ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব রওশন আরা জানিয়েছেন, ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে হিসাব জমা দিতে বলা হয়েছে গত ২৬ জুন (বুধবার)। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হিসাব জমা দিতে হবে।
ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪১টি হলেও দু’টি দল একেবারে নতুন। তাই আগামী বছর থেকে তাদের হিসাব দিতে হবে।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম এ বিষয়ে বলেন, আমরা দলগুলোকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বিগত পঞ্জিকা বছরের হিসাব জমা দিতে বলেছি। কিন্তু এখনো কোনো দল হিসাব জমা দেয়নি।
২০১৮ সালে সাতটি দল ১৫ দিন সময় চেয়ে আবেদন করলে ইসি তা মঞ্জুর করেছিল। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, গণতন্ত্রী পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, পরপর তিন বছর কোনো দল হিসাব জমা না দিলে নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালে দেখিয়েছিল ২০১৭ সালে ৬ কোটি ৬১ লাখ ৪৮ হাজার ১১৭ টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। ২০১৭ সালে দলটি আয় করেছে ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা। আর ব্যয় করেছে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা।
বিএনপি ২০১৮ সালে ২০১৭ সালের হিসাবে দেখিয়েছে মোট আয় হয়েছে ৯ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার ৯০২ টাকা। আর মোট ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৪ টাকা। ৫ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৯৪৮ টাকা দলটির হাতে বা ব্যাংকে রয়েছে।
২০১৭ সালে আওয়ামী লীগ ২০১৬ সালের হিসাব দিয়ে বলেছিল, ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ১১ হাজার ৪৪১ টাকা।
সে বছর দলটির আয় ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭ টাকা। আর ব্যয় ৩ কোটি ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৯ টাকা। উদ্বৃত্ত ছিল ১ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৯ টাকা। ব্যাংকে মোট জমা ছিল ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ১১ হাজার ৪৪১ টাকা।
মোট জমা টাকার মধ্যে আগের জমা করা টাকার সুদ হচ্ছে ১ কোটি ২৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯৬ টাকা।
আওয়ামী লীগ ২০১৬ সালে নির্বাচন কমিশনে ২০১৫ সালের আয়-ব্যয়ের যে হিসাব দাখিল করেছে সেখানে দলটি আয় দেখিয়েছে ৭ কোটি ১১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা। আর ব্যয় করেছে ৩ কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৯ টাকা। অর্থাৎ সে সময় দলটি প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত দেখিয়েছে।
২০১৫ সালের হিসাবে ২০১৪ সালে দলটি আয় দেখিয়েছে ৯ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৩ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৮২১ টাকা। এতে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল আওয়ামী লীগের।
২০১৪ সালের হিসাবে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ আয় দেখিয়েছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ব্যয় দেখিয়েছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এতে প্রায় ৬ কোটি টাকা দলটির উদ্বৃত্ত ছিল।
এদিকে ২০১৬ সালে বিএনপির ২০১৫ সালের দাখিল করা আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত তিন পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় বাড়েনি। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিএনপি ১৪ লাখ ২৬ হাজার ২৮৪ টাকা ঘাটতিতে ছিল। কেননা, দলটি সে বছর আয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৩ হাজার ৩৬৫ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ ২৯ হাজার ৬৪৯ টাকা।
২০১৫ সালে ২০১৪ সালের (পঞ্জিকা বছর) হিসাবে দলটি বিভিন্ন খাতে দুই কোটি ৮৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৪ টাকা আয় দেখিয়েছে। আর ব্যয় দেখিয়েছে তিন কোটি ৫৩ লাখতিন হাজার টাকা। এতে আয়ের চেয়ে ৬৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪২৬ টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে দলটির।
আর ২০১৪ সালে ২০১৩ সালের (পঞ্জিকা বছর) হিসাবে দলটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬২ টাকা আয়ের বিপরীতে ২ কোটি ২৭ লাখ ২৫ হাজার ৩২৬ টাকা ব্যয় দেখিয়েছিলো। সেসময় ঘাটতি ছিলো প্রায় দেড় কোটি টাকা।
দলগুলো প্রাথমিক সদস্য ফি, নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি, প্রকাশনা বিক্রি ও ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সুদ থেকে আয় করে।
আর ব্যয় করে কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, আপ্যায়ন, সভা-সেমিনার, অফিস ব্যয়, উত্তরণ-পত্রিকা প্রকাশ, ত্রাণ কার্যক্রম, বিভাগীয় ও জেলা জনসভা, সহযোগী সংগঠন অনুষ্ঠান, সাংগঠনিক ব্যয় এবং অন্যান্য খাতে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
ইইউডি/জেডএস