কিন্তু এখন সবেমাত্র ফাল্গুনের শুরু। এ ঋতুবৈচিত্রের ধারাবাহিকতায় জলধারাখ্যাত বিশাল যমুনার বুক এখন জলশুন্য।
যমুনার তীর ঘেঁষে হেঁটে গেলে এমন দৃশ্য চোখে ধরা দেবে। তবে গভীর পানির দেখা পেতে যমুনার মাঝ বরাবর যেতে হবে। কিন্তু সব জায়গায় এখন বর্ষাকালের মতো পানির দেখা মিলবে না।
বিশাল জলরাশিখ্যাত সেই যমুনার হাঁটু বা কোমর পানি ভরা একটি স্থানে গিয়ে খানিকটা সময়ের জন্য দু’চোখ আটকে গেলো। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিতলা থেকে দূরে অবস্থিত সেই স্থানটি।
যমুনার সেই কোমর পানি বরাবর পানিতে বেশ কয়েকটি পাতিহাঁস ভাসছে। সেই পানিতে হাঁসগুলো খাদ্যের অন্বেষণ করছিলো। আর তাদের সঙ্গে খেলা করছিলো এক কিশোর। খাদ্যের অন্বেষণে নদীতে ভাসমান হাঁসগুলোকে ধাওয়া করে চলছিলো সেই কিশোর।
ধাওয়া দিয়ে একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছিলো হাঁসগুলো। হাঁসগুলো যেন ওই কিশোরের সঙ্গে কিছুতেই পেরে উঠছিলো না। এভাবে হাঁসের সঙ্গে দুরন্তপনায় মেতে ছিলো সেই কিশোর। পানিতে মাথা ডুবে গেলেও বিন্দুমাত্র ভয় ছিলো না ওই কিশোরের চোখে-মুখে।
অবশ্য হাঁস ও দুরন্তপনায় লিপ্ত সেই কিশোরের পাশে যমুনার তীরে কয়েকটি মাঝারি আকারের নৌকাও দেখা গেলো। তবে নদীতে পানি না থাকায় নৌকাগুলো কিনারে রাখা হয়েছে। সময় মতো সংস্কার করে নৌকাগুলো পুনরায় নদীতে ভাসানো হবে বলে স্থানীয়রা জানান।
এসময় দেখা মেলে যমুনাপাড়ে বসবাসকারী আফজাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন নবীন ও প্রবীণদের সঙ্গে।
আফজাল বাংলানিউজকে জানান, বছরের পর বছর এমনকি যুগের পর যুগ হিংস্র যমুনার সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের মতো মানুষদের বেঁচে থাকতে হয়। এ কারণে যমুনা বেষ্টিত এলাকার মানুষগুলো পানিকে কখনও ভয় পায় না। হয়তো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে যমুনা নদীর পানিতে পড়ে মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে। তাছাড়া স্বাভাবিকভাবে যমুনার পানিতে তাদের মতো মানুষদের মৃত্যু খুব কমই হয় বলে যোগ করেন আফজাল।
মোহাম্মদ আলী নামে আরেকজন বাংলানিউজকে জানান, যমুনা বেষ্টিত এলাকার মানুষগুলো স্বভাবতই একটু বয়স হলেই আপনা আপনি পানিতে নেমে পড়ে। ফলে তাদের সাঁতার শেখাতে হয়। অনেকে আবার একা একাই সাঁতার শিখে যায়। ভরা ও শুষ্ক মৌসুমে কখন কিভাবে পানিতে চলতে হয় তা যমুনাপাড়ের মানুষগুলোর অনেকটা রপ্ত বলে মত দেন মোহাম্মদ আলী।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
এমবিএইচ/আরবি/