এখন বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কপালের এক ফুট দূরে মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা হাতে নিয়ে মেশিনটি ধরলেই কত ডিগ্রি জ্বর রয়েছে তা স্ক্রিনে ডিজিটালি ভেসে ওঠে। থার্মাল স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে যাত্রীরা হেঁটে গেলে কারও জ্বর থাকলে মুখমণ্ডল ‘লাল’ এবং স্বাভাবিক থাকলে ‘সবুজ’ দেখায়।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে বিশ্বের কয়েকটি দেশে ইবোলা ভাইরাস দেখা দিলে প্রতিরোধমূলক কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়। এরপর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মোংলা সমুদ্রবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ধরনের স্ক্যানার বসানো হয়েছিলো।
সম্প্রতি চীনে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে কারও জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি উপসর্গ আছে কিনা স্ক্রিনিং করছে স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিক্যাল টিম। এক্ষেত্রে জ্বর পরিমাপের জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার ব্যবহার করা হলেও শাহ আমানতে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘ইনফ্রারেড হ্যান্ডহেল্ড থার্মোমিটার’।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে দায়িত্বরত পোর্ট হেলথ অফিসার মোতাহার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নিঃসন্দেহে থার্মাল স্ক্যানিং মেশিন অত্যাধুনিক ও ব্যবহার পদ্ধতি সহজতর। এক্ষেত্রে মানুষ আর্চওয়ের মতো দেখতে একটি যন্ত্রের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় জ্বর থাকলে মুখমণ্ডল লাল দেখায়। অন্যদিকে হ্যান্ডহেল্ড থার্মোমিটার যাত্রীর কপাল থেকে এক ফুট দূরে নিয়ে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে সঠিক তাপমাত্রা পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, শাহ আমানতে মধ্যপ্রাচ্য, কলকাতা ও চেন্নাইয়ের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীরাই আসেন। এখানে চীনের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট নেই। যাত্রী কম হওয়ায় হ্যান্ডহেল্ড থার্মোমিটার দিয়ে সুন্দরভাবে জ্বর আছে কিনা পরীক্ষা করতে পারছেন মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা।
ডা. মোতাহার বলেন, শাহ আমানতে তিন পালায় ২৪ জন করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত স্ক্রিনিং কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে দুই পালায় (সকাল-সন্ধ্যা) জাহাজের নাবিকদের স্ক্রিনিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কারণ সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে নাবিকদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা থেকে স্বাস্থ্য দফতরের একটি টিম জানুয়ারিতে থার্মাল স্ক্যানারটি দেখে গেছেন। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। যদিও হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীদের জ্বর পরীক্ষা নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত যাত্রী পাওয়া যায়নি।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা মাহমুদ আকতার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিক্যাল টিম। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব যাত্রীকে স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০
এআর/এসি/টিসি