রংপুরের বদরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নে হাঁড়িভাঙা আমের বাগান রয়েছে প্রায় শতাধিক। ওই ইউনিয়নের ধাপপাড়ার দুই ভাই নূরুন্নবী সরদার রাজু ও নাজমুল হক সরদার সাগর পৈতৃক ৬০ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলেছেন হাঁড়িভাঙা আমের বাগান।
আম চাষিরা জানান, বাগানের আম নামতে দেরি আছে। কিন্ত এরই মধ্যে দূর-দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেছেন আমের পাইকাররা। তারা এসব আম কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠাবেন।
হাঁড়িভাঙা আম অত্যন্ত সুমিষ্ট। আঁশ নেই বললেই চলে। মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শেষ থেকে এই আম পাকতে শুরু করে আষাঢ়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত তা পাওয়া যায়। আমটি দেখতে সাধারণত কিছুটা লম্বাটেসহ গোলাকৃতির এবং কালচে সবুজ রংয়ের। পাকলে কিছুটা লালচে রঙ ধারণ করে। প্রতিটি হাঁড়িভাঙা আমের ওজন ২০০ গ্রাম থেকে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। সুমিষ্ট ও সুস্বাদু বলে এই আমের সুখ্যাতি এখন দেশজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। কোনো এক যুগ সন্ধিক্ষণে কোনো এক মাটির ভাঙা হাঁড়িকে ঘিরেই উৎপত্তি হওয়ায় আমটির নাম হয়েছে ‘হাঁড়িভাঙা’।
এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এলাকার প্রতিটি বাগান তৈরিতে মাটি নির্বাচন থেকে পরিচর্যা পর্যন্ত কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিয়ে আসছেন। এবছর কয়েক দফা ঝড়ে আমের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। তবে যা আম রয়েছে, ভালো দাম পেলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন আম চাষিরা।
রিকশাচালক থেকে নার্সারি মালিক জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হাঁড়িভাঙা আমের চারার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিটি চারা ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। মৌসুমে এসব আমের প্রচুর চাহিদা থাকে।
তিনি আরও জানান, হাঁড়িভাঙা আমের চারা বিক্রি করে দু’টি নার্সারি গড়ে তুলেছেন, যার নাম কেয়া নার্সারি। প্রয়োজনে চারা রোপণের কাজও করে দেন নিয়োজিত লোকের মাধ্যমে। ফলে এই আমের চারার চাহিদা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে।
আম চাষিরা জানান, গত বছর হাঁড়িভাঙা আম প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবছরও ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন চাষিরা। তা নাহলে এবার লোকসান হবে বলে জানান তারা। চলতি বছর চাষিরা এই হাঁড়িভাঙা আমে লাভের আশা করছেন। সেইসঙ্গে প্রকৃতির বৈরী আচরণে কপালে দুশ্চিন্তার ভাজও পড়েছে তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৭ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২০
এসআরএস