সূত্রগুলো জানিয়ে, বর্তমানে ইসলামীক ফাউন্ডেশন ভবনে ইসির সার্ভার রয়েছে। যা পর্যায়ক্রমে স্থানান্তর করা হচ্ছে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনআইডি সংশোধনে প্রতিদিনের হাজার হাজার আবেদন, নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম, ভোটার তালিকার কার্যক্রম, এনআইডি যাচাই ইত্যাদি কাজের জন্য প্রতিটি সেকেন্ড ব্যস্ত থাকে ইসির সার্ভার। অনেক সময় হিট বেড়ে গেলে সার্ভার সাড়া দিতে পারে না।
বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর, ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায়ই অভিযোগ মেলে সার্ভার বন্ধ থাকায় তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন। এসব অভিযোগ ইসির কাছেও প্রতিনিয়তই আসে। তাই সমস্যাটি আমলে নিয়ে সার্ভার আপডেট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
বর্তমানে ইসির এনআইডি সার্ভারের ধারণক্ষমতা ৫০ টেরাবাইট। এরমধ্যে ৪৫ টেরাবাইট ব্যবহৃত হচ্ছে। যাতে সংরক্ষিত আছে ১০ কোটি ৪২ লাখ নাগরিকের তথ্য। এই সার্ভারের ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ১৫০ টেরাবাইট। অর্থাৎ ৩০ কোটি নাগরিকের তথ্য সংরক্ষণের ক্ষমতা পাচ্ছে ইসির সার্ভার। এছাড়া সার্ভারের সাড়া দেওয়ার প্রবণতা বাড়ানোর জন্যও যুক্ত করা হচ্ছে উন্নত সব প্রযুক্তি।
তবে সার্ভারের ধারণক্ষমতা বা সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই সংস্থাটি। সার্ভারের তথ্য যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ক্ষতির মুখে না পড়ে সে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশে কম্পিউটার কাউন্সিলের ডাটা সেন্টার, কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি ও যশোরের আইটি পার্কে তিনটি ভিন্ন ডাটা সেন্টারে নাগরিকের তথ্য সংরক্ষিত রাখবে ইসি।
এ বিষয়ে ইসির এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এনআইডি তথ্য ভাণ্ডার জাতীয় সম্পদ। এ নিয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবো না। নাগরিকের তথ্যভাণ্ডারের সুরক্ষা জীবন দিয়ে হলেও দেবো। তাই তিনটি পৃথক জায়গায় ডাটা সংরক্ষণ করবো। বিসিসি, কালিয়াকৈর ও যশোরে এগুলো রাখা হবে। ভূমিকম্পসহ বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও আমাদের তথ্যের কোনো ক্ষতি হবে না।
সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ওইসব ডাটা সেন্টারে ইসির কর্তৃত্ব এবং নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার শুধু দেখভাল করবে। মূল নিয়ন্ত্রণ থাকবে আমাদের হাতে। ওটাতে আমরা ছাড়া সরকারের আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। কাজেই নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই।
পৃথিবীর অনেক দেশের ভোটার মাত্র কোটির নিচে। আর আমাদের ভোটার ১০ কোটি বেশি। তাই এতো বড় একটি তথ্যভাণ্ডার আমাদের রয়েছে, যা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আমরা এটাকে বিশ্বমানের গড়ে তুলেছি।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেন। যার ভিত্তিতেই পরবর্তীতে ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে। গড়ে তোলা হয় এনআইডি তথ্য ভাণ্ডার। বর্তমানে ৫০টির মধ্যে সংস্থা-প্রতিষ্ঠান এই তথ্যভাণ্ডার থেকে ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছে। এতে অপরাধী চিহ্নিতকরণসহ বহুমুখী সমস্যা সমাধান সহজ হয়ে গেছে।
নির্বাচন কমিশন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এক বছর বয়সীদেরও এনআইডি সরবরাহ করার। এতে তথ্যভাণ্ডারের ব্যবহার আরও বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৯
ইইউডি/জেডএস