বুধবার (২৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, সাভারের আশুলিয়ায় বেশ কয়েকটি কারখানার সামনে শ্রমিকদের নাম ও ছবিসহ নোটিশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আবার কিছু কারখানায় নোটিশ ছাড়াই শ্রমিকদের ডেকে ডেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, এ পর্যন্ত সাভার-আশুলিয়ার ১৯টিরও বেশি কারখানায় প্রায় এক হাজার ৫শ জনকে ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় ফেলে কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে- বার্ড গ্রুপ, সেবল্ড টেক্স লিমিটিড, ডার্ড গ্রুপের দীপ্ত অ্যাপারেলস, এফএনএফ অ্যাপারেলস, আল গাউসিয়া গার্মেন্টস, ডনলিয়ন ১ ও ২, কেআরএফ গার্মেন্টস, নিট এশিয়া লিমিটেড, কেসিও গ্রুপ, রেজাউল গার্মেন্ট, হা-মীম গ্রুপ, অরবিট অ্যাপারেলস লিমিটেড, জেকে গ্রুপ, মাহমুদ ফ্যাশন লিমিটেড, মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডায়িং মিলস লিমিটেড, এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড, এফজিএস ডেনিম ওয়্যার লিমিটেড ও লিলি ফ্যাশনসহ কয়েকটি কারখানা।
ছাঁটাই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ‘নীট এশিয়া’র এক শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, আমি সকালে অফিসে গেলে অফিসের গেটে ঢুকতেই আমাকে দাঁড়াতে বলেন এক স্যার। তখন আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল। পরবর্তীতে আমাদের কিছু টাকা দিয়ে কার্ড নিয়ে নিলেন। পরে আমাদের চলে যেতে বলেন। কারখানায় আসতে না করে দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‘এআর জিন্স’র আরেক শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদেরতো ছাঁটাই করছে, কিন্তু আমাদের নামে মামলাও দিয়েছে। আমরা বাড়ি যেতে পারছি না। পুলিশ আমাদের বাড়িতে গিয়ে খুঁজছে। আমরা এখন কী করবো, কোথায় যাবো? পুলিশ আমাদের সব সময় খুঁজে বেড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে সেবল্ড টেক্স লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে কারখানার সামনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করলেও কারখানার নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, কর্মকর্তারা জরুরি মিটিংয়ে রয়েছেন, এখন কথা বলতে পারবেন না।
এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড জেনারেল ম্যানেজার র্যাক লিটন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের ছাঁটাই করিনি, সাময়িক বরখাস্ত করেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রতিষ্ঠানে মোট ১৪৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শ্রমিকদের কাছে ডাকযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশও পাঠানো হয়েছে। এ নোটিশের উত্তর পাওয়ার পর শ্রমিক কাজ করতে পারবে কি-না, তা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং আইনিভাবে যে সিদ্ধান্ত হবে আমরা সে সিদ্ধান্তই নেবো। ’
এদিকে সভার ও আশুলিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ১১টি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি শ্রমিককে আটক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সম: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
জিপি