ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

৬ মাসের মধ্যে শেষ হবে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
৬ মাসের মধ্যে শেষ হবে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ

ঢাকা: আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। 

তিনি বলেছেন, হাতিরঝিল প্রকল্পের মধ্যে শুধু বিজিএমইএ ভবন নয়, যত অবৈধ স্থাপনা আছে সবগুলো অপসারণ করা হবে। আমরা চাই হাতিরঝিলে পানির গতি বৃদ্ধি পাক, সুন্দর ঢাকা গড়ে উঠুক।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এ কথা বলেন মন্ত্রী।

রেজাউল করিম বলেন, আমরা হাতিরঝিল প্রকল্পের বিষফোড়াখ্যাত বিজিএমইএ ভবন অত্যাধুনিক ডিভাইস দিয়ে ভাঙার পরিকল্পনা করেছিলাম। ভবন ভাঙতে প্রথমবারের মতো ডিনামাইটের ব্যবহারের চিন্তা ছিলো আমাদের। তবে পরিবেশের কথা আর এ ভবনের পাশে গড়ে ওঠা পাঁচতারকা হোটেলের বিষয়টি মাথায় নিয়ে ডিনামাইট ব্যবহারের চিন্তা থেকে সরে এসেছি। এখন পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে সনাতন পদ্ধতিতে (শাবল-হাঁতুড়ি) দিয়ে ভবন ভাঙার কাজটি পরিচালিত হবে। এতে আমরা এ ভবন ভাঙার কাজ যে প্রতিষ্ঠানকে (ফোরস্টার এন্টারপ্রাইজ) দিয়েছি তাদেরকে ছয় মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দুটি টিম তাদের কাজ দেখভাল করবে, প্রতিটি দিনে তারা থাকবে। ছয় মাসের মধ্যেই তাদের কাজ শেষ করতে হবে।

তিনি বলেন, ভবন ভাঙার পর যেসব বর্জ্য জমা হবে প্রতিষ্ঠানটি সেগুলো একটি নির্দিষ্ট স্থানে সাময়িক রাখবে। পরে সেগুলো শহরের বাইরে ফেলে দেওয়া হবে। আমরা শুধু বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ শুরু করছি না, হাতিরঝিল প্রকল্পের মধ্যে যতোগুলো অবৈধ স্থাপনা আছে সবগুলো অপসারণ করা হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, এই ভবন ভাঙার পর হাতিরঝিল প্রকল্পের পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। এ প্রকল্পের গভীরতা বৃদ্ধি পাবে। এর আগে হাতিরঝিল প্রকল্পের পানিতে দুর্গন্ধ থাকতো এখন সেটা নেই। আমাদের এ প্রকল্পে প্রতিদিন পানি বিশুদ্ধ করা হচ্ছে। আমরা চাই একটি সুন্দর ঢাকা গড়তে। এজন্য সব অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হবে।

ফোরস্টার এন্টারপ্রাইজের পরিচালক নসরুল্লাহ খান রাশেদ বলেন, আজ মন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভবন ভাঙার কাজ উদ্বোধন করেছেন। আমরা আগামী সোমবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করবো। ভবন ভাঙার কাজে বুলডোজার, এক্সেভেটর, শাবল ইত্যাদি ব্যবহার হবে।

এসময় ফায়ার সার্ভিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, রাজউক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে বিজিএমইএ’র বর্তমান ভবনটিকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। রায়ে বলা হয়, ‘ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হলো। ’ পরে ভবন ছাড়তে উচ্চ আদালতের কাছে সময় চায় বিজিএমইএ। এরপর ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়।  

পরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভবনটি ভাঙার দরপত্র আহ্বানের পর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ভবনটি ভাঙতে কাজ পায় ‘সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের দরপত্র ছিল এক কোটি ৭০ লাখ টাকার। সে অনুযায়ী তাদের কার্যাদেশও দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে ভবন ভাঙার কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ায় সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স। ওই সময় সরে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ১০ শতাংশ হারে টাকা কেটে নেয় রাজউক। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ফোর স্টার’ গ্রুপকে কাজ দেয় রাজউক। তাদের দরপত্রে টাকার পরিমাণ ছিল এক কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এখন তারা এক কোটি দুই লাখ টাকায় ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৯ 
ইএআর/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।