ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনা: মাঠে কাজ করা পুলিশ সদস্যরা কতটুকু ঝুঁকিমুক্ত?

সরওয়ার কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
করোনা: মাঠে কাজ করা পুলিশ সদস্যরা কতটুকু ঝুঁকিমুক্ত? মাঠে কাজ করা পুলিশ সদস্যরা

চট্টগ্রাম: বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কাজ করছেন পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে নানা জায়গায়। মিশতে হচ্ছে নানান মানুষের সঙ্গে। আর এতে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দিনভর মাঠে দায়িত্ব পালন শেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের পরিবারের কাছে যান। এতে করে তাদের পরিবারের সদস্যরাও ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে মনে করেন তারা।

ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার বিষয়ে সরাসরি গণমাধ্যমে কথা বলতে না চাইলেও পুলিশ সদস্যরা মনে করেন, তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা উচিত। প্রয়োজনে তাদের সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় থাকার ব্যবস্থা করে দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশনা দেওয়া উচিত।

এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু মাঠে কাজ করা পুলিশ সদস্যরা কতটুকু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারছেন?

মাঠে কাজ করা পুলিশ সদস্যরা। এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মাঠে কাজ করি। মানুষের কাছে যেতে হয় আমাদের। নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকলেও আমাদের যেতে হয়। এটাই আমাদের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের পক্ষে সবসময় দূরত্ব বজায় থাকে না। কাজ করতে গিয়ে নানা জায়গায়, নানা মানুষের সংস্পর্শে যেতে হয় পুলিশের। তবুও আমরা চেষ্টা করছি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মানবিক সেবা নিশ্চিত করতে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের প্রভাষক মো. সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রত্যেক পেশাতেই কর্মজীবীদের নানা রকমের চাপ, সমস্যা ও সংকট মোকাবেলা করতে হয়। পুলিশকেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সুষ্ঠু রাখতে বিশেষ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করতে হয়। করোনা মোকাবেলায় পুলিশকে এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে যার প্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রদত্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মাবলী অনুসরণ করা সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, পুলিশকে যেহেতু দায়িত্ব পালনের জন্য জনগণের দোরগোড়ায় যেতে হচ্ছে সেহেতু পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, পিপিই এবং পুলিশের জন্য করোনা চিকিৎসায় জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতাল স্থাপন করা অত্যাবশ্যক।

মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশি, আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পর্শ, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত আসবাবপত্র ও কাপড় স্পর্শের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের বিস্তার লাভ করে। সেহেতু দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যদের মধ্যকার পারস্পরিক দূরত্ব ও জনগণ থেকে পুলিশের নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে পুলিশিং করতে হবে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, করোনা মোকাবেলায় পুলিশের কার্যক্রমে ঝুঁকি রয়েছে। তবুও পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। পর্যাপ্ত সুরক্ষা না থাকলেও আমাদের মিশতে হচ্ছে নানা মানুষের সঙ্গে। সব পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। সতর্কতাই ভরসা আমাদের।

সিএমপি কমিশনার বলেন, করোনা মোকাবেলায় সিএমপি একটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছে। এই টিমের সদস্যরা সন্দেহভাজন করোনা রোগী ও আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করবে। এই টিমের সদস্যদের আপাতত পরিবারের কাছ থেকে দূরে থেকে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের জন্য দামপাড়া পুলিশ হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রেখেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
এসকে/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।