হালদাপাড়ে এখন চলছে ডিম থেকে রেণু ও পোনা তৈরির প্রস্তুতি। জেলেদের ধারণা, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হলে তারা আশানুরূপ ডিম সংগ্রহ করতে পারবেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা বিশেষজ্ঞ ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া বাংলানিউজকে হালদায় মা মাছ ‘নমুনা ডিম’ ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রাত ১২টার পর স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারী ও মৎস্যজীবীরা জোয়ারের সময় মা-মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন।
‘মা-মাছ হয়তো প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে ডিম ছাড়লে পোনা তৈরি করা সম্ভব কিনা। পরিবেশ, প্রতিবেশ ও পানির গুণাগুণের প্যারামিটারগুলো ঠিকঠাক থাকলে মা-মাছ ডিম ছাড়বে। ’
স্থানীয় জেলেরা জানান, হালদা থেকে সংগৃহীত মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু, পোনার দেশজুড়ে চাহিদা রয়েছে। দামও ভালো পাওয়া যায়। সাধারণ হ্যাচারিতে কৃত্রিম পদ্ধতিতে উৎপাদিত পোনার চেয়ে হালদার পোনা দ্রুত বড় হয়। এতে মৎস্যচাষিরা লাভবান হয়।
মূলত হালদার কাগতিয়ার আজিমের ঘাট, খলিফার ঘোনা, পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা, বিনাজুরী, সোনাইর মুখ, আবুরখীল, খলিফার ঘোনা, সত্তারঘাট, দক্ষিণ গহিরা, মোবারকখীল, মগদাই, মদুনাঘাট, উরকিচর এবং হাটহাজারী গড়দুয়ারা, নাপিতের ঘাট, সিপাহির ঘাট, আমতুয়া, মার্দাশা ইত্যাদি এলাকায় ডিম পাওয়া যায় বেশি।
বংশ পরম্পরায় চলে আসা রেওয়াজের পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে এসব ডিম থেকে রেণু তৈরি, এরপর পোনা উৎপাদন করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে যে হারে ডিম পাওয়া যায় সে হারে রেণু হয় না। অনেক ডিমই তাপমাত্রা, আবহাওয়া, লবণাক্ততাসহ বৈরী পরিবেশে নষ্ট হয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার (২১ মে) রাত ১২টার পর থেকে জোয়ারে হালদায় মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে বলে জেলেরা জানিয়েছেন। আমরা তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।
‘সবকিছু ঠিক থাকলে শুক্রবার সকাল বা দুপুরের দিকে আমরা মা মাছ ডিম ছাড়ার সুখবর পেতে পারি। ডিম ফুটানোর জন্য তিনটা হ্যাচারি এবং ৬০টি কুয়া তৈরি করা হয়েছে। ’
তিনি বলেন, হালদাকে মা মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমরা ১০৯টি অভিযান চালিয়ে ১ লাখ মিটারের বেশি জাল জব্দ করেছি। ৯টি ড্রেজার ধ্বংস করেছি। হালদায় জেলেদের ডিম সংগ্রহেও সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে চায় উপজেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
এমআর/টিসি