শুক্রবার (১২ জুন) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, শান্তিনগর, মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকা ঘুরে এসব চিত্র উঠে আসে।
এসব এলাকার বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে সবজির দাম।
কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি টমেটো (প্রকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৫০-৬০ টাকা, বেগুন ৪০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ধনিয়া পাতার দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৮০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিকেজি ধনিয়াপাতা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিদরে। দাম অপরিবর্তিত আছে আলু, কলা, বড় কচু, লেবু, পুদিনা পাতা, লাউ, জালি কুমড়ার দাম।
দাম বেড়েছে শাকের বাজারে। প্রতি আটিতে (মোড়া) দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি আটি (মোড়া) কচু শাক বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ টাকা, লাল শাক ১২-১৫ টাকা, মূলা ১২-১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, লাউ ও কুমড়া শাক ৩০-৪০ টাকা, পুঁইশাক ১৫-২০ টাকায়।
অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০-৬০০ টাকা, মহিশের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বকরি ৭৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
গরু-খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে মুরগির বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে। কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতিকেজি বয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকা কেজি দরে, কেজিতে ২০ থেকে বেড়ে প্রতিকেজি লেয়ার ২২০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৯০ টাকা কেজিদরে। কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি সোনালি মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, প্রতিকেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিদরে।
মুরগির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত আছে ডিমের দাম। বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা, দেশি মুরগি ১৪০-১৫০ টাকা, সোনালী মুরগী ডিমি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০, হাঁস ১১৫-১২৫ টাকা, কোয়েল প্রতি ১০০ পিস ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বাড়তি রয়েছে মাছের বাজারে। এসব বাজারে দাম বেড়ে প্রতিকেজি কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪২০ টাকা কেজিদরে, মলা ৪০০-৪৫০ টাকা, ছোট পুটি (তাজা) ৫৫০-৬০০ টাকা, ছোট পুটি ৩০০-৪০০ টাজা, টেংরা মাছ (তাজা) প্রতিকেজি ৭০০-৮০০ টাকা, দেশি টেংরা ৫০০-৫৫০ টাকা কেজিদরে।
প্রতিকেজি শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৫৫০ টাকা, পাবদা ৩২০-৫৫০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪০০-৭০০ টাকা, বাগদা ৫৫০-১০০০ টাকা, হরিণা ৪০০-৫৪০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩৫০-৫৫০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৫০-৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০-৩২০ টাকা, পাঙাস ১৫০-২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, কৈ ১৮০-২০০ টাকা, কাতল ২০০-৩২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
প্রতি এককেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১০৫০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৮০-৪৫০ টাকা কেজি দরে।
তবে দাম কমেছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের। কেজিতে পাঁচ টাকা কমে এসব বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, প্রতিকেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। কেজিতে ১০-২০ টাকা কমে প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১৪০-১৫০ টাকা কেজিদরে।
অপরিবর্তিত আছে ভোজ্যতেলের বাজার। এসব বাজারে খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০৫ টাকা লিটার, খোলা (সাদা) সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।
বর্তমানে প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৮ টাকা কেজি, মিনিকেট পুরান ৬০ টাকা, বাসমতি ৬০-৬২ টাকা, প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা, এক সিদ্দ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পাইজাম ৪০ টাকা, প্রতিকেজি পোলাও বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজিদরে।
প্রতিকেজি ডাবলী ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, এংকর ৫০ টাকা, প্রতিকেজি দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা কেজিদরে।
বাজারে সবজির বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে রয়েছে ভিন্নমত। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সবজির ঘাটতি না থাকলেও বেশি মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আর বিক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে অনেক সবজির সিজন না, তাছাড়া বাজারে সবজির সংকট থাকায় বাড়তি দাম রয়েছে পাইকার বাজারে।
এ বিষয়ে মাহবুব নামে খিলগাঁও বাজারের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, এখন বাজারে সবজির কোনো ঘাটতি নেই কিন্তু দাম বেশি। সিজন না অথচ সব রকম সবজি বাজারে আছে এ অবস্থায় বেশি মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম রাখছেন।
তবে এ ক্রেতার সঙ্গে একমত নন মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা আলী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে অনেক সবজির সিজন না হওয়ায় সেগুলোর বাড়তি দাম রয়েছে পাইকারি বাজারে। তাছাড়া সবজির দাম আমদানির ওপর নির্ভর করে। বাজারে মালামাল বেশি হলে দাম কমে, মালের সংকট হলে দাম বেড়ে যায়। পাইকারি বাজারের দাম অনুপাতে আমরা খুচরা বাজারে মালামাল বিক্রি করি।
মুরগির দাম বৃদ্ধি বিষয়ে বোরহান নামে খিলগাঁও বাজারের এক মুরগি বিক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের আগে পাইকারি বাজারে মুরগির সংকট থাকায় দাম বেশি ছিলো। পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহে সরবরাহ বেশি ছিলো তাই দামও কম ছিলো। দুইদিন ধরে আবারও মুরগি সংকট কাপতান বাজারে। এ কারণে সেখানে দাম বাড়তি থাকায় খুচরাতেও বেড়েছে দাম।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
ইএআর/এনটি