ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরিতে ৯ হাজার বইয়ের পাঠক ১০ জন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরিতে ৯ হাজার বইয়ের পাঠক ১০ জন গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাব-ছবি: বাংলানিউজ

গাইবান্ধা: ১৯০৭ সালে গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটির বয়স ১১০ বছর। তবে শত বছর বয়সী এ লাইব্রেরিটি আজ পাঠকহীন হয়ে পড়েছে। লাইব্রেরিটিতে নয় হাজার বই থাকলেও পাঠকের সংখ্যা মাত্র ১০/১২ জন।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সোস্যাল মিডিয়ার কারণে বই পড়তে অনাগ্রহী হচ্ছে যুবসমাজ। এছাড়া ইন্টারনেটের কারণে দৈনিক পত্রিকার পাঠক কমছে বলে দাবি করেন গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পাঠক এখন মোবাইলের মাধ্যমেই সব পত্রিকা বা প্রয়োজনীয় পড়া পড়তে পারছেন।
 
তিনি আরো জানান, জেলার এ লাইব্রেরিটিতে বিভিন্ন ধরনের ৯ হাজার বই রয়েছে। এর মধ্যে চারশ’ বছরের পুরাতন বইও রয়েছে এখানে। কিন্তু এসব বই পড়তে লাইব্রেরিতে মাত্র ১০ থেকে ১২ জন নিয়মিত আসেন।

দুই/তিন বছর আগে ১০/১২টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা আসতো লাইব্রেরিতে। তখন পাঠকও ছিলো প্রচুর। কিন্তু এখন মাত্র তিনটি জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো, কালেরকণ্ঠ ও সমকাল নেওয়া হয়।

এছাড়া স্থানীয় দৈনিক মাধুকর নামে একটি পত্রিকা মিলে চারটি পত্রিকা লাইব্রেরির জন্য কেনা হয়। কিন্তু চারটি পত্রিকার পাঠক মাত্র পাঁচ/ছয়জন। পাবলিক লাইব্রেরির পাঠকক্ষ-ছবি: বাংলানিউজতিনি আরো জানান, ক্লাব রুমে ক্যারমবোর্ড, লুডু ও টেবিল টেনিসসহ বিভিন্ন খেলাধূলার সামগ্রী রয়েছে। তবে সেগুলোও মানুষ ব্যবহার করতে চায় না। ক্লাবে বাইরের মানুষের আনা-গোনা খুবই সীমিত। হাতে গোনা কয়েকজন প্রতিনিয়তই ক্লাবে আসা যাওয়া করেন।

এছাড়া সরকারি অনুদান না পাওয়ায় প্রযুক্তি নির্ভর কোনো যন্ত্রপাতি নেই লাইব্রেরিটিতে। নেই কোনো কম্পিউটার বা ইন্টারনেট সংযোগ। ২০০৩ সালে লাইব্রেরিটিতে জাতীয় গন্থাগার থেকে বাৎসরিক পনের হাজার টাকা ও পনের হাজার টাকার বই আসা শুরু করে। গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমানতবে সেটি ২০০৪ সাল নাগাদ বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে বিভিন্ন এনজিও সংগঠনের অনুদান ও হলরুমের ভাড়ার টাকায় চলছে জেলার এ লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবটি।

লাইব্রেরিতে একজন লাইব্রেরিয়ান, একজন পিয়ন ও একজন নাইটগার্ড কর্মরত আছেন। তবে তাদের বেতন ভাতা সম্পূর্ণই বহন করে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ। সরকারি কোনো অনুদান নেই কর্মচারীদের জন্য। আর কর্মচারীদের যা বেতন দেওয়া হয় তা তুলনামূলক সীমিত।

সপ্তাহে শুক্রবার ছাড়া বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে লাইব্রেরিটি। গল্প, উপন্যাসসহ সব ধরনের বই লাইব্রেরিতে থাকলেও পাঠক সীমিত। তিনজন কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করলেও ধীরে ধীরে পাঠকহীন হয়ে পড়েছে শত বছর বয়সী এ লাইব্রেরিটি।

আরও খবর...
** ‘জনবল ও অর্থ সংকটে’ বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগার
** খুলনা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের দুর্দশা চরমে
** ময়মনসিংহের আলোর পাঠশালায় দু’দিন তালা!
** বরিশাল গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষও বেহাল!
** গরুর অভ্যর্থনা মৌলভীবাজার গণগ্রন্থাগারে!
** ফেনীর পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে জম্পেশ আড্ডা
** মানিকগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগার কুকুরের বিচরণক্ষেত্র!
** সপ্তাহে ৩ দিনই ছুটি দিনাজপুর পাবলিক লাইব্রেরিতে!‍
** কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরির হালচাল
** পাঠকের খোরাক সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরিতে
** ‘পাঠাগার নয়, কোচিং সেন্টার প্রিয় অভিভাবকদের’
** বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া এখন সামাজিক আন্দোলনও

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৭
আরবি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।