ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চামড়া সংরক্ষণের লবণ মজুদ আছে, বাড়বে না দাম

378 | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
চামড়া সংরক্ষণের লবণ মজুদ আছে, বাড়বে না দাম

ঢাকা: এবার ঈদে এক কোটি ৮ লাখের মতো পশু কোরবানি হতে পারে। এসব পশুর চামড়া সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন হবে প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি লবণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যাপ্ত লবণ মজুদ আছে। ফলে এবার লবণের দাম বাড়বে না। 

জানা গেছে, বর্তমানে দেশে গতবছর ও চলতিবছর মিলিয়ে ২০ লাখ ৩ হাজার মেট্র্রিকটন লবণ মজুদ আছে। এর মধ্যে চলতি বছরের নতুন লবণ রয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টন।

এই মজুদকৃত লবণ দিয়েই আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণসহ আগামী ১০ (দশ) মাস লবণের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে শিল্পসচিব কে এম আলী আজম বাংলানিউজকে বলেন, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ মজুদ আছে, কোথাও লবণের ঘাটতি নেই। তাই আসন্ন ঈদুল আজহায় লবণের দাম বাড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।  

তিনি বলেন, প্রতিবছর আমাদের দেশে কোরবানির পশুর সংখ্যা বাড়ে। কিন্তু এ বছর কোরবানির সংখ্যা বাড়বে না বলে ধারণা করছি। এ বছরও ১ কোটির ওপর পশু কোরবানি হতে পারে।  

শিল্পসচিব বলেন, কোরবানি পশুর চামড়া সংরক্ষণের জন্য আমাদের প্রতিবছর ১ লাখ মেট্রিক টন অতিরিক্ত লবণ প্রয়োজন হয়। এবছর চাষি, মিলমালিক ও সরবরাহকারীদের কাছে বর্তমানে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ আছে যা দিয়ে সহজেই কোরবানি ঈদের বাড়তি চাহিদা মিটিয়ে আগামী ১০ মাসের লবণের সব চাহিদা পূরণ করা যাবে।  

লবণের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত লবণ মজুদ রয়েছে। ঈদ ছাড়াও আগামী ১০ মাস লবণের কোনো ঘাটতি হবে না।  

বিসিক চেয়ারম্যান বলেন, চলতি বছরের নভেম্বরে নতুন মৌসুমের লবণ বাজারে আসবে। বিধায় বর্তমান মজুদ দিয়ে শিল্প ও ভোজ্য লবণের জাতীয় চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত লবণ থাকবে। ফলে এ বছর লবণের দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই।  

বিসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দেশে ভোজ্য ও শিল্প লবণের মোট চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ লাখ ৪৯ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে মোট ১৫ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ক্রুড লবণ উৎপাদিত হয়েছে। এছাড়া বিগত মৌসুমের উদ্বৃত্ত লবণ ছিল ০৪ লাখ ৩৩ হাজার মে. টন। সব মিলিয়ে মোট জাতীয় চাহিদার বিপরীতে দেশে লবণের মোট মজুদ ২০ লাখ ০৩ হাজার মেট্রিক টন, যা দেশের মোট চাহিদার চেয়ে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মে. টন বেশি। এর মধ্যে চলতি অর্থ বছরের মে মাস পর্যন্ত চাহিদা মিটিয়ে ০১ জুন, ২০২০ লবণ মাঠ ও মিল পর্যায়ে লবণের মোট মজুদের পরিমাণ ১৩ লাখ ৬৮ হাজার মে. টন। এছাড়া দেশের সকল জেলার ডিলার, পাইকারী ও খুরচা বিক্রেতা পর্যায়ে আয়োডিনযুক্ত ভোজ্য লবণ মজুদ রয়েছে।

এদিকে গত ২২ জুন চামড়া শিল্পের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন টাস্কফোর্সের ২য় ভার্চ্যুয়াল সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনা পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদুল আজহায় স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করে চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পরিবহন একটা বড় চ্যালেঞ্জ। চামড়া নিয়ে গত বছরের মতো পরিস্থিতি আমরা কেউ প্রত্যাশা করি না। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত করার আহবান জানান তিনি।

তিনি বলেন, চামড়া শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে আসন্ন ঈদ-উল-আজহায় চামড়া ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে চামড়া শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীদের লাভের কথা বিবেচনা করে কাঁচা চামড়া ও লবণযুক্ত চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এতে ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত পরিমাণে চামড়া ক্রয় ও সংরক্ষণ করার সক্ষমতা অর্জন করবেন। এজন্য করোনা পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়ে চামড়া শিল্প যাতে ঘুরে দাঁড়াতে সে লক্ষ্যে ট্যানারি মালিক, আড়তদার, চামড়াখাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরণের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ সবাইকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

ওই সভায় আরো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এবার ঈদে ভারত থেকে গরু আনবে না বাংলাদেশ। দেশীয় গরু দিয়েই চাহিদা মেটানো হবে। এজন্য ঈদের আগে সীমান্তে ‘বিট খাটালের’ অনুমতি দেয়নি সরকার।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, প্রতিবছর দেশে এক কোটি ১০ লাখের মতো পশু কোরবানি হয়। এর মধ্যে গরু-মহিষ থাকে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
জিসিজি/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।