আবার যে তিনটি ভবনে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা রয়েছে, তাও অপ্রতুল। এসব ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫৮টি ভবনের মধ্যে ১৭টি আবাসিক হল, ১০টি একাডেমিক ভবন, ২টি প্রশাসনিক ভবন, ১টি করে আইবিএস ভবন, টিএসসি, মিলনায়তন, ডিনস ভবন, আন্তর্জাতিক ডরমেটরি, সিনেট ভবন, আইবিএ ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার।
এছাড়া উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বাসভবনসহ শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রায় ১২১টি আবাসিক ভবন রয়েছে। আর এসব ভবনের মধ্যে কেবল কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ১৯টি, মুহম্মদ কুদরত-ই-খোদা ভবনে চারটি ও স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ভবনে ১১টি অগ্নিনির্বাপন সিলিন্ডার রয়েছে। আর বাকি ভবনগুলোর কোনটিতে অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা নেই। সরেজমিন দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের বিভিন্ন স্থানে ১৯টি সিলিন্ডার রয়েছে যেগুলোর কোনটিরও মেয়াদ নেই। এর মধ্যে গ্রন্থাগারের মূল ফটকে যে সিলিন্ডার রয়েছে সেটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০০৯ সালে। পাশে থাকা রেফারেন্স শাখার সিলিন্ডারের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৫ সালে। সিঁড়ির পাশে ক্যাটালগিং শাখার সিলিন্ডারের মেয়াদ শেষ হয় ২০১১ সালে। রিডিং রুমের সামনে রাখা সিলিন্ডারটি মেয়াদ শেষ হয় ২০১৩ সালে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহম্মদ কুদরত-ই-খোদা একাডেমিক ভবনে চারটি ও স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের বিভিন্ন বিভাগে ১১টি অগ্নিনির্বাপন সিলিন্ডার দেখা গেছে। এই দুই ভবনের ১৫টি সিলিন্ডারের মধ্যে চারটির মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের জুলাইয়ে। এছাড়া প্রশাসনিক ভবন, হল ও শিক্ষক, কর্মকার্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দেখা যায়নি।
গত বছরের ২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২টি ল্যাব ও অফিস কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এরপরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনগুলোতে অগ্নিদুর্ঘটনা নিরসনে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এছাড়া হলগুলোতে আগুন লাগলে নিয়ন্ত্রণে আনার কোনো উপায় নেই বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, শিক্ষকদের কোয়ার্টারের কোনো ভবনেই নেই অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা। ভবনগুলো যে কাঠামোতে তৈরি করা হয়েছে আগুন লাগলে প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা নেই। সারাদেশে যেভাবে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে এখানে যে হবে না তার নিশ্চয়তা নাই। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোর গবেষণাগারে বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়। একটু অসতর্ক হলেই, মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। গবেষণাগারে আগুন নেভানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীদের গবেষণাগারে কাজ করতে হয়। এছাড়া প্রতিটি হলে শিক্ষার্থীরা বৈদ্যুতিক হিটার ব্যবহার করছে। ফলে যেকোন সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী বলেন, গ্রন্থাগার ও দু’একটি ভবন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো ভবনে অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে। শিগগিরই অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৯
আরএ