জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নতুন এ ব্ল্যাকহোলটি নক্ষত্র গিলে খায় না, বরং এটি উৎসস্থল থেকে দশ লাখ আলোকবর্ষ দূর পর্যন্ত একাধিক ছায়াপথজুড়ে একের পর এক নবীন নক্ষত্রের জন্ম দিয়ে চলেছে!
নাসার ‘চন্দ্র এক্স-রে অবজার্ভেটরি’ ও সহায়ক বেশ কিছু টেলিস্কোপের মাধ্যমে এ ব্ল্যাকহোলটির সন্ধান মিলেছে। এটির অবস্থান পৃথিবী থেকে ৯.৯ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের একটি ছায়াপথের কেন্দ্রে।
চলতি সপ্তাহে মহাবিশ্ব বিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, এর আগে মহাবিশ্ব থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পদার্থনির্গত বিশেষ এক ধরনের রেডিওতরঙ্গ শনাক্ত করে আরেকটি টেলিস্কোপ। পরবর্তীতে চন্দ্র এক্স-রের মাধ্যমে ওই তরঙ্গের উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, তা নির্গত হচ্ছে একটি ব্ল্যাকহোল থেকে। সে সময় ব্ল্যাকহোলটির চারপাশ ঘিরে থাকা উত্তপ্ত গ্যাসপিণ্ড থেকে নির্গত তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গও শনাক্ত করে টেলিস্কোপ চন্দ্র।
গবেষণায় দেখা যায়, ব্ল্যাকহোলনির্গত বিপুল উত্তপ্ত গ্যাসপিণ্ড বিস্তৃত হয়ে আশপাশের ৪টি ছায়াপথে ছড়িয়ে পড়ছে। এ সময় কিছু গ্যাস শীতল হয়ে জমাট বাঁধছে। এ মিথস্ক্রিয়াতেই নতুন নতুন নক্ষত্রের জন্ম হচ্ছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। এসব ছায়াপথে নতুন নতুন নক্ষত্রের জন্মহার দুই থেকে পাঁচ গুণ বেশি বলে জানিয়েছেন তারা।
ইতালির বোলোগানা শহরের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’র স্টাডি অথর রবার্তো গিলি বলেন, এই প্রথম আমরা একইসঙ্গে একাধিক ছায়াপথে নক্ষত্রের জন্ম দিয়ে চলা কোনো ব্ল্যাকহোলের সন্ধান পেলাম। এটা সত্যিই বিস্ময়কর যে একটি ব্ল্যাকহোল মিলিয়ন ট্রিলিয়ন মাইল দূরের ছায়াপথেও নক্ষত্র সৃষ্টি করছে।
ইতালির ‘ন্যাশন্যাল ইন্সটিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’র স্টাডি কো-অথর মার্কো মিগনোলি বলেন, আমরা রাজা মাইডাসের কাহিনী জানি, যেখানে তার স্পর্শে যে কোনো বস্তু স্বর্ণে পরিণত হয়। এবারে আমরা তেমনই এক ব্ল্যাকহোলের সন্ধান পেলাম, যা নিজ ছায়াপথের বাইরে অন্য ছায়াপথেও গ্যাসকে নক্ষত্রে পরিণত করে!
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
এইচজে