সাদামাটি আধুনিক জীবনযাত্রার প্রয়োজনের নিরিখে একটি বিশেষ প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ। ঘর গৃহস্থালির নানাবিধ তৈজসপত্র, রিফ্রাকটরিজ, সিরামিক, টাইলস ইত্যাদি ছাড়াও ইনসুলেটর, ঔষধ, কাঁচ ও কাগজ শিল্পে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
দেশের সাদামাটিতে সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম, আয়রন, টিটেনিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরপূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব এলাকার পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে পাললিক শিলাস্তরে প্রচুর সাদামাটির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে বলে দাবি জিএসবির।
জিএসবি সূত্র জানান, টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরে ১২৫, জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ১০, হবিগঞ্জের মাধবপুরে ৬৮, বাহুবলে ২, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় ২৫ ও নেত্রকোণার বিজয়পুরে ২৫ মিলিয়ন টন সাদামাটি মজুদ আছে। এছাড়াও দিনাজপুরের মধ্যপাড়া, দিঘীপাড়া ও নওগাঁর পত্নীতলায় মিলেছে সাদা মাটির সন্ধান।
বাংলাদেশের সাদামাটির মান ভালো। শুধু পাহাড়ি এলাকায় নয়, হবিগঞ্জের সমভূমিতেও সাদামাটির সন্ধান পাওয়া গেছে। সারাদেশে জরিপ পরিচালনা করলে সাদামাটির আরো সন্ধান মিলবে। এতে শিল্পের নতুন দ্বার উন্মোচনের পাশাপাশি সাদামাটি আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে জানায় জিএসবি।
জিএসবি জানায়, স্থানীয়ভাবে স্বল্প পরিসরে সাদামাটি ব্যবহার করা হয়।
জিএসবি'র পরিচালক (ভূতত্ত্ব) মোহাম্মদ আলী আকবর বাংলানিউজকে বলেন, সাদামাটির ব্যবহার নানাভাবে হয়ে থাকে। গৃহস্থালি সামগ্রী ও ঔষধ শিল্পের জন্য আমাদের সাদামাটির মান ভালো। শুধু পাহাড়ের ভাঁজ বা পাদদেশে নয়, সমভূমিতেও সাদামাটি পেয়েছি। তাই সারাদেশে সার্ভে করলে আমরা মাটির ভাঁজে ভাঁজে সাদামাটি পেতে পারি। ফলে একদিকে যেমন শিল্পের প্রসার ঘটবে, অন্যদিকে আমদানি নির্ভরতাও কমবে।
সাদামাটি সন্ধান, উত্তোলন ও বিপণনে সাত সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি রয়েছে। এই কমিটি সাদামাটি কোয়ারি ইজারা দেয়া, উত্তোলনসহ সকল কাজ করে থাকে।
দেশের নেত্রকোণা জেলার দূর্গাপুর, ময়মনসিংহের ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট ও শেরপুরের শ্রীবরদী, নালিতাবাড়ী এবং ঝিনাইগাতি উপজেলায় সাদামাটির মজুদ রয়েছে। ছয়টি উপজেলায় পাহাড় ও সমতলে মোট ৩৫০ মিলিয়ন টন সাদামাটি মজুদ রয়েছে।
নতুন করে পাওয়া ২৪৫ মিলিয়ন টন নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে বলে জানায় জিএসবি। সব মিলিয়ে বর্তমানে দেশে সাদামাটি মজুদের পরিমাণ দাঁড়ালো ৫৯৫ মিলিয়ন টন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২০
এমআইএস/এমএইচএম