বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীনের বিরুদ্ধে সরকারি অসঙ্গতিপূর্ণ কাগজপত্রে বিভিন্ন বিল দেওয়ার জন্য অর্থ ও হিসাব দপ্তরের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমানকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠে।
সম্প্রতি এ অভিযোগ আতিকুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানায়।
যে কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুজন চন্দ্র পালকে আহ্বায়ক, ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাটিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাতেন চৌধুরীকে সদস্য করা হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে একাউন্টস অফিসার সাকিজ উদ্দীন সরকারকে সাচিবিক কর্মকর্তা করা হয়েছে।
দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটানো এবং সরকারি অর্থ তছরুপের পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীনকে তার দাপ্তরিক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার সালমান খান বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে চিঠি গত মঙ্গলবার (০২ অক্টোবর) হলেও বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হয়ে যাওয়ায় তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। আমি একটি দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অসুস্থ থাকায় রোববার (১৩ অক্টোবর) ছুটির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই। আর আজ তদন্ত কমিটি ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশের চিঠি নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীনের কাছে পাঠানো হয়।
এদিকে, জানাগেছে, এর আগে একটি পত্রিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে অসত্য ও এখতিয়ার বহির্ভুত এবং মানহানিকর বক্তব্য দেন নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীন। যে কারণে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার সালমান খান তাকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। একইদিনে অপর আরেক কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় এই নির্বাহী প্রকৌশলীকে। যেখানে তিনি ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে কর্মস্থল ত্যাগ করেন বলে উল্লেখ করা হয়।
এসব বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীন বাংলানিউজকে বলেন, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের সহকারী পরিচালক পদে আতিকুর রহমান নামে কেউ নেই। এছাড়া এ নিয়ে আমি তাকে কোনো হুমকি-ধামকিও দিইনি। বরং তিনি আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়েছেন। আর অন্যান্য অভিযোগগুলোও সত্য নয় বলে মনে করেন তিনি। যা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলেও মনে করেন তিনি।
তবে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কে কোন দফতরে রয়েছেন বা থাকবেন, সে বিষয়ে দেখভালের এখতিয়ার রাখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। কারণ তিনি প্রকৌশল দপ্তরের কর্মকর্তা। নির্বাহী প্রকৌশলী বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমি যে অভিযোগ দিয়েছে, তা শতভাগ সত্য। নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীন অনৈতিকভাবে বিভিন্ন বিল দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন। বিল দিতে বাধ্য করেছেন এবং অস্বিকৃতি জানালে আমাকে প্রাণনাশেরও হুমকি দিয়েছেন। আমি বলবো বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার নির্মাণসহ যে কাজগুলো তিনি করিয়েছেন, সেগুলো খতিয়ে দেখা হোক। সাহস নিয়েই আমি অভিযোগ দিয়েছি, চাই বিশ্ববিদ্যালয় দুর্নীতিমুক্ত থাকুক।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৯
এমএস/টিএ