ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনাকালে রেলওয়ের আয়ের গতি বাড়াচ্ছে পণ্য পরিবহন

372 | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
করোনাকালে রেলওয়ের আয়ের গতি বাড়াচ্ছে পণ্য পরিবহন করোনাকালে রেলওয়ের আয়ের গতি বাড়াচ্ছে পণ্য পরিবহন

চট্টগ্রাম: গুডস ট্রেনে বস্তা ভর্তি গম ভর্তি করছিলেন ১০ জন শ্রমিক। সময়টা দুপুর ২টা। তখনও দুপুরের খাবার পেটে পড়েনি তাদের। তিনটা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টা কাজ শেষে ৫টি গাড়িতে ভর্তি করলেন পণ্য।

ঠিক কিছুক্ষণ পর ট্রেনটি রংপুর, তেজগাঁও ও আশুগঞ্জ উদ্দেশে ছেড়ে যায়। চিত্রটি নগরের পতেঙ্গার সাইলোর।

যেখান থেকে প্রতিদিন দুটি পণ্যবাহী ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে খাদ্যের ঘাটতি মেটাতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাচ্ছে এসব গুডস ট্রেন।

শুধু খাদ্যবাহী ট্রেন নয়, তেল ও কন্টেইনারবাহী ট্রেনও ছেড়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম থেকে। করোনার কারণে রেলওয়ের যাত্রীবাহী ট্রেনের আয় যখন লাটে উঠছে, ঠিক তখনই পণ্য পরিবহন করে ৩ মাসে প্রায় ১৫ কোটি টাকা আয় করেছে রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগ।    

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরদার শাহাদাত আলী বাংলানিউজকে বলেন, করোনার মধ্যেও আমরা চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে গুডস ট্রেন পরিচালনা করছি। দেশে খাদ্যের ঘাটতি মেটাতে লকডাউনের মধ্যেও স্বাভাবিকভাবে গুডস ট্রেন চলেছে। মূলত করোনার মধ্যেও অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকারের উদ্যোগকে সাড়া দিয়েই আমাদের এ কার্যক্রম।

তিনি বলেন, কতো টাকা আয় হবে বা হচ্ছে সেরকম কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল সরকারের উদ্যোগের ভূমিকা রাখা। তবে যা আয় হচ্ছে, তাতে আমরা আশাবাদী। এই আয় আরও বাড়বে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী বাংলানিউজকে জানান, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে রেলওয়ে পণ্য পরিবহন করে ১২ হাজার ৪৫১টি ওয়াগন। এর মধ্যে পণ্য পরিবহন করে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৪৩ মেট্রিক টন। পরিবহন বাবদ রেলওয়ে আয় ১৪ কোটি ৯০ লাখ ৪১ হাজার ৪৯৭ টাকা।

এর মধ্যে মার্চ মাসে আয় ৭ কোটি ৫২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৮ টাকা, এপ্রিলে আয় ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৯ হাজার ৮৪১ টাকা ও মে মাসে আয় ৩ কোটি ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৬৭৮ টাকা। মার্চে পণ্য পরিবহন করে ৮২ হাজার ৫৭৮ মেট্রিক টন, এপ্রিলে ৪৮ হাজার ৯১৩ ও মে মাসে ৩৬ হাজার ৫২ মেট্রিক টন।

তবে গত বছরের তুলনায় পণ্য পরিবহন ও আয় দুটিই কমেছে করোনার কারণে। চলতি বছরে মে মাসে যেখানে পণ্য পরিবহন করে আয় ৩ কোটি ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৬৭৮ টাকা সেখানে গত বছর মে মাসে আয় ছিলো ৫ কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা। একইভাবে মার্চ, এপ্রিলেও গত বছরের তুলনায় আয় কম।

পরিবহন বিভাগ সূত্র জানায়, করোনার মধ্যে দেশের খাদ্যের ঘাটতি মেটাতে চট্টগ্রাম-ঢাকা ও দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকায় প্রতিদিন একটি করে ট্রেন কৃষিপণ্য পরিবহন শুরু করে। কিন্তু কৃষিপণ্যের জন্য পার্সেল ট্রেন চালু করা হলেও পর্যাপ্ত পণ্য পরিবহন করতে না পারায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পার্সেল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে।

গত ১-৩ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় চলাচলকৃত পার্সেল ট্রেনটির ছয়টি বগির মধ্যে পাঁচটিই খালি ছিল ওই তিন দিন। তাই ক্ষতির মুখে পড়ায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পার্সেল ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়।

তবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরকারি খাদ্য, কনটেইনার, তেল, এমআরসি, সামরিক পণ্য, পাথর ইত্যাদি পণ্য নিয়ে নিয়মিত চলাচল করেছে মালবাহী ট্রেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।