সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকদের হস্তক্ষেপে আমানতের জন্য ৬ শতাংশ এবং ঋণের জন্য ৯ শতাংশ এবং ব্যাংকের অন্যান্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী আমানতের সুদ কমানোর কারণে আমানতকারীরা ব্যাংকের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর আমানত বৃদ্ধির হার দেখা যাচ্ছে ৯ শতাংশ।
অর্থাৎ দুই বছরের ব্যবধানে ৪ শতাংশ আমানত কমেছে। এ বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতেও ব্যাংকগুলোকে আমানত সংগ্রহে প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমানতের আকার সংকুচিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সুদের হার কমে যাওয়া। একটি টেকসই অর্থনীতির জন্য বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমানতের সুদহার নির্ধারণ করা উচিত।
সৈয়দ মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, সুদের হার কমে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় আমানতকারীদের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এটি প্রত্যাশা করা যায় না।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আমানতের ওপর গড় সুদহার ছিল ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ, আগের মাস নভেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। একইভাবে ওই বছরের ডিসেম্বর শেষে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে, এক বছরে ১ লাখ টাকা আমানতের জন্য ব্যাংক ৫ হাজার ৩০০ টাকা সুদ দিলেও গ্রহীতা পেয়েছেন ৪ হাজার ৫০৫ টাকা।
যেমন কেউ এক লাখ টাকার বার্ষিক সুদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৩০০। সেখান থেকে তাকে ১৫ শতাংশ আয়কর দিতে হলো। এতে শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেলো ৪ হাজার ৫০৫ টাকা। এই হিসেবে আমানতের সুদহার দাঁড়াচ্ছে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে আমানতকারীদের মধ্যে যারা হিসাব খোলার সময় ইলেকট্রনিক ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন (ই-টিন) নম্বর দিয়েছেন তাদের আয়কর দিতে হয়েছে ১০ শতাংশ। ই-টিন সনদধারী আমানতকারীদের জন্য বার্ষিক সুদের হার ছিল ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমানতের সুদহার কমে যাওয়ার কারণে আমানতকারীরা ব্যাংক বিমুখ হয়েছে। আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে চলে গেলে বেসরকারিখাতে ঋণ বিতরণে সমস্যা হবে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে আমানতের সুদহার পুনঃনির্ধারণ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এসই/এইচএ/