তিনি বলেছেন, হাওরের অবশিষ্ট ১০ ভাগ এ সপ্তাহের মধ্যে কর্তন সম্পন্ন হবে। হাওরভুক্ত এলাকাগুলোতে অধিক জীবনকাল সম্পন্ন ব্রি-ধান ২৯ (জীবনকাল- ১৬৫ দিন) জাতের ধানের আবাদ থাকায় কর্তনে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
মঙ্গলবার (০৫ মে) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে হাওর অঞ্চলসহ সারাদেশের বোরো ধান কর্তন অগ্রগতি এবং করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে কৃষির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অনলাইনে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
অনলাইন ব্রিফিংয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আরিফুর রহমান অপু, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ প্রমুখ সংযুক্ত ছিলেন।
আগামী জুন মাসের মধ্যে সারাদেশের বোরো ধানের শতভাগ কর্তন সম্পন্ন হবে আশা প্রকাশ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, হাওরভুক্ত সাত জেলায় (কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) এ বছর বোরো আবাদের পরিমাণ চার লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৯ হেক্টর। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত কর্তন হয়েছে চার লাখ ৯৬৪ হেক্টর। যা হাওরভুক্ত মোট আবাদের শতকরা ৯০ দশমিক ০২ ভাগ। এছাড়া হাওরাঞ্চলে (হাওর ও নন হাওর মিলে) মোট বোরো আবাদের পরিমাণ ছিল নয় লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ হেক্টর জমি। এরমধ্যে এ পর্যন্ত মোট কর্তনের পরিমাণ ছয় লাখ ১১ হাজার ৮১৩ হেক্টর। যা হাওর অঞ্চলের জেলাগুলোর মোট আবাদের শতকরা ৬৫ দশমিক ৩৪ ভাগ। অন্যদিকে, সারাদেশে আবাদের পরিমাণ ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৪৭ হেক্টর। এরমধ্যে কর্তন হয়েছে ১১ লাখ ৮৮ হাজার ৬১১ হেক্টর। যা মোট আবাদের শতকরা ২৫ ভাগ।
তিনি বলেন, বর্তমানে হাওরভুক্ত জেলাগুলোতে ধান কর্তনের জন্য প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার ৫০০ জন কৃষি শ্রমিক নিয়োজিত আছেন। করোনা ভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে নিরাপদে হাওর অঞ্চলের বোরা ধান দ্রুত কর্তনের জন্য উত্তরাঞ্চলসহ দেশের প্রায় চারটি কৃষি অঞ্চল থেকে মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় এবং সরকার ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় প্রায় ৩৮ হাজার কৃষি শ্রমিককে হাওরে পাঠানো হয়েছে।
ধান কাটার যন্ত্রপাতি সরবরাহের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষিতে করোনা ভাইরাসের প্রভাব এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুয়ায়ী, কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহে জরুরি সহায়তা বাবদ প্রথম পর্যায়ে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে ৮০৩টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৪০০টি রিপার দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দে ৫১৯টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৫০৮টি রিপার দিয়েছি।
কৃষকরা যাতে ধানের ন্যায্যমূল্য পান সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি এবং করোনা সময়কালে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে আট লাখ মেট্রিক টন ধান, এক দশমিক পাঁচ টন আতপ চাল, ১০ লাখ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল এবং ৭৫ হাজার মেট্রিক টন গমসহ ২০ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কনফারেন্সে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবকে উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার মণ্ডল, সাবেক সচিব জেড করিম, সাবেক সচিব নাজমুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ বিশেষজ্ঞ, বীজ বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ বীজ অ্যাসোসিয়েশন, শাক-সবজি ও ফলমূল রপ্তানিকারক সমিতি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ফার্মস, সুপার শপ মালিক সমিতিসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২০
জিসিজি/টিএ