ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্দরে ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে বেশি আমদানি রফতানি

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২০
বন্দরে ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে বেশি আমদানি রফতানি চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম: রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বৃদ্ধি ও চীনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে আমদানি ও রফতানি বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে।

বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাল্ক ও কনটেইনার কার্গো মিলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানুয়ারিতে ১ কোটি ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৪৬৮ টন, ফেব্রুয়ারিতে ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে ৯৩ লাখ ৯৮ হাজার ৭৭৯ টন এবং মার্চে ৯ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে ১ কোটি ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪০২ টন কার্গো হ্যান্ডলিং করেছে।

জানুয়ারিতে শস্যদানা, ক্লিংকার, গম, ছোলা, ভোজ্য ও জ্বালানি তেল ইত্যাদি খোলা পণ্য (বাল্ক কার্গো) এসেছিলো ৭৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮৪৪ টন, ফেব্রুয়ারিতে চীনে করোনার প্রভাবে তা কমে ৬৭ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩২ টনে দাঁড়ায়।

 মার্চে তা বেড়ে হয় ৭৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৬০ টনে। এ তিন মাসে খোলা পণ্য রফতানি ছিলো যথাক্রমে ৮ হাজার ৬৫১, ১৮০ ও ৫৮ হাজার ৪৭৩ টন।

২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে বন্দরে বাল্ক ও কনটেইনারে আমদানি, রফতানি মিলে হ্যান্ডলিং হয়েছিলো ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার, ৮০ লাখ ৯১ হাজার ও ১ কোটি ২৫ হাজার টন পণ্য।

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত কনটেইনারে পণ্য এসেছে ১৮ লাখ ৭৬ হাজার ২৪৯ টন, ১৫ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৮ টন ও ১৬ লাখ ৮২ হাজার ১৬ টন। এ সময় রফতানি হয়েছে ৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৭০, ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৯ ও ৬ লাখ ৪ হাজার ৫৩৮ টন।

বন্দরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে জাহাজ এসেছিলো ৩৫৭টি, ফেব্রুয়ারিতে ৩৬৪টি ও মার্চে ৯ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে ৩৬৬টি জাহাজ আসে। ২০১৯ সালে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত জাহাজ এসেছিলো যথাক্রমে ৩১৫, ২৯০ ও ৩৩৮টি।

ফেব্রুয়ারিতে হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ছিল জানুয়ারির তুলনায় ১৩.৭৪ শতাংশ কম। তবে, মার্চে ৯.২১শতাংশ বেড়েছে। মার্চে জাহাজ এসেছে ৩৬৬ টি। আর ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ৩৬৪ টি।

মার্চে আমদানির পরিমাণ ছিল ৯৬ লাখ টন। ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৮৮.৪২ লাখ টন। চট্টগ্রাম বন্দর মার্চে রপ্তানি হ্যান্ডলিং ৬ লাখ ৬৩ হাজার টন। তা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৫.৫৭ টন।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক শাহেদ সরওয়ার বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর রমজান ও বাজেটের আগে নিত্য পণ্য আমদানি বেশি হয়। তাই ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে আমদানি থাকে। কিন্তু এবার চীনের উহানে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে ফেব্রুয়ারিতে।

তিনি বলেন, আমাদের পোশাক শিল্পের কাঁচামাল, কেমিক্যাল, মূলধনী যন্ত্রাংশসহ বেশিরভাগ আমদানি হয় চীন থেকে। পাইপলাইনে থাকা তবে ইউরোপ, আমোরিকায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি ও দেশের প্রায় সব তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ থাকায় এখন রফতানিও কমে যাচ্ছে।

আগে যেসব এলসি হয়েছে সেই চালানগুলো বন্দরে আসছে। নতুন অনেক চালান পাইপলাইনে আছে বলে জানান তিনি।

বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, শিল্পকারখানার কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রাংশের পাশাপাশি নিত্যপণ্যের ক্ষেত্র দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার উপর নির্ভর করে আমদানি এবং বিদেশি বায়ারদের চাহিদার ওপর রফতানি হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিদেশ থেকে আসা জাহাজের নাবিকদের স্ক্রিনিং, জাহাজ বন্দর ছাড়ার পর ১৪ দিন সাগরে কোয়ারেন্টিন, বন্দরের অভ্যন্তরে প্রবেশের ক্ষেত্র সবার তাপমাত্রা পরীক্ষা, হাত ধোয়া, মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ দেশের আমদানি রফতানি ও নিত্যপণ্যের সাপ্লাই চেন স্বাভাবিক রাখতে অপারেশনাল কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা চালু রেখেছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২০
এআর/এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।