্দিন বলেন, সাধারণত তালিকাভুক্ত জেলেরাই অগ্রাধিকার পায়। তালিকায় যাদের নাম থাকে না, তারা বরাদ্দ পায় না।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।