বাংলার লোকগানকে আধুনিক র্যাপের মোড়কে তুলে ধরে প্রশংসিত হচ্ছেন বাদশাহ। ২৫ মার্চ ইউটিউবে প্রকাশিত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মিউজিক ভিডিওটি প্রায় সাড়ে চার কোটিবার দেখা হয়েছে।
সামজিক মাধ্যমে ট্রেন্ডিং হচ্ছিল এই গানটি। শুধু প্রশংসা নয়, সমালোচনাও হচ্ছে অনেক। এমনকি ইউটিউবেও দর্শকরা একের পর এক সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন বাদশাকে। বাংলার যে লোকগানটি বাদশা তুলে ধরেছেন, যে গান গেয়ে তিনি এত টাকা আয় করছেন, সেই গানটির রূপকারকে বেমালুম ভুলে গেলেন তিনি! ভুলে গেছেন, নাকি ইচ্ছা করেই তার নামটুকু উল্লেখ করেননি বাদশা, তা তিনিই জানেন। সমালোচকরা জিজ্ঞাসা করছেন, আপনি কি রয়্যালটি দিতে চান না বলেই তার নাম দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন?
অথচ কেমন আছেন এই জনপ্রিয় বাংলা লোকগানের স্রষ্টা? তার খোঁজখবর কেউ রাখেন না। এমনকি তার নামটিও ভুলে গেছেন অনেকে।
গানটির গীতিকার হলেন রতন কাহার। ১৯৭২ সালে তার অমর সৃষ্টি ছিল ‘বড়লোকের বিটি লো লম্বা লম্বা চুল’ গানটি। ১৯৭৬ সালে স্বপ্না চক্রবর্তীর কণ্ঠে দারুণ জনপ্রিয়তা পায় এ গান। বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ে গানটি। আমাদের পরিচিত আরও অনেক লোকগানের স্রষ্টাও রতন কাহার। অথচ তিনি নিজেই আমাদের কাছে অচেনা থেকে গেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় তার বাড়ি। ভাদু গান, লোকগীতি, ঝুমুর কিংবা প্রভাতী কীর্তন, রতন কাহার সবক্ষেত্রেই সিদ্ধহস্ত। এখন কেমন আছেন তিনি? কেউ খোঁজ রাখে না। এমন গুণী মানুষটার জীবনে এখনও নিত্যসঙ্গী দারিদ্র্য। একসময় বিড়ি বেঁধেও সংসার চালিয়েছেন। এখন জীবনের শেষ প্রান্তে সরকারি কিছু অনুদান ও দুয়েকটা অনুষ্ঠানে গান গেয়ে যা পান তা দিয়েই চলে তার সংসার।
রতন কাহারের মতো মাটির মানুষের নাম ঠাঁই পায়নি বাদশার জাঁকজমকপূর্ণ গানচিত্রে। যে মাটির গান গেয়ে তিনি সাফল্যের ঝুলি ভরছেন, যে মাটির গানের টানে কোটি কোটি দর্শক-শ্রোতা গানটি শুনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন, সে মাটির মানুষটির প্রতি বাদশার উপেক্ষা পছন্দ করেননি নেটিজেনরা।
রতন কাহার সৃষ্ট এবং স্বপ্না চক্রবর্তীর কণ্ঠে ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটি:
‘বড়লোকের বিটি লো’ গানের সঙ্গে বাদশার ব়্যাপ:
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২০
এমকেআর